আবেগঘন চিরকুট লিখে বীর মুক্তিযোদ্ধার আত্মহত্যা
চট্টগ্রামে সন্তানদের কাছে আবেগঘন চিরকুট লিখে বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু সাইদ সরদার (৬৫) গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। রোববার (২২ ডিসেম্বর) সন্ধ্যার আগে নগরীর ডবলমুরিং থানার নিজ বাসায় আত্মহত্যা করেন তিনি।
নিহত আবু সাইদ সরদারের দুই ছেলে ইমন ও সায়মন এবং পায়েল নামে এক মেয়ে সন্তান রয়েছে। তিনি ওই বাসায় তার ছেলে ইমনের পরিবারের সঙ্গে থাকতেন।
ডবলমুরিং থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. বায়েজিদ মিয়া জানান, খবর পেয়ে পুলিশ সন্ধ্যা ছয়টার দিকে তিনতলা ভবনটির ভাড়া বাসার একটি কক্ষের দরজা ভেঙ্গে তার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে। ওই কক্ষ থেকে বেশ কয়েকটি সুইসাইড নোট পাওয়া গেছে।
মূলত নোটগুলো লেখা হয়েছিল নিহতের দুই ছেলে, এক মেয়ে ও নাতির কাছে। সুইসাইড নোটগুলো দেখে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে তিনি আত্মহত্যা করেছেন।
এসআই বায়েজিদ মিয়া বলেন, মূলত ক্যান্সার রোগের কারণে উনি খুব কষ্টে ছিলেন। গত ১৩ ডিসেম্বর তিনি আরেকবার আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু সুযোগ না পাওয়ার কারণে তা হয়নি।
জানা যায়, নিহতের কক্ষ থেকে ৬টি সুইসাইড নোট উদ্ধার করেছে পুলিশ। সেখানে তার পরিবারের সদস্যদের নিকট আবেগঘন কিছু লেখা তিনি লিখেছেন। এছাড়া তার মৃত্যুর কারণ ও মৃত্যুর পর কিছু করণীয়ের ব্যাপারে তিনি সন্তানদের কিছু দায়িত্ব দেন।
সুইসাইড নোটগুলোতে তিনি লেখেন, “নিজের ক্যান্সার রোগের এত চিকিৎসার পরও কষ্ট আর সহ্য করতে না পেরে অগত্য আত্মহত্যার পথ বেছে নিলাম”। এসময় তিনি তার সন্তানসহ সবার কাছে ক্ষমা চান।
আরও পড়ুন
মেয়ে পায়েলকে লেখা সুইসাইড নোটে তিনি লিখেন, ক্যান্সার মনে হয় ফের ফিরে এসেছে। মুখে ঘা ও মাঝে মাঝে ব্যাথা করে। আসলে এ রোগের কোনও চিকিৎসা আছে বলে মনে হয় না। ইদানিং ক্যান্সারে কষ্ট পাচ্ছি।
সুইসাইড নোটে আবু সাইদ সরদারকে তাকে নগরীর চৌমহুনী কবরস্থানে নিজের মায়ের পাশে দাফনের জন্য বলে যান।
পুলিশ ধারণা করছে, মুক্তিযোদ্ধা আবু সাইদ সরদার অনেকটা ভেবে-চিন্তে সময় নিয়ে এ আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছিলেন। নিহতের পারিবারিক সূত্র জানায়, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আবু সাইদ সরদার তার ছোট ছেলের পরিবারের সঙ্গে ওই বাসাতে থাকতেন।
আরএমএন/টিএম