যেসব ট্রেন এখনও ঢাকা স্টেশনে আছে
অটোরিকশা চালকদের অবরোধের মুখে যাত্রী ও ট্রেনের নিরাপত্তার কারণে প্রায় সোয়া ৬ ঘণ্টা বন্ধ রাখা হয়েছিল ট্রেন চলাচল। এই সময়ে ঢাকা-টঙ্গী-ঢাকা সেকশন দিয়ে কোনো ট্রেন চলাচল করেনি। ফলে ঢাকা রেলওয়ে স্টেশন থেকে বিভিন্ন গন্তব্যে ছেড়ে যাওয়া ট্রেনগুলো বিলম্বের শিকার হয়। এছাড়া প্রচণ্ড ভোগান্তিতে পড়েন ওইসব ট্রেনের যাত্রীরা। অবশেষে বিকেল ৪টা ১০ মিনিট থেকে ট্রেন চলাচল শুরু হয়।
বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৬টায় ঢাকা রেলওয়ে স্টেশনের শিডিউল বোর্ড অনুযায়ী ১০টিরও বেশি ট্রেন ছেড়ে যাওয়ার অপেক্ষায় থাকতে দেখা যায়।
শিডিউল বোর্ড অনুযায়ী এখনও ঢাকা স্টেশন ছেড়ে যাওয়ার অপেক্ষায় আছে— জয়দেবপুরগামী তুরাগ কমিউটার ট্রেন। ট্রেনটি এখন ২ নম্বর প্লাটফর্মে অবস্থান করছে; চট্টগ্রামগামী চট্টলা এক্সপ্রেস (৮০২) ট্রেনের সম্ভাব্য ছাড়া সময় দেওয়া হয়েছে সন্ধ্যা ৬টা ৫০ মিনিটে। যদিও ট্রেনটিকে এখনও কোন প্লাটফর্ম দেওয়া হয়নি; রাজশাহীগামী সিল্ক সিটি (৭৫৩) ট্রেন ৫ নম্বর প্লাটফর্মে আছে। ট্রেনটি সন্ধ্যা ৬টা ২০ মিনিটে ছেড়ে যাওয়ার কথা আছে। সিলেটগামী কালনী এক্সপ্রেস (৭৭৩) এখনও কোনো প্লাটফর্ম ও সম্ভাব্য ছেড়ে যাওয়ার সময় পায়নি।
এছাড়া নোয়াখালীগামী উপকূল এক্সপ্রেস (৭১২) ট্রেন ৭ নম্বর প্লাটফর্মে অবস্থান করছে। ট্রেনটি সন্ধ্যা ৬টা ১০ মিনিটে ছেড়ে যাওয়ার কথা আছে; সিরাজগঞ্জগামী সিরাজগঞ্জ এক্সপ্রেস (৭৭৬) ট্রেন ৮ নম্বর প্লাটফর্মে অবস্থান করছে। তবে ট্রেনটি এখনও কোনো সম্ভাব্য সময় পায়নি; চট্টগ্রামগামী সুবর্ণ এক্সপ্রেস (৭০২) ট্রেন ৩ নম্বর প্লাটফর্মে অবস্থান করছে এবং সন্ধ্যা ৬টা ১৫ মিনিটে ছেড়ে যাওয়ার কথা আছে; তারাকান্দিগামী যমুনা এক্সপ্রেস কোনো প্লাটফর্ম না পেলেও সন্ধ্যা ৬টা ৩৫ মিনিটে ছেড়ে যাওয়ার কথা আছে; চিলাহাটিগামী চিলাহাটি এক্সপ্রেস (৮০৫) ও দেওয়াগঞ্জগামী জামালপুর কমিউটার (৫১) এখনও কোনো প্লাটফর্ম ও সম্ভাব্য ছেড়ে যাওয়ার সময় পায়নি।
আরও পড়ুন
এর আগে, ঢাকা রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশন মাস্টার মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন ঢাকা পোস্টকে জানান, অটোরিকশা চালকরা রেললাইনের ওপর অবরোধ করে আন্দোলন করেছিল। ফলে নিরাপত্তার স্বার্থে সকাল ১০টা থেকে ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল। সকাল ১০টার পরে কোনো ট্রেন ঢাকা স্টেশন থেকে ছেড়ে যায়নি এবং আসেওনি। ঢাকামুখী ট্রেনগুলো কাছাকাছি স্টেশনে তখন অবস্থান করছিল। পরে বিকেল ৪টা ১০ মিনিটে ঢাকা থেকে ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। বিলম্বে থাকা জামালপুর এক্সপ্রেস ট্রেন প্রথম ছেড়ে যায়। এবং বাকি ট্রেনগুলো ঢাকায় আসতে থাকে।
এদিকে সরেজমিনে দেখা গিয়েছিল, দুপুর ২টার পর থেকে আন্দোলনকারীদের সংখ্যা মহাখালী এলাকায় ধীরে ধীরে কমতে থাকে। একপর্যায়ে পৌনে ৩টার দিকে মহাখালী এলাকায় প্রায় ১০০’র মতো আন্দোলনকারী অটোরিকশা চালক ছিলেন। পরে তাদেরকে পুলিশ ও সেনাবাহিনী রাস্তা থেকে সরিয়ে দেয়। পুলিশ ও সেনাবাহিনীর বাধার মুখে রাস্তা থেকে সরে যায় আন্দোলনরত অটোরিকশা চালকরা। তারা রাস্তা থেকে সরে গেলে একদিকে যেমন মহাখালী রেল লাইনের অবরোধ শেষ হয়, তেমনি রাস্তার অবরোধ শেষ হয়। পরে বিকেল ৩টা থেকে মহাখালীর সব রাস্তায় যানচলাচল শুরু হয়।
এর আগে ১৯ নভেম্বর (মঙ্গলবার) ঢাকা মহানগর এলাকায় তিন দিনের মধ্যে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল বন্ধের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল বন্ধে কর্তৃপক্ষের নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন আদালত। এরপর থেকেই ঢাকায় বিভিন্ন এলাকায় আন্দোলন করছেন ব্যাটারিচালিত রিকশা চালকরা।
উল্লেখ্য, গত ১৮ নভেম্বর তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে বেলা ১১টা ৪০ মিনিটের দিকে মহাখালী রেল ক্রসিং এলাকায় ঢাকামুখী উপকূল এক্সপ্রেস ট্রেনে পাথর নিক্ষেপ করে আন্দোলনকারীরা। এতে ট্রেনের ইঞ্জিনসহ ৬টি কোচ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এছাড়া আনুমানিক ১৫ জনের মতো নারী-শিশুসহ যাত্রী আহত হন।
/এমএইচএন/এমএ