সরকারের শ্রম সংস্কার প্রতিশ্রুতিকে স্বাগত যুক্তরাষ্ট্রের
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের শ্রম সংস্কার শীর্ষ অগ্রাধিকারের প্রতিশ্রুতিকে স্বাগত জানিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। শ্রমিকদের স্বাধীন ট্রেড ইউনিয়ন গঠন ও যোগদানের অধিকার এবং উন্নত কর্মপরিবেশের জন্য যৌথ দর-কষাকষি করার অধিকারকে শক্তিশালী করতে বাংলাদেশকে আরও উৎসাহিত করছে দেশটি।
যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের বিশেষ প্রতিনিধি কেলি এম. ফে রদ্রিগেজের নেতৃত্বাধীন মার্কিন প্রতিনিধিদলের ঢাকা সফর শেষে মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) ঢাকায় মার্কিন দূতাবাস এক প্রেস নোটে এ বার্তা জানিয়েছে।
মার্কিন দূতাবাস জানায়, বাংলাদেশের অর্থনীতি, গণতন্ত্র এবং শ্রমিকদের সমর্থনে আসা যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদলের সফর শেষ হলো আজ। প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের বিশেষ প্রতিনিধি কেলি এম. ফে রদ্রিগেজ এবং লেবার ডিপার্টমেন্টের ডেপুটি আন্ডারসেক্রেটারি থিয়া লি। এ সফরে তাদের সঙ্গে ছিলেন ইউএসএআইডি-এর প্রতিনিধি, আমেরিকান অ্যাপারেল অ্যান্ড ফুটওয়্যার অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান ব্র্যান্ডগুলোর ঊর্ধ্বতন নেতৃত্ব এবং আন্তর্জাতিক শ্রম বিশেষজ্ঞ ইউএনআই গ্লোবাল ইউনিয়নের মহাসচিব ক্রিস্টি হফম্যান এবং ওয়ার্কার রাইটস কনসোর্টিয়ামের নির্বাহী পরিচালক স্কট নোভা।
সফরে অংশগ্রহণকারী যুক্তরাষ্ট্রের ব্র্যান্ডগুলোর মধ্যে ছিল গ্যাপ ইনকর্পোরেটেড, পিভিএইচ কর্পোরেশন এবং ভিএফ কর্পোরেশন, যারা বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাত (আরএমজি) থেকে প্রতি বছর আনুমানিক ১.৮ বিলিয়ন ডলার মূল্যের পণ্য ক্রয় করে।
বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও শাসন ব্যবস্থার জন্য গুরুত্বপূর্ণ এই মুহূর্তে শ্রম অধিকার চর্চার দীর্ঘস্থায়ী চ্যালেঞ্জগুলো সমাধান করা, যা জাতীয় অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি নিশ্চিত করতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শ্রমিকদের ক্ষমতায়ন টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, মানবাধিকারের প্রতি সম্মান, গণতান্ত্রিক স্থিতিশীলতা এবং জেন্ডার সমতা ও অন্তর্ভুক্তির জন্য অপরিহার্য।
যুক্তরাষ্ট্র বৈশ্বিক অর্থনীতিতে শ্রমিকদের মঙ্গল নিশ্চিত করার ব্যাপারে সরকারের, ক্রেতাদের, নিয়োগদাতাদের, নিয়ন্ত্রকদের এবং শ্রম ইউনিয়নগুলোর যৌথ দায়িত্বের উপর গুরুত্বারোপ করে। এর মধ্যে রয়েছে সুরক্ষিত ও সম্মানজনক কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করা এবং বিশেষভাবে তৈরি পোশাক খাতে সমিতি গঠনের স্বাধীনতা ও যৌথ দরকষাকষির অধিকার শক্তিশালী করার মাধ্যমে শ্রমিক অধিকারের উন্নয়ন।
মার্কিন দূতাবাস বলছে, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যেন শিল্প খাতের কার্যক্রম স্থিতিশীল কর্মসংস্থান, মানসম্পন্ন কর্মপরিবেশ এবং জীবিকা নির্বাহের উপযোগী মজুরি নিশ্চিত করে, যা বাংলাদেশের শ্রমিক এবং তাদের পরিবারের উন্নতি নিশ্চিত করবে।
যুক্তরাষ্ট্র গত ৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারিত্বকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করে। আমরা এই ঐতিহাসিক মুহূর্তে বাংলাদেশের জনগণের পাশে থাকার সুযোগ পেয়ে কৃতজ্ঞ এবং ঢাকায় একত্রিত হয়ে স্বাধীন ও গণতান্ত্রিক ট্রেড ইউনিয়ন, বাংলাদেশের শ্রমিক এবং তাদের নিয়োগকর্তা প্রতিষ্ঠানের প্রতি আমাদের যৌথ প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করতে পেরে গর্বিত।
এনআই/জেডএস