উপকূলীয় এলাকার সবাইকে আশ্রয়কেন্দ্রে আনতে হবে

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মোঃ. এনামুর রহমান বলেছেন, করোনা সংক্রমণের মধ্যে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় এবারও স্বাস্থ্যবিধি মেনে তিনগুণ আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হচ্ছে। উপকূলীয় এলাকায় শতভাগ মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে আনতে হবে। যে করেই হোক সবাইকে আশ্রয়কেন্দ্রে আনতে হবে, একজনকেও রেখে আসা যাবে না। এবার আমরা টার্গেট রাখব মৃত্যুহার যেন শূন্য হয়।

শনিবার (২২ মে) সচিবালয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির পলিসি কমিটির সভায় তিনি এ কথা বলেন। 

অতীত অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে এবারের প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রম তুলে ধরে প্রতিমন্ত্রী জানান, ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের সময় পাঁচ হাজার আশ্রয়কেন্দ্র ব্যবহার করা হয়েছে। আম্পানের সময়ে করোনার কারণে ১৪ হাজার ৬৭টি আশ্রয়কেন্দ্রে ২৪ লাখ ৭৮ হাজারের বেশি মানুষকে রাখা হয়েছে।

‘করোনার কারণে তিনগুণ আশ্রয়কেন্দ্র ব্যবহার করব। স্বাস্থ্যবিধি মেনে ব্যবহার করা হবে। সবার জন্য মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখা হবে। ফনী, বুলবুল, আম্পান মোকাবিলা করেছি। অতীতের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে ঝড় মোকাবিলা করা হবে এবং শতভাগ মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে এসে মৃত্যুহার শূন্যের কোটায় আনা হবে।’

তিনি জানান, দুর্গত এলাকার শতভাগ মানুষকে শেল্টার সেন্টারে আনতে পারলে মৃত্যুহার শূন্য হবে আশা করা যায়। যারা বাইরে অবস্থান করে, তাদের মধ্য থেকেই মারা যায়। আম্পানে আশ্রয়কেন্দ্রে কেউ মারা যায়নি; যারা মারা গেছে তারা গাছ চাপা পড়ে, টিনের আঘাতে মারা গেছে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘করোনা রোগী থাকলে তাকে আইসোলেশনে রাখতে হবে। আক্রান্ত কেউ যেন সুস্থ মানুষের মধ্যে না আসতে পারে, সে বিষয়ে কঠোর ব্যবস্থা রাখতে হবে। কোনোভাবেই যেন আশ্রয়কেন্দ্র থেকে নতুন করে সংক্রমণ সৃষ্টি না হয়।’

ঘূর্ণিঝড়ের অবস্থান ২৩ মে’র পর ঠিকভাবে বোঝা যাবে জানিয়ে এনামুর রহমান জানান, ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির (সিপিপি) সদস্যদের এর মধ্যে জানিয়ে দিয়েছি। তারা প্রচারণা শুরু করেছেন। শেল্টার সেন্টারগুলো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হচ্ছে। কমিউনিটি রেডিওর মাধ্যমে প্রচারণা চালানো হচ্ছে। ফায়ার সার্ভিসও প্রস্তুত রয়েছে। স্কাউটের ৬ লাখ স্বেচ্ছাসেবক কাজ করছে। শুকনা খাবার মজুত রয়েছে। রোববার থেকে বিভিন্ন জেলায় এসব খাবার পাঠিয়ে দেওয়া হবে।

দুর্যোগ মোকাবিলায় ‘রোল মডেল’ হিসেবে বিশ্বে বাংলাদেশের যে সুনাম রয়েছে তা ধরে রাখায় সংশ্লিষ্টদের সচেষ্ট থাকতে আহ্বান জানান তিনি।

প্রস্তুতিমূলক এ সভায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোহসীন, আবহাওয়া অধিদফতরের পরিচালক মো. শামসুদ্দীনসহ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, সশস্ত্রবাহিনী বিভাগ, রেডক্রিসেন্ট, সিপিপিসহ সংশ্লিষ্ট সব সংস্থা-বিভাগের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

এসএইচআর/এসএসএইচ