গুলিবিদ্ধ কাজলের অবস্থার অবনতি, থাইল্যান্ড নেওয়ার সিদ্ধান্ত
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে রাজপথে নেমে মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে তিন মাস ধরে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী কাজল মিয়া। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালে দীর্ঘ চিকিৎসায় শুরুতে তার শারীরিক অবস্থার উন্নতি হলেও হঠাৎ আবার অবনতি হয়েছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে থাইল্যান্ড পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
শনিবার (১৬ নভেম্বর) দুপুরে শারীরিক অবস্থার অবনতির বিষয়টি স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগমকে জানানো হলে তিনি তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামকে হাসপাতালে যাওয়ার অনুরোধ করেন। পরে হাসপাতালে এসে নাহিদ ইসলাম কাজলকে থাইল্যান্ড নেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
জানা গেছে, তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম নিউরোসায়েন্সেস হাসপাতালে এসে চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলেন। এসময় তিনি বলেন, কাজলকে দ্রুত থাইল্যান্ডের বেজথানি হাসপাতালে নেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। শনিবার হওয়ায় আজ তার ভিসা পাওয়া যাচ্ছে না। আমরা ভিসা ও খরচের ব্যাপারে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও অর্থ মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করেছি। দুই মন্ত্রণালয় থেকেই আমরা সবুজ সংকেত পেয়েছি। কাজলকে দ্রুতই এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে থাইল্যান্ড নেওয়া হবে।
আরও পড়ুন
এর আগে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল (সিএমএইচ) থেকে গণবিপ্লবে আহত মুসাকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়। সেই অভিজ্ঞতা থেকেই স্বাস্থ্য উপদেষ্টা সিএমএইচে যোগাযোগ করেন এবং সেখান থেকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করেন।
এসব বিষয়ে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম বলেন, ভিসা না থাকায় কাজলকে আজ থাইল্যান্ড নেওয়া সম্ভব হচ্ছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে থাই ভিসা সেন্টারে যোগাযোগ করা হয়েছে। আশা করা হচ্ছে আগামীকাল (রোববার) ভিসা পাওয়া যাবে। ভিসা পাওয়ার পরই তাকে নিয়ে যাওয়া হবে।
এদিকে কাজলকে দেখতে নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে যান স্বাস্থ্যের সহকারী উপদেষ্টা অধ্যাপক সায়েদুর রহমান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডিজি অধ্যাপক আবু জাফর ও জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতা ডা. আহাদ।
প্রসঙ্গত, কাজল মিয়া জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী। তিনি ৫ আগস্ট যাত্রাবাড়ীতে গুলিবিদ্ধ হন। জানা গেছে, সেদিন আবু সাঈদের মতো দু’হাত প্রসারিত করে বুক পেতে দিয়েছিলেন কাজল। পুলিশের গুলি তার মাথায় লাগে। এরপর তাকে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই গত তিন মাস ধরে তার চিকিৎসা চলছে।
চিকিৎসকরা জানান, চিকিৎসায় ধীরে ধীরে কাজলের অবস্থার উন্নতি হচ্ছিল। কিন্তু দু’দিন আগে হঠাৎ ইনফেকশন ধরা পড়ে। বেশ কয়েকবার তার ডায়রিয়া হয়। এতে রক্তচাপ কমে গিয়ে শকে চলে যান কাজল। পরে নিনসে বোর্ড করে চিকিৎসা দেওয়া হতে থাকে। আজ সকাল থেকে অবস্থা আরও খারাপ। আজও তার চিকিৎসায় বোর্ড মিটিং বসে। পরে সার্বিক অবস্থা স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগমকে জানানো হয়।
টিআই/এসএসএইচ