দ্রুত তথ্য কমিশনার নিয়োগের দাবি তথ্য অধিকার ফোরামের
২০০৯ এর ধারা ১৪ (১) অনুযায়ী ৫ সদস্যের সমন্বয়ে একটি বাছাই কমিটি গঠন করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে তথ্য অধিকার আইনে তথ্য কমিশনে প্রধান তথ্য কমিশনার এবং তথ্য কমিশনার নিয়োগের ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছে তথ্য অধিকার ফোরাম।
মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) তথ্য অধিকার ফোরামের আহ্বায়ক শাহীন আনাম স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ দাবি জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়- তথ্য অধিকার আইন ২০০৯ বাংলাদেশের একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ আইন, যা দেশের সব নাগরিককে সরকারের কাছে সংরক্ষিত যাবতীয় তথ্য জানার অধিকার নিশ্চিত করে। আইনটির মাধ্যমে জনগণ দেশের সব রকমের সরকারি এবং বেশকিছু আধা-সরকারি সংস্থার কাছ থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করে সেইসব প্রতিষ্ঠানের কাজে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা থেকে শুরু করে দুর্নীতি রোধ, জনগণের কাছে সরকারি কমকর্তা-কর্মচারীদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা, সরকারি কাজে জনগণের মনে সচেতনতা বৃদ্ধি করা, দেশে জনসেবার মানোন্নয়ন করা এবং সরকারের সঙ্গে জনগণের নৈকট্য স্থাপনের কাজে ভূমিকা পালন করতে পারে।
আরও পড়ুন
তিনি আরও বলেন, দেশে সুশাসন ও সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে আইনটির কোনো বিকল্প নেই।
তথ্য অধিকার ফোরাম লক্ষ্য করছে যে গত জুলাই-আগস্টে দেশের বৈপ্লবিক পরিবর্তনের পটভূমিতে সেপ্টেম্বর মাসে তথ্য অধিকার আইনের মূল পরিচালন সংস্থা তথ্য কমিশনের তিনজন কমিশনারের পদত্যাগের কারণে প্রায় তিনমাস ধরে বাংলাদেশ তথ্য কমিশনের যাবতীয় কর্মকাণ্ড স্থবির হয়ে পড়েছে। দেশে তথ্য অধিকার আইনের সুষ্ঠু ব্যবহার বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। দেশের কর্তৃপক্ষগুলোর দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা তথ্য প্রদানে অসম্মতি বা অপারগতা জ্ঞাপন করলে বা তাদের দায়িত্বে অবহেলা করলে তার বিরুদ্ধে জনগণের কোনো প্রতিকার ব্যবস্থা থাকছে না। জনগণের আবেদনকৃত অভিযোগগুলো শুনানি প্রক্রিয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, বিরোধগুলো অমীমাংসিত রয়ে যাচ্ছে, কোনো সমাধান মিলছে না।
শাহীন আনাম বলেন, দেশে তথ্য অধিকার আইন কার্যকর হওয়ার পর থেকে আইনটি জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে নানাভাবে সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে। বিশেষ করে গ্রামীণ অঞ্চলে কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সরকারি এবং এনজিও প্রকল্প বাস্তবায়ন, স্থানীয় প্রশাসন এবং স্থানীয় সরকার সম্পর্কিত তথ্য সংগ্রহে এই আইনের ব্যবহার উল্লেখযোগ্য। তবে এখনো অনেক চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে। সাধারণ জনগণের মধ্যে এই আইনটির ব্যাপারে সচেতনতার অভাব রয়ে গেছে। অনেক ক্ষেত্রে দপ্তরগুলোতে তথ্য প্রদান কর্মকর্তাদের আইনটির ব্যাপারে অনীহা, তথ্য সরবরাহ প্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রিতা, তথ্য গোপন করার প্রবণতা আইনটিকে পিছিয়ে রেখেছে।
বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন, এমতাবস্থায় তথ্য অধিকার ফোরাম মনে করে বাংলাদেশ তথ্য কমিশনে যদি কমিশনাররা বহুদিন ধরে নিযুক্ত না থাকেন, তাহলে তা দেশের এই অতি গুরুত্বপূর্ণ আইনটিকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে- যা তথ্যের অবাধ প্রবাহে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে এবং জনগণকে এই অতি গুরুত্বপূর্ণ আইনটি ব্যবহারে নিরুৎসাহিত করবে।
তাই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে তথ্য অধিকার ফোরামের দাবি, তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯ এর ধারা ১৪(১) অনুযায়ী পাঁচ সদস্যের সমন্বয়ে দ্রুত একটি বাছাই কমিটি গঠন করে অবিলম্বে তথ্য কমিশনে প্রধান তথ্য কমিশনার এবং তথ্য কমিশনার নিয়োগের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।
এআইএস