র্যাব বিলুপ্তির দাবি জানালেন ফরহাদ মজহার
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর উপস্থিতিতে পুলিশের এলিট ফোর্স র্যাবকে বিলুপ্ত করার আহ্বান জানিয়েছেন চিন্তক ও কবি ফরহাদ মজহার
তিনি বলেন, আজকে যারা নাগরিক ও মানবাধিকারের কথা বলেন, তারা দীর্ঘদিন ধরে র্যাবকে বিলুপ্তির কথা বলেছেন। প্রথম যখন র্যাব গঠিত হয়, তখন আমি একটি লেখায় বলেছিলাম, এই র্যাবের কারণে বিএনপির পতন ঘটবে, আজকে বা কালকে। কেন এ ঘটনা ঘটলো। কারণ, আপনি সেনাবাহিনীর একজন সদস্যকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে এনে এমন কিছু কাজ করাচ্ছেন, যেটা সৈনিক কখনো করে না। নিরস্ত্র মানুষকে বিচারবহির্ভূত হত্যা সেনাবাহিনী কখনো করে না। সৈনিক সব সময় আরেকজন অস্ত্রধারীর বিরুদ্ধে লড়াই করে, কখনো নিরস্ত্র মানুষের বিরুদ্ধে সে বন্দুক ধরে না। এটা আমরা আমাদের সংস্কৃতির মধ্যে ঢুকিয়েছি।
রোববার (৮ ডিসেম্বর) বিকেলে পিলখানার বিজিবি সদর দপ্তরের সীমান্ত সম্মেলন কেন্দ্রে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আহতদের স্বাবলম্বীকরণে বিজিবির সহায়তা প্রদান অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন তিনি।
ফরহাদ মজহার বলেন, আজকে অনুষ্ঠানে এখানে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা হাজির আছেন, তাকে অনুরোধ জানাবো, অতি দ্রুত র্যাব বিলুপ্ত করুন। পাশাপাশি অতি দ্রুত বিজিবিকে আমাদের ফার্স্ট লাইনার ডিফেন্স আকারে গড়ে তোলার আহ্বান জানাচ্ছি। কারণ তারা সৈনিক, তারাই আমাদের প্রথম প্রতিরোধ গড়ে তুলবে।
আরও পড়ুন
তিনি বলেন, বিজিবি আমাদের সৈনিক, তারাই আমাদের রক্ষা করবে। সৈনিকের মর্যাদা যে জাতি বুঝতে পারে না, কথায় কথায় সৈনিককে নিন্দা করে, সেই জাতি কখনো বড় কিছু হতে পারবে না। কারণ সৈনিকতা অত্যন্ত গর্বের বিষয়।
তিনি আরও বলেন, আমাদের ফ্রন্ট লাইন ডিফেন্স হিসেবে প্রথম শত্রুর বুলেট মোকাবিলা করবে বিজিবি। ফলে তাদের অবশ্যই আমাদের জাতীয় প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার অন্তর্গত হতে হবে। তাদের কাজ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে থেকে পুলিশের অভাবে বাহিনীটির ভূমিকা পালন করা নয়। পৃথিবীর কোনো রাষ্ট্র এই কাজ করে না। পৃথিবীতে কোনো রাষ্ট্র সৈনিকদের এভাবে অপব্যবহার করে না।
ফরহাদ মজহার বলেন, আজ আপনারা (বিজিবি) দায়িত্বশীলতার মাধ্যমে জনগণের সঙ্গে সৈনিকের যে সম্পর্ক তৈরি করেছেন, সেটি বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব ও ভূখণ্ডের অখণ্ডতা রক্ষায় একটি ঐতিহাসিক ঘটনা। এই ঘটনা তাৎপর্যপূর্ণ কারণ, আমরা ইতোমধ্যে একটি বিপ্লব করেছি, যেটাকে আমরা জুলাই গণঅভ্যুত্থান বলছি। আমাদের মনে রাখতে হবে, আমরা একটি গণঅভ্যুত্থান করেছি, জনগণ জেগেছে। আর জনগণ জাগার মানে হলো দেশকে রক্ষার ক্ষেত্রে যিনি সৈনিক তিনি নাগরিক; যিনি নাগরিক, তিনিই কিন্তু সৈনিক।
বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ, মেজর আহমেদ ফেরদৌস (অব.), উইমেন সাপোর্ট গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা তৌহিদা হক। এছাড়া বিজিবির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা, আহত ছাত্র-জনতা ও তাদের অভিভাবক এবং প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
জেইউ/এসএম