প্রত্যাবাসনেই জোর বাংলাদেশের
বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের সমস্যা সমাধানের একমাত্র পথ প্রত্যাবাসন। এই প্রত্যাবাসনকেই বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকার দিচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম। মঙ্গলবার (১৮ মে) রোহিঙ্গাদের জন্য চতুর্থবাবের মতো যৌথ সহায়তা পরিকল্পনা (জেআরপি) ঘোষণা অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘রোহিঙ্গা শরণার্থীরা তাদের নিজ ভূমি রাখাইনে ফিরে যাবে, এটাই একমাত্র সমাধান। মানবিক সহায়তা খুব জরুরি, তবে এটা স্থায়ী সমাধান নয়।’
খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু করতে জাতিসংঘের দাতা গোষ্ঠীদের নজর দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন শাহরিয়ার আলম।
বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের জন্য চতুর্থবাবের মত যৌথ সহায়তা পরিকল্পনা (জেআরপি) ঘোষণা করা হয়েছে। চলতি বছর রোহিঙ্গাদের পেছনে বাৎসরিক খরচের জন্য জেআরপিতে ৯৪ কোটি ডলার ঘোষণা করা হয়।
শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘প্রতি বছর আমরা জেআরপিতে অংশগ্রহণ করি আর ভাবি এটাই শেষ। কিন্তু এবারও জেআরপি ঘোষণা করতে হলো। এভাবে কতদিন তাদের টেনে নেওয়া যাবে? দাতা গোষ্ঠীরাই বা কতদিন সহযোগিতা করবে। আমি মনে করি, এর সমাধান টেকসই প্রত্যাবাসন।’
মিয়ানমারের আন্তরিকতার অভাবে এখন পর্যন্ত একজন রোহিঙ্গাকেও প্রত্যাবর্তন করা যায়নি উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন- ‘মিয়ানমার রোহিঙ্গা সমস্যা সৃষ্টি করেছে, মিয়ানমারকেই এর সমাধান করতে হবে’। বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে, দ্বিতীয় কোনো দেশ আশ্রয় দেয়নি। মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের ফেরানোর বিষয়ে দ্বিপাক্ষিক কমিটমেন্ট দিলেও তারা কথা রাখেনি। তারা রাজনৈতিকভাবে স্বদিচ্ছার পরিচয় দেয়নি।
মিয়ানমারের বর্তমান পরিস্থিতির দিকে বাংলাদেশ নজর রাখছে বলেও জানান প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, আসিয়ানসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে নিয়ে এ সমস্যা সমাধানে কাজ করছে বাংলাদেশ।
ভাসানচর ইস্যুতে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘ভাসানচরে আমরা এক লাখ রোহিঙ্গাকে পাঠাতে চাই। ইতোমধ্যে সেখানে গিয়ে স্বেচ্ছায় ১৮ হাজার রোহিঙ্গা বসবাস করছে। কিন্তু এটা নিয়ে নেতিবাচক কথা হয়েছে, ভুল ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে। জাতিসংঘসহ বিভিন্ন রাষ্ট্রদূতরা সেখানে গিয়েছেন। আমরা খুব শিগগিরই ভাসানচরে জাতিসংঘের সম্পৃক্ততা প্রত্যাশা করছি।’
রোহিঙ্গাদের জন্য বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ জেআরপিতে তুলে ধরেন শাহরিয়ার আলম। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকার রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন ইস্যুতে খেয়াল রাখছে। করোনা ইস্যুতেও রোহিঙ্গাদের জন্য বিশেষ যত্ন নেওয়া হচ্ছে। তাদের শিক্ষার ক্ষেত্রে আমরা রাজি হয়েছি, তবে এটা অবশ্যই মিয়ানমারের কারিকুলাম অনুসরণ করতে হবে; যেন তারা নিজেদের মাতৃভাষা ও নিজস্ব সংস্কৃতিকেই গুরুত্ব দেয়।
এনআই/এমএইচএস