দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাজপথে থাকবেন নকলনবিশরা
গত ২০ অক্টোবর থেকে জাতীয়করণের এক দফা এক দাবি নিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন বাংলাদেশ এক্সট্রা মোহরার অ্যাসোসিয়েশনের নকলনবিশরা। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে সংসদসহ সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যক্তিবর্গ ও কর্মকর্তারা নকলনবিশদের চাকরি জাতীয়করণের আওতায় আনার ঘোষণা দিয়েছিলেন। এরপর বহু সরকারের পালাবদল ঘটে। কিন্তু নকলনবিশদের খোঁজ কেউ রাখেনি। তাই যতক্ষণ পর্যন্ত তাদের দাবি আদায় না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত তারা রাজপথে থাকার সিদ্ধান্ত নেন।
রোববার (১৭ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ এক্সট্রা মোহরার অ্যাসোসিয়েশন ও বৈষম্যবিরোধী নকলনবিশ দাবি আদায় পরিষদ ২৯তম দিনের মতো অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে।
অবস্থান কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে কর্মরত ১৬ হাজার ২৪৬ জন এক্সট্রা-মোহরার/নকলনবিশকে জাতীয়করণের দাবিতে ১৯৮২ সাল থেকে আন্দোলন চলছে। তারই ধারাবাহিকতায় এই দফায় নকলনবিশদের লাগাতার অবস্থান কর্মসূচির অংশ হিসেবে গত ২০ অক্টোবর থেকে অবস্থান কর্মসূচি চলছে।
আরও পড়ুন
তারা বলেন, নকলনবিশরা সরকারি কোনো বেতন-ভাতা পান না। সমাজের মানুষ জানে তারা সরকারি চাকরি করেন। কিন্তু বাস্তবে নকলনবিশরা জমির দলিলের এক পৃষ্ঠা বালামে লিখলে মাত্র ২৪ টাকা মঞ্জুরি পান। প্রকৃতপক্ষে এক পৃষ্ঠা বালাম লেখার জন্য জনগণের কাছ থেকে সরকার রাজস্ব নেয় ৪০ টাকা। সেখান থেকে নকলনবিশদের দেওয়া হচ্ছে ২৪ টাকা। বাকি ১৬ টাকা রাজস্ব খাতে জমা হচ্ছে। নকলনবিশদের টাকা দিয়েই তাদের চাকরি জাতীয়করণ করা সম্ভব। নকলনবিশদের দীর্ঘদিনের দাবি চাকরি জাতীয়করণ করা হোক। কিন্তু সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলে বিষয়টি নিয়ে কথা বলার অভাবে আমরা আজও অন্ধকারেই রয়ে গেছি।
এসময় বাংলাদেশ এক্সট্রা মোহরার (নকলনবিশ) অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ও বৈষম্যবিরোধী নকলনবিশ দাবি আদায় পরিষদের সদস্য সচিব মো. আল-আমিন সরকার বলেন, ‘আমরা আমাদের জাতীয়করণের এক দফা এক দাবি নিয়ে ২৬ দিন ধরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছি। ইতোপূর্বে যে সরকার ছিল তারা আমাদের মৌখিক আশ্বাস দিয়েছিল যে আমাদের দাবি মেনে নেবে কিন্তু তারা সেটা করেনি। এ সরকারের উপদেষ্টা আসিফ নজরুল স্যার আমাদের গত মাসের (অক্টোবর) ২৭ তারিখে বলেছেন কিন্তু কাগজ-কলমে দেননি। তিনি আমাদেরকে ২০ দিন সময় দিতে বলেছিলেন। তখন আমরা উনাকে বলেছিলাম যে বিগত সরকারও মৌখিকভাবে আশ্বাস দিয়েছিল কিন্তু পরে করেনি। তাই লিখিতভাবে যতক্ষণ আশ্বাস পাব না ততক্ষণ আমরা রাজপথ ছাড়ব না। তাই আমরা বলছি যতক্ষণ পর্যন্ত আমাদের দাবি আদায় না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা রাজপথে আছি।’
অবস্থান কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ এক্সট্রা-মোহরার (নকলনবিশ) অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও বৈষম্যবিরোধী নকলনবিশ দাবি আদায় পরিষদের আহ্বায়ক মো. রফিকুল ইসলাম, মো. আজিজুল হক, এনামুল হাসান, মাসুদ রানা, শাহ রিপন, জাহাঙ্গীর আলম, সেলিনা আক্তার, রুবেলসহ কেন্দ্রীয়, বিভাগ, জেলা ও উপজেলার সর্বস্তরের নকলনবিশরা।
ওএফএ/এসএসএইচ