নিরাপদ অভিবাসন ও প্রবাস ফেরতদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থার দাবি
প্রবাসে ব্যয় কমানো, হয়রানি বন্ধ, নিরাপদ অভিবাসন ও প্রবাস ফেরতদের পুনর্বাসন ব্যবস্থার দাবি জানিয়েছে সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট।
বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত এক সমাবেশে এ দাবি জানানো হয়।
শ্রম সংস্কার কমিশনের সদস্য রাজেকুজ্জামান রতনের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব বুলবুলের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সাংগঠনিক সম্পাদক খালেকুজ্জামান লিপন, সহ-সম্পাদক নবকুমার কর্মকার, সহ-সম্পাদক ইমাম হোসেন খোকন, সহ-সম্পাদক জনার্দন দত্ত নান্টু, নির্বাহী সদস্য আবু জাফর প্রমুখ।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, বছরে প্রায় ২৪ বিলিয়ন ডলার তথা ২৪০০ কোটি ডলার বৈদেশিক মুদ্রা আসে অভিবাসী শ্রমিকদের পাঠানো রেমিট্যান্সের মাধ্যমে। যা দিয়ে আমাদের রপ্তানি অতিরিক্ত আমদানির ব্যয় পরিশোধ করা হয়। অথচ এই অর্থ পাঠাতে কতজন শ্রমিক বিদেশের মাটিতে রক্ত-ঘাম ঝরাচ্ছেন তার সঠিক হিসাব সরকারের কাছে নেই। বিগত সরকারের প্রবাস মন্ত্রী জানিয়েছিল- বিদেশে কর্মরত প্রবাসী শ্রমিকের সংখ্যা ১ কোটি ৫৫ লাখ, অন্যদিকে বিবিএসের জরিপের রিপোর্ট অনুসারে প্রায় ৫১ লাখ। প্রবাসী শ্রমিকদের পরিসংখ্যানের এই পার্থক্য বলে দেয় যে যাদের আয়ে দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ স্ফীত হয় তাদের প্রতি রাষ্ট্র কতখানি দায়িত্বহীন।
আরও পড়ুন
বক্তারা বলেন, প্রতিদিন ১১ জন প্রবাসী শ্রমিকের লাশ ফিরে আসে, অসংখ্য নারী শ্রমিক নির্যাতিত হয়ে ফিরে আসে। ক্ষতিগ্রস্ত এই শ্রমিকদের পরিবারগুলির পুনর্বাসনে রাষ্ট্রের যথেষ্ট উদ্যোগ পরিলক্ষিত হয়নি। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশে অভিবাসন ব্যয় সর্বোচ্চ, প্রতি শ্রমিক কে ৫ থেকে ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ব্যয় বহন করতে হয়। এই ব্যয় বহন করতে অভিবাসী শ্রমিকরা তাদের ভিটামাটি বিক্রি করতে বাধ্য হয়, অনেক সময় প্রতারণার শিকার হয়ে নিঃস্ব হয়ে যায়, নারীরা পাচার হয়ে যায়। বাংলাদেশের প্রকৃত উন্নয়ন করতে হলে অবকাঠামো উন্নয়ন ভিত্তিক উন্নয়ন পরিকল্পনার পরিবর্তে মানবসম্পদের উন্নয়ন ভিত্তিক পরিকল্পনা করতে হবে। দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তোলা এবং তাদের রাষ্ট্রীয় যোগাযোগ ও অর্থায়নে প্রবাসে কাজে পাঠানোর মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের ক্ষেত্র কে প্রসারিত করতে হবে। প্রবাসীর পাঠানো অর্থ এবং ফেরত আসা প্রবাসী কর্মীর দক্ষতা কে সর্বোচ্চ ফলাফল পাওয়ার মতো কাজে লাগানোর পরিকল্পনা করতে হবে।
সমাবেশে প্রবাসী শ্রমিকদের অবদানের যথাযথ স্বীকৃতি, শূন্য অভিবাসন ব্যয়, ফেরত শ্রমিকদের পুনর্বাসন এবং ক্ষতিগ্রস্তদের যথাযথ ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করার আহ্বান জানানো হয়।
ওএফএ/এমএ