‘নারী নির্যাতন, শোষণ ও বৈষম্য নিরসন না হলে নারীমুক্তি সম্ভব নয়’
সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম চট্টগ্রাম জেলা শাখার উদ্যোগে নারী জাগরণের পথিকৃৎ বেগম রোকেয়ার ১৪৪তম জন্ম ও ৯২তম মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষ্যে আলোচনা সভায় ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
সোমবার (৯ ডিসেম্বর) নগরীর পাহাড়তলি বীরকন্যা প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার ভাস্কর্য চত্বরে আয়োজিত এই সভায় সভাপতিত্ব করেন সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম চট্টগ্রাম জেলা শাখার আহ্বায়ক জোবায়ের বীণা।
বক্তব্য দেন বাসদ চট্টগ্রাম জেলা শাখার ইনচার্জ আল কাদেরী জয়, সদস্য মহিন উদ্দিন, মহিলা ফোরাম জেলা শাখার সদস্য সুপ্রীতি বড়ুয়া, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট চট্টগ্রাম নগর শাখার সভাপতি মিরাজ উদ্দিন।
আরও পড়ুন
সমাবেশে বক্তারা বলেন, ইতিহাসে এক উজ্জ্বল আলোকবর্তিকা বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন রক্ষণশীল সামন্ত ভূস্বামী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেও তিনি স্বপ্ন দেখেছিলেন এমন এক সমাজ, যেখানে নারী হবে মানুষ ও স্বাধীন। বেগম রোকেয়া সমাজে নারীর যে অবস্থান দেখতে চেয়েছিলেন তার মৃত্যুর ৯২ বছর পরও আমরা সেখানে পৌঁছাতে পারিনি। তিনি বুঝেছিলেন সমাজের অর্ধেক অংশ নারীকে পিছিয়ে রেখে সমাজের প্রকৃত মুক্তি ও পরাধীন ভারত বর্ষের স্বাধীনতা সম্ভব নয়। তাই তিনি ঘুণেধরা নারী-পুরুষের সম্মিলিত লড়াইয়ের আহ্বান করেছিলেন। গেয়েছিলেন সমাজে মানবমুক্তির জয়গান। সমাজে বিভিন্ন সময় নারী নির্যাতন, ধর্ষণ, নিপীড়নের ঘটনায় মানুষ ফুঁসে উঠলেও অপরাধ প্রবণতা বেড়ে চলেছে।
বক্তারা আরও বলেন, বিজ্ঞাপন, সিনেমা নাটকে নারীকে অশ্লীল উপস্থাপন ও বিকৃতি লালসার বিরুদ্ধে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক লড়াইয়ের প্রয়োজন। রোকেয়ার জীবন ও সাহিত্যকর্ম সমাজের মধ্যে বিস্তৃতির মাধ্যমে গড়ে তুলতে হবে এই আন্দোলনের সাংস্কৃতিক ও ভাব মানসিকতা। ঘরে বাইরে নারীর উপর নিপীড়ন, মজুরি বৈষম্য এবং সমাজের সকল ক্ষেত্রেই নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে বেগম রোকেয়া আমাদের অনুপ্রেরণা।
আমাদের মহাম মুক্তিযুদ্ধ থেকে জুলাই'২৪ গণঅভ্যুত্থানেও রাজপথে মেয়েরা বিপুল অংশগ্রহণের মধ্যে দিয়ে অসীম সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছে, কিন্তু সেই নারীকেই রাখা হয় গৃহবন্দী ও পুরুষের অধীনে। বেগম রোকেয়ার জীবন ও শিক্ষা নারীমুক্তির সংগ্রামকে বেগবান করবে। এই লড়াইকে সমাজ পরিবর্তনের লড়াইয়ে সঙ্গে সম্পূরকভাবে পরিচালনা করার জন্য নারী-পুরুষ সকলের মিলিত ঐক্যবদ্ধ হওয়া আজ সময়ের প্রয়োজন।
সমাবেশ শেষে চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের শিল্পীরা সাংস্কৃতিক পরিবেশনা করেন এবং পরে মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।
আরএমএন/এমএসএ