বিজয় দিবস নিয়ে মোদির বক্তব্যের তীব্র নিন্দা প্রকাশ বাসদের
১৬ ডিসেম্বর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বক্তব্যের তীব্র নিন্দা, ক্ষোভ ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ)।
মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ নিন্দা প্রকাশ করা হয়।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের বিজয়কে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের যুদ্ধ বিজয়ের দিবস হিসেবে ঘোষণা দিয়েছেন। এই দিবসটিকে বাংলাদেশের মানুষ পাকিস্তানি ঔপনিবেশিক শক্তি ও তাদের হানাদার এবং এদেশীয় দোসর, রাজাকার ও আলবদর বাহিনীর বিরুদ্ধে লাখ লাখ প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত বিজয় দিবস হিসেবে উদযাপন করে।
বজলুর রশীদ ফিরোজ বলেন, নরেন্দ্র মোদির বক্তব্যের মধ্য দিয়ে একটি সত্য বেরিয়ে এসেছে যে, আমাদের মুক্তিযুদ্ধে সাম্রাজ্যবাদী ভারতের সহায়তা প্রধানত ছিল দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ভারতের আধিপত্য বিস্তারের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানকে খণ্ডিত ও দুর্বল করা। অন্যদিকে বাংলাদেশের জনগণ চেয়েছিল পাকিস্তানি ঔপনিবেশিক শাসন ও শোষণ থেকে মুক্তি। যে জন্য সাম্রাজ্যবাদী ভারত রাষ্ট্রের স্বার্থ এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতাকামী জনগণের স্বার্থ আলাদা হলেও উভয়ের শত্রু ছিল পাকিস্তান রাষ্ট্র ও শাসকশ্রেণী। ফলে দুই দিক থেকে দুজনের ভিন্ন স্বার্থের মিলন ঘটেছিল। আমরা ভারতের সহায়তা নিয়েছি, ভারতও আমাদের সাহায্য দিয়েছে। বিগত ৫৩ বছরে বাংলাদেশের শাসকগোষ্ঠী এই সীমারেখাটা স্পষ্ট করেনি বিধায় ভারত এতদিন একভাবে বলার চেষ্টা করেছে যে তারাই বাংলাদেশ স্বাধীন করে দিয়েছে অর্থাৎ তারা না হলে বাংলাদেশ স্বাধীন হতো না। এটা ছিল সম্পূর্ণ ভুল এক ঐতিহাসিক ব্যাখ্যা। ভারতের সহায়তা না থাকলেও বাংলাদেশ অবশ্যই স্বাধীন হতো। সেক্ষেত্রে সময় হয়ত ৯ মাসের স্থলে ৯ বছর বা তারও বেশি সময় লাগতে পারতো।
বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন, আমাদের শাসকগোষ্ঠীর নতজানু পররাষ্ট্র নীতি ও ভারতকে খুশি করার মনোভাবে এতদিন ভারতের ঔদ্ধত্য ও কৃতিত্ব দাবির একতরফা কথা প্রচারিত হতো। এখন একটি ভিন্ন পরিস্থিতিতে ভারতের বোল পাল্টে যাচ্ছে। যদিও বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও বিজয়ের কৃতিত্ব বাংলাদেশকে দেওয়ার কোনো আগ্রহ বা ইতিহাসের প্রকৃত ঘটনাকে স্বীকার করার কোনো দায় ভারতের অতীতেও ছিল না, বর্তমানেও নেই।
বিবৃতিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বক্তব্যের তীব্র নিন্দা, প্রতিবাদ ও বক্তব্য প্রত্যাহার দাবি করে বাংলাদেশের সরকারকে মোদির বক্তব্যের প্রতিবাদ জানানোর আহ্বান জানানো হয়।
ওএফএ/এমজেইউ