এনআইডি কার্যক্রম স্বরাষ্ট্রে নেওয়ার প্রস্তাবে উদ্বেগ
নির্বাচন কমিশনের অধীনে থাকা জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন কার্যক্রম স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগে দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। আর এই প্রস্তাব নিয়ে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা জানিয়েছে বাংলাদেশ ইলেকশন কমিশন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন।
বুধবার (১৩ মে) ‘বাংলাদেশ ইলেকশন কমিশন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন’ এই বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে।
জানা যায়, নির্বাচন কমিশনের জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন কার্যক্রম স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগে দেওয়ার একটি প্রস্তাব এসেছে। প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের এ সংক্রান্ত চিঠি মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশনে পাঠিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
এ নিয়ে কমিশন সভায় কোনো আলোচনা না হওয়ায় পরবর্তীতে গভীরভাবে পর্যালোচনা করে ইসির অবস্থান জানানো হবে বলে জানান ইসি সচিব হুমায়ুন কবীর খোন্দকার। বিকালে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদার সভাপতিত্বে কমিশন সভায় এমন সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে সচিব জানিয়েছেন।
ইসি সচিব বলেন, কমিশনের বুধবারের সভায় এ সংক্রান্ত এজেন্ডা ছিল না। গতকাল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে চিঠিটি আমরা পেয়েছি। এ বিষয় নিয়ে এখনও বিস্তারিত পর্যালোচনা করিনি আমরা। পর্যালোচনা করার পরে যদি কিছু বলার থাকে জানাব। অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে পাওয়া স্মারকলিপি পর্যালোচনা করে কমিশন সিদ্ধান্ত নেবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
নির্বাচন কমিশন ২০০৭-০৮ সালে ছবিসহ ভোটার তালিকার কাজ শুরু করে। বর্তমানে দেশের ১১ কোটি ১৭ লাখের বেশি নাগরিক ভোটার তালিকাভুক্ত রয়েছে। ২০১০ সালে ইসির অধীনে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ একটি আইনগত ও প্রাতিষ্ঠানিক ভিত্তি পায়।
যেসব প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের চিঠিতে বলা হয়, জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন কার্যক্রম নির্বাহী বিভাগের দায়িত্বের অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় বিভিন্ন দেশের উদাহরণের আলোকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন সুরক্ষা সেবা বিভাগ ওই দায়িত্ব পালনে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ বিবেচিত বিধায় জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন সংক্রান্ত দায়িত্ব সুরক্ষা সেবা বিভাগে ন্যস্ত করার লক্ষ্যে ‘অ্যালোকেশন অব বিজনেস অ্যামং ডিফারেন্ট মিনস্ট্রিজ অ্যান্ড ডিভিশন্স’- এ সুরক্ষা সেবা বিভাগের দায়িত্বগুলোর মধ্যে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন সংক্রান্ত যাবতীয় কার্যক্রম অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে।
জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইন-২০১০ এ ‘নির্বাচন কমিশন’ এর পরিবর্তে সরকার শব্দ অন্তর্ভুক্তকরণসহ প্রয়োজনীয় সংশোধনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে। সুরক্ষা সেবা বিভাগ কর্তৃক জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বিদ্যমান অবকাঠামো ও জনবল নির্বাচন কমিশন থেকে সুরক্ষা বিভাগে হস্তান্তরের ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে।
এ অবস্থায় ইসির অধীনে এনআইডি সংক্রান্ত কার্যক্রম ও সেবা নিয়ে আইনগত, অপারেশনাল ও কারিগরি দিক এবং সুবিধা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগে হস্তান্তরিত হলে উদ্বেগ প্রকাশ করে ‘বাংলাদেশ ইলেকশন কমিশন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন’।
অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নুরুজ্জামান তালুকদার ও সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান তালুকদার স্বাক্ষরিত ইসির কাছে দেওয়া স্মারকলিপিতে জানান, দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে ইসির অধীনে জাতীয় পরিচয়পত্রের কার্যক্রম যেভাবে চলমান রয়েছে তা অব্যাহত রেখে দ্রুত কীভাবে সেবা নিশ্চিত করা যায় সে বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে হবে।
এসআর/এমএইচএস