শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে দিনভর বিপ্লব উদ্যানে মানুষের ঢল
উম্মে মাঈমুন ইলহাম। বয়স তার দুই বছরের কিছু বেশি। বাবার সঙ্গে এসেছে চট্টগ্রামের স্বাধীনতা সংগ্রামের স্মৃতিবিজড়িত বিপ্লব উদ্যানে। তার হাতে জাতীয় পতাকা, যে পতাকা অর্জিত হয়েছে ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে।
ইলহামের বাবা রেজাউল করিম বললেন, ‘লাখো শহীদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে আজকের এই স্বাধীনতা। তার সন্তানরা যাতে এই আত্মত্যাগের কথা জানে, তাই তাদের নিয়ে স্বাধীনতা স্মৃতিস্তম্ভে আসা। আমি চাই আমার সন্তানেরা আমাদের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস লালন করে।’
তিন বছরের নাফিজা বিনতে তাহেরও এসেছে বাবার সঙ্গে। পুরো এলাকায় এমন অসংখ্য মানুষের আনাগোনা। স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য এসেছেন নানান শ্রেণি-পেশার মানুষ, কেউ হাতে ফুলের তোড়া নিয়ে, কেউ মাথার পতাকা বেঁধে। দিনভর মহান বিজয় দিবস ঘিরে ছিল ব্যাপক উপস্থিতি।
নগরীর মোগলটুলির নূর উদ্দিন। একাত্তরের রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধার মতো সেজেছে সে। এমন করে সাজার কারণ জানতে চাইলে বললো, ‘পাকিস্তানি শত্রুদের মোকাবিলা করতে মুক্তিযোদ্ধারা অনেক কৌশলী ছিল। তাদের মতো সেজেছি।’
আরও পড়ুন
এর আগে সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) সকালে মহান বিজয় দিবসে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়রের পক্ষ থেকে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়। প্রথম প্রহরে নগরের উত্তর কাট্টলীতে পৃথকভাবে এ শ্রদ্ধা জানান তারা। এ সময় তোপধ্বনি ও সশস্ত্র অভিবাদনের মধ্য দিয়ে বিজয় দিবসের বার্তা দেওয়া হয়।
শ্রদ্ধা জানিয়ে মেয়র শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘বিজয়ের ৫৩ বছরেও বাংলাদেশের মানুষের মৌলিক অধিকার তথা খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসার অধিকার নিশ্চিত হয়নি। ৫৩টি বছর পার হয়ে গেছে, কিন্তু আমরা এখনো গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করছি।’
তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্রের পথে যে প্রতিবন্ধকতা রয়েছে, তা আমরা অতিক্রম করার চেষ্টা করছি। মানুষের মৌলিক অধিকার, কথা বলার স্বাধীনতা, গণতান্ত্রিক অধিকার, আইনের শাসন, মানবাধিকার এবং ভোটের অধিকার নিশ্চিত করাই আমাদের মূল লক্ষ্য।’
এর আগে গতকাল দিবাগত রাতে বিপ্লব উদ্যানে শ্রদ্ধা নিবেদন করে চট্টগ্রাম কলোজ ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা।
এ মসময় উপস্থিত ছিলেন— চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক বোরহানুল হক, যুগ্ম আহ্বায়ক মো. শরিফুল ইসলাম আবীর, সদস্য মন্জুর আলম, পারবেস, সোহেল, তারেক, রেজাউল, আমজাদ, শাওন, ইমরান, রাকিব, আশরাফ, ইমন, জুনায়েদ প্রমুখ।
আরএমএন/এমএ