গণমাধ্যমের গলা চেপে ধরা আওয়ামী সরকার পতনের বড় কারণ
গণমাধ্যমের গলা চেপে ধরা পূর্ববর্তী আওয়ামী সরকার পতনের অন্যতম বড় কারণ বলে মনে করেন ডেইলি স্টারের সম্পাদক ও প্রকাশক মাহফুজ আনাম।
রোববার (১ ডিসেম্বর) রাজধানীর মহাখালীর ব্র্যাক সেন্টারে সিপিডির ৩০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে আয়োজিত সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন। সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন। সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের চেয়ারম্যান রেহমান সোবহান সূচনা বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে সাংবাদিক মাহফুজ আনাম বলেন, আগামীতে গণতান্ত্রিক ও বৈষম্যহীন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখি। সিপিডির সঙ্গে মিডিয়ার সম্পর্ক সুদৃঢ়, বিশ্বাস ও আস্থার সম্পর্ক। সিপিডি জনগণের বিকল্প মাধ্যম হয়ে উঠেছে। সিপিডির সব মতামত গবেষণামূলক ও তথ্যভিত্তিক। গত ১৫ বছর মুক্তচিন্তাকে আঘাত করা হয়েছে। আমরা এখনও মানসিক বিপর্যয়ের মধ্যে আছি। আমি ফ্যাসিস্ট সাইকোলজির মধ্য থেকে নতুন অবস্থানে এসেছি। সেই সাইকোলজি থেকে বের হতে পেরেছি? আমাদের জবাবদিহিতার মধ্যে থাকতে হবে। আর জবাবদিহিতা প্রতিদিনই দেয় সংবাদপত্র। অন্য প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন সময়ে দেয়, কিন্তু দিনের পর দিন জবাদিহিতা নিশ্চিত করে স্বাধীন গণমাধ্যম। পূর্ববর্তী সরকার পতনের অন্যতম বড় কারণ হলো তারা মিডিয়ার গলা চেপে ধরেছিল। যদি মিডিয়ার স্বাধীনতা দিতো, তাহলে তার কাছে অনেক পর্যালোচনা তথ্য পৌঁছাতো। কিন্তু মিডিয়ার কণ্ঠরোধের কারণে তার কাছে সত্য যেতোই না।
আরও পড়ুন
অন্যদিকে বিএনপি নেতা ও সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বিগত সরকারের সময়ে আমাদের যখন কথা বলার সুযোগ সংকীর্ণ হয়ে গিয়েছিল, তখন সিপিডির অনুষ্ঠানে কথা বলার সুযোগ করে দিয়েছিল। ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের পর মত প্রকাশে বড় ধরনের পরিবর্তন হয়েছে। রাজনীতির বাইরে বিশেষ করে অর্থনীতি ও সামাজিকখাতে অনেক ভূমিকা রয়েছে। বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার ভোটাধিকার হরণ করেছিল। আর ভোটের অধিকার হরণ করলে, জনগণের অন্যান্য অধিকারকে বঞ্চিত করতেই হয়। বর্তমানে এমন একটি পরিবেশ এসেছে, সরকার ব্যবস্থার পাশাপাশি রাজনৈতিক পার্টির মধ্যেও সংস্কার করতে হচ্ছে। সংস্কার করে আমাদের সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। সংস্কার করার পাশাপাশি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে হবে। রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে সংস্কার হতে হবে, যেখানে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা জরুরি। কিছু মানুষ বসে চাপিয়ে দিলেই সংস্কার হবে না। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া স্থিতিশীল হতে হবে।
সবার জন্য মুক্ত পরিবেশ গড়তে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বর্তমানে ভালো সময় এসেছে। সবার জন্য নিরপেক্ষ ও মুক্ত পরিবেশ গড়তে হবে। আমি মনে করি সব রাজনৈতিক ব্যক্তিদের মধ্যেও বোধোদয় হয়েছে। আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পারবো। যেখানে সিপিডি অন্যতম বড় ভূমিকা রাখবে।
পিডির সম্মানীয় ফেলো প্রফেসর রওনক জাহান বলেন, ভবিষ্যতে দেশের একটি গণতান্ত্রিক পরিবেশ থাকবে, যেখানে সিপিডির মতো প্রতিষ্ঠান নির্বিঘ্নে কাজ করতে পারবে। বহুমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকবে। বহুমতের প্রকাশের জন্য নানান ধরনের ঝুঁকি রয়েছে। সবই যে সরকারের পক্ষ থেকে আসে তা নয়, একটি পক্ষ আছে যারা অন্যের মত শুনতে চায় না। সবাইকে সহিষ্ণু হতে হবে।
আরএম/এসএম