পলিথিনের মতো ই-বর্জ্য ব্যবস্থাপনায়ও গুরুত্ব দেওয়ার আহ্বান
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ইতোমধ্যে দেশের পলিথিন নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছেন। সারা দেশে অভিযান চলছে। কিন্তু পলিথিনের চাইতেও ভয়াবহ স্বাস্থ্যঝুঁকি ও পরিবেশ বিনষ্ট করছে ই-বর্জ্য। তাই পলিথিনের মতো ই-বর্জ্য ব্যবস্থাপনায়ও নীতিমালা বাস্তবায়নে গুরুত্বের আহ্বান জানিয়েছে টেলিযোগাযোগ ও প্রযুক্তি সেবা খাতের ভোক্তা অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন।
বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন।
সংগঠনটির সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, দেশের টেলিযোগাযোগ, ইন্টারনেট, ইলেকট্রিক-ইলেকট্রনিক্স পণ্যের ব্যবহার এখন মানুষের জীবনের সঙ্গে মিশে গেছে। দেশে বর্তমানে প্রায় ৩০ লাখ মেট্রিক টন ই-বর্জ্য তৈরি হচ্ছে। এর মধ্যে অব্যবহৃত মুঠোফোন থেকেই তৈরি হচ্ছে প্রায় ১১ লাখ মেট্রিক টন। আর পুরাতন টেলিভিশন থেকে তৈরি হচ্ছে প্রায় এক লাখ ২০ হাজার মেট্রিক টন ই-বর্জ্য প্রতিবছর। তার সাথে প্রতিবছর যুক্ত হয় আরো প্রায় ৩০ শতাংশ।
ধারণা করা হয়, দেশের টেলিযোগাযোগ প্রযুক্তি ও ইলেকট্রিক-ইলেকট্রনিক্স পণ্যের বাজার প্রায় ৭০ থেকে ৮০ হাজার কোটি টাকার। মুঠোফোন প্রযুক্তি পণ্য ও ইলেকট্রিক-ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস যে ধরনের ভারী ধাতু ব্যবহার করা হয় এতে করে রাসায়নিক একটি বিক্রিয়া তৈরি হচ্ছে বলছেন বিশেষজ্ঞরা। এই রাসায়নিক বিক্রিয়ার ফলে ক্যান্সার, শ্বাসকষ্ট, শ্রবণ সমস্যা, শিশু মৃত্যু, জন্মগত সমস্যা দেখা দেয়। পাশাপাশি পরিবেশ পানি ও বায়ু দূষণের কারণে মানব জীববৈচিত্র্যের সঙ্গে সঙ্গে বন্যপ্রাণী ও জলজ প্রাণী ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়ছে।
তিনি বলেন, ২০২১ সালে ই-বর্জ্য বিধিমালা প্রণয়ন হলেও এখনো বাস্তবায়ন হয়নি। বৈশ্বিক ই-ওয়েস্ট মনিটর রিপোর্ট ২০২৪ অনুযায়ী বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ ই-বর্জ্য উৎপাদনকারী দেশ। বিশ্বের অন্যান্য দেশে গ্রাহকের নষ্ট বা অব্যবহৃত হ্যান্ডসেট বা ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠান সরাসরি সংগ্রহ করে থাকে। আর আমাদের দেশে সংগ্রহ করে ভাঙারি দোকানদার।
বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠান (এসডো) বলেছে, ঢাকায় ই-বর্জ্যের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি। আর এ সব ই-বর্জ্য সংগ্রহ করছে শিশু-কিশোর। আর এই বর্জ্যের দূষণের কারণে প্রতিবছর মারা যাচ্ছে ১৫ শতাংশ শিশু। এ বর্জ্য রিসাইক্লিং ও সংগ্রহে নিয়োজিত প্রায় ৫০ হাজার শিশু-কিশোর।
অভিযোগ উঠেছে, বিটিআরসির একটি মনিটরিং ডিপার্টমেন্ট করার কথা থাকলেও ই-বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় এখন পর্যন্ত কমিশনের কোনো উদ্যোগ আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়নি। পূর্বে কমিশনের কাছে ই-বর্জ্য সংগ্রহে ও ব্যবস্থাপনায় আমরা যে প্রস্তাব দিয়েছিলাম সেটিও বাস্তবায়ন হয়নি।
আরএইচটি/এমজে