মধ্যরাতের বৃষ্টিতে ঢাকায় ছুঁয়ে গেল হিমেল হাওয়া
রাজধানী ঢাকায় বুধবার মধ্যরাতে বজ্রসহ শিলাবৃষ্টি হয়েছে। আর এতেই শীতের বার্তা দিয়ে ছুঁয়ে গেছে হিমেল হাওয়া। এদিন রাত ২টা থেকে শুরু হওয়া বজ্রসহ বৃষ্টি রাত ৩টা পর্যন্ত অবিরত ঝরতে থাকে।
এদিকে বৃষ্টি প্রভাবে সকাল থেকে বিভিন্ন সড়কের পাশাপাশি অলিগলিতে কিছুটা জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। তবে ভোর থেকে সড়কে গণপরিবহনের পাশাপাশি যাত্রী, কাজে বের হওয়া মানুষের সংখ্যা তুলনামূলক কম দেখা গেছে।
কাকডাকা ভোরে রাজধানীতে গণমানুষের কাজে বের হওয়ার সময়টা কিছুটা পিছিয়ে দিয়েছে। হালকা শীতল আবহাওয়াতে গণপরিবহনগুলো অনেকটাই ফাঁকা। সেসব পরিবহনের দু-চারটা সিটে যাত্রী বাকিগুলো ছিল ফাঁকা। কিছু কিছু সিএনজি, রিকশা মোড়ে মোড়ে দাঁড়িয়ে থাকলেও যাত্রীর দেখা মেলেনি।
আরও পড়ুন
রাজধানীর গাবতলী থেকে আগারগাঁও, মহাখালী, গুলশান হয়ে বাড্ডা লিংক রোডে আসা বৈশাখী বাসের চালক এরশাদ আলী বলেন, অন্যান্য দিন এই সকালে বেশ কিছু যাত্রী পেলেও আজ একেবারেই যাত্রী নেই। গতরাতের বৃষ্টির কারণে আজ ভোর থেকে সড়কে যাত্রীর দেখা নেই। গাবতলী থেকে পুরো রাস্তা মিলিয়ে ৫ জন যাত্রী আনলাম। এছাড়া সড়কে গণপরিবহনের সংখ্যাও কম। বেলা বাড়লে, অফিস টাইমের আগে আগে হয়তবা মানুষ বের হবে সড়কে।
রাজধানীর মহাখালী এলাকায় কথা হয় সিএনজি চালক জাহিদুর রহমানের সঙ্গে। তিনিও একই বিষয়ে বলেন, গত রাতে বৃষ্টির কারণে আজ ভোর থেকে তেমন কোনো যাত্রী পাচ্ছি না। সড়ক অলিগলির কিছু কিছু জায়গায় অল্প জলাবদ্ধতা হয়ে আছে, ঠান্ডা আবহাওয়া রাজধানী জুড়ে।
বৃষ্টি ভেজা রাতে সারারাত নিজের চায়ের দোকান খোলা রেখেছিলেন কল্যাণপুরের চায়ের দোকানি ইলিয়াস মিয়া।
অন্যান্য দিনের সকালের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে তিনি বলেন, গত রাতে বৃষ্টির কারণে আজ সকাল সকাল বাইরে কাজে বের হওয়া মানুষের সংখ্যা কম, সঙ্গে পরিবহনও কম। অন্য দিন এই সময়ই কাজে বের হওয়া মানুষের সংখ্যা অনেক বেশি থাকে। তবে গতরাতের বৃষ্টি আর ভোর থেকে ঠান্ডা আবহাওয়ার কারণে মানুষ কম বের হয়েছে।
আগারগাঁওয়ে কথা হয় বেসরকারি চাকরিজীবী মকিদুর রহমানের সঙ্গে। তিনি বলেন, কাজের জন্য প্রতিদিন আমি ভোর বেলাতেই বের হই, তবে আজ ভোর থেকে সড়কে মানুষ কম বের হয়েছে। রাস্তা, অলি গলির বিভিন্ন স্থানে অল্প জলাবদ্ধতা দেখা যাচ্ছে গতরাতে বৃষ্টির কারণে। পাশাপাশি অন্যান্য দিন এই সময় গণপরিবহনে মানুষের ছোটাছুটি থাকে আজ সেখানে গণপরিবহন, যাত্রী দুটোই অনেক কম।
এর আগে অন্যান্য দিনের মতো প্রায় সন্ধ্যা পর্যন্ত গরম আবহাওয়া অনুভব হচ্ছিল ঢাকায়। কিন্তু গত সন্ধ্যার শীতল দমকা হাওয়া নগরের আবহাওয়া পরিবর্তনের জানান দেয়।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য মতে, ঢাকায় বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ৮-১২ কিলোমিটার, যা উত্তর ও উত্তরপশ্চিম দিক থেকে বইছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৩.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এর আগে, মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) সন্ধ্যায় বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. হাফিজুর রহমানের দেওয়া পূর্বাভাসে আগামী ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টির আভাস দেওয়া হয়েছিল। এছাড়া সারা দেশে রাত এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পাওয়ার কথাও বলা হয়।
ভোরের দিকে সারা দেশের নদী অববাহিকার কোথাও কোথাও হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশার বার্তাও দিয়েছিল আবহাওয়া অফিস।
এএসএস/এমএসএ