‘দেশের সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে কাউকে ছাড় দেবে না সরকার’
মিয়ানমার সীমান্ত ও রোহিঙ্গা ইস্যুতে ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, আরাকান আর্মি একটি রাজ্য দখল করেছে যার সঙ্গে বাংলাদেশের একটি লম্বা সীমান্ত রয়েছে। কিন্তু আমরা আরাকান আর্মির সঙ্গে কোনো প্রকার চুক্তি করতে পারি না। কারণ তারা ওই দেশের সরকার নয়। তবে আমাদের সীমান্তরক্ষী বাহিনী ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো সীমান্তে কঠোর নজরদারি রাখছেন। আমরা দেশের এক ইঞ্চি জায়গাও কোনো শত্রুর হাতে দেব না ইনশাআল্লাহ। দেশের সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে কাউকে ছাড় দেবে না সরকার।
শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার মাদার্শা ইউনিয়নে মাদার্শা যুব উন্নয়ন পরিষদের উদ্যোগে আয়োজিত শীতবস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব এসব কথা বলেন তিনি।
ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, রাখাইনে অত্যাচারের ফলে যেসব রোহিঙ্গা নতুনভাবে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করছে, মানবিক দিক বিবেচনায় তাদের আশ্রয় দিচ্ছি। কিন্তু তাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসনে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। আমরা জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র, চায়নাসহ বিভিন্ন স্টেক হোল্ডারদের সঙ্গে কথা বলছি। তারা যেন নিজ দেশে নিরাপদ পরিবেশে ফিরে যেতে পারে সে বিষয়ে কাজ করছি। যখনই এমন পরিবেশ সৃষ্টি হবে আমরা তাদের নিজ দেশে পাঠিয়ে দেব। সরকার এ বিষয়ে বদ্ধপরিকর।
আরও পড়ুন
তিনি আরও বলেন, এই সরকারের আমলে আয়নাঘরে কোনো মানুষ বন্দি থাকেনি এবং কোনো মানুষ গুমের শিকার হয়নি। আমরা মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে দিতে চাই। ভোট কারচুপির মাধ্যমে দীর্ঘকাল ক্ষমতার মসনদে থাকার মানসিকতা এই দেশটাকে পিছিয়ে দিয়েছে। দেশটাকে সামনের দিকে অগ্রসর হতে দেয়নি। আমরা ক্ষমতায় গেলে এই কালচারের পরিবর্তন করতে চাই। আমরা একটি রাজনৈতিক কালচার ডেভেলপ করতে চাই।
ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, আমাদের সামনে কিছু সংস্কার কাজ আছে সেগুলো খুব দ্রুত গতিতে চলছে। সংস্কার শেষে ২০২৫ সালের শেষে না হয় ২০২৬ এর শুরুতে আমরা নির্বাচন দেব। দীর্ঘ ১৭ বছর পর এবার মানুষ দিনের আলোতে স্বাচ্ছন্দ্যে ভোট দিতে পারবেন। রাতের অন্ধকারে কোনো প্রকার ভোট হবে না। জনগণ ভোটের মাধ্যমে তাদের পছন্দের প্রার্থী নির্বাচন করবেন। আর অন্তর্বর্তী সরকার তাদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন।
উপদেষ্টা বলেন, এই সরকার ক্ষমতা পেয়েছেন ৫ মাস হয়েছে। এরই মধ্যে একের পর এক সহিংসতা, বিশেষ করে বান্দরবানে অগ্নিকাণ্ড ও সচিবালয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অগ্নিকাণ্ড ঘটিয়েছে। আমরা এসব ঘটনার তদন্তে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করেছি। যে বা যারা সহিংসতার সঙ্গে সম্পৃক্ততা পাওয়া যাবে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ছাড়া যদি কেউ মনে করেন, সহিংসতা করে দুর্নীতির অভিযোগ থেকে রেহাই পাবে, তাহলে তাদের ধার না ভুল। দুর্নীতিগ্রস্তরা কোনোভাবেই রেহাই পাবে না।
অনুষ্ঠানে যুব উন্নয়ন পরিষদের সভাপতি জাফর আহমদের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর চট্টগ্রাম মহানগরের আমির শাহজাহান চৌধুরী ও চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা জামায়াতের আমীর আনোয়ারুল আলম চৌধুরীসহ রাজনৈতিক ও সামাজিক নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
আরএমএন/এমএন