রোজিনা ইসলামের গলা চেপে ধরা সেই নারীর নাম পলি
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলামকে শারীরিকভাবে হেনস্তা করা ওই নারীর নাম মাকসুদা সুলতানা পলি। তিনি স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের আর্থিক ব্যবস্থাপনা ও অডিট অনুবিভাগের অফিস সহায়ক। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সোমবার (১৭ মে) হেনস্তার ঘটনার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ছবি ছড়িয়ে পড়ে। ছবিতে দেখা যায়, রোজিনা ইসলামের গলা চেপে ধরছেন এক নারী। তিনি একজন অতিরিক্ত সচিব বলে গুঞ্জন ওঠে।
তবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেছেন, হেনস্তাকারী ওই নারী মাকসুদা সুলতানা পলি। এ ঘটনার ছবি প্রকাশ পাওয়ায় নিজেকে আড়ালে রাখতে চাচ্ছেন তিনি।
বুধবার (১৯ মে) সচিবালয়ে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগে পলির কক্ষে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মঙ্গলবার অফিসে আসেননি তিনি। বুধবার সকালে অফিসে এলেও বেশিক্ষণ থাকেননি। এরপর দুপুরে আবার এসে কয়েক মিনিট পর বের হয়ে যান।
ঘটনা প্রসঙ্গে জানতে মাকসুদা সুলতানা পলির মোবাইল ফোনে কল করলে রিসিভ করেও কোনো কথা বলেননি তিনি। এরপর আরও কয়েকবার কল করা হলেও আর রিসিভ করেননি।
কী বলছে তদন্ত কমিটি?
রোজিনা ইসলামের ওইদিনের ঘটনা তদন্তে গঠিত কমিটির আহ্বায়ক ও স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের যুগ্ম-সচিব (উন্নয়ন অধিশাখা) মো. সাইফুল্লাহিল আজম ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমরা কাজ করছি। যাদের নামে অভিযোগ আসছে, তাদের আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করব।
অভিযোগ অস্বীকার কাজী জেবুন্নেসা বেগমের
মঙ্গলবার সকালে রোজিনার স্বামী মনিরুল ইসলাম মিঠু সাংবাদিকদের বলেন, অতিরিক্ত সচিব কাজী জেবুন্নেসা বেগম, উপসচিব জাকিয়া পারভীন, পুলিশ কনস্টেবল মিজানসহ যারা জড়িত ছিলেন তাদের নামে মামলা করব। আমরা আমাদের উকিলের সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি আসার পর তার সঙ্গে আলোচনা করে মামলা করব।
তবে নিজের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অতিরিক্ত সচিব (বিশ্বস্বাস্থ্য অনুবিভাগ) কাজী জেবুন্নেছা বেগম। ঢাকা পোস্টকে তিনি বলেন, জটলা দেখে আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। সেখানে মাত্র পাঁচ থেকে সাত মিনিট ছিলাম। আমি তাকে নির্যাতন করিনি।
গত সোমবার পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্য সাংবাদিক রোজিনা ইসলাম স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে যান। সেখানে ৫ ঘণ্টার বেশি সময় তাকে আটকে রেখে হেনস্তা করা হয়। একপর্যায়ে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। রাত ৯টার দিকে তাকে সচিবালয় থেকে শাহবাগ থানায় আনা হয়। রাতেই তার বিরুদ্ধে অফিসিয়াল সিক্রেটস আইনে মামলা করা হয়।
মঙ্গলবার সকাল পৌনে ৮টার দিকে রোজিনাকে আদালতে নেওয়া হয়। বেলা ১১টার একটু পরে সিএমএম আদালতে তোলা হয় তাকে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) আরিফুর রহমান সরদার তার পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। বিচারক রিমান্ড নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। বর্তমানে তিনি কাশিমপুর কেন্দ্রীয় মহিলা কারাগারে আছেন।
এসএইচআর/আরএইচ