সবুজবাগে ২১ মামলার আসামিকে হত্যার অভিযোগ
রাজধানীর সবুজবাগ বাইগদিয়া এলাকায় নয়ন আহম্মেদ রমজান (৩৫) নামে এক যুবককে চাঁদাবাজির অভিযোগে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তিনি ড্রেজার ব্যবসায়ী ছিলেন। তার বিরুদ্ধে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় হত্যা, ডাকাতি, চাঁদাবাজি ও অস্ত্র আইনে ২১টি মামলা রয়েছে।
বুধবার (৩০ অক্টোবর) বেলা তিনটার দিকে এই ঘটনাটি ঘটে।
এতে ঘটনাস্থলে মারা যান ওই ব্যবসায়ী। পরে গত রাতের দিকে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।
রমজান কুমিল্লার মুরাদনগর থানার বোড়ার চর গ্রামের আব্দুল কুদ্দুস মিয়ার ছেলে। বর্তমানে সবুজবাগ এলাকায় থাকতেন।
আরও পড়ুন
নিহতের মা নাসিমা বেগম অভিযোগ করে বলেন, আমার ছেলে তার বন্ধুদের নিয়ে বালু ভরাটের ড্রেজারের ব্যবসা করতো। গতকাল বিকেলের দিকে ব্যবসায়িক পার্টনার জাহাঙ্গীর তাকে ডেকে নিয়ে গিয়ে গুলি এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। পরে আমি খবর পেয়ে ঢাকায় এসে দেখি আমার ছেলের লাশ পড়ে আছে সবুজবাগে। এরা আমার ছেলেকে হত্যা করে এখন চাঁদাবাজির নাটক সাজায়।
আমি আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই, এখন আমার এতিম নাতি দুইটাকে কে দেখবে।
নিহত ব্যবসায়ী রমজানের ব্যবসায়িক পাটনার হীরা বলেন, আমরা ৪-৫ বন্ধু মিলে বালু ভরাটের ডেজারের ব্যবসা করি সবুজবাগ এলাকায়। জাহাঙ্গীরও আমাদের ব্যবসায়িক পার্টনার ছিল। পরে সরকার বদলের সঙ্গে সঙ্গে জাহাঙ্গীর একা আমাদের সম্পূর্ণ ব্যবসা আত্মসাৎ এর চেষ্টা করে। তখন আমরা সবাই জাহাঙ্গীরকে বাধা দেই। এ নিয়ে কয়েকদিন আগেও আমাদের সঙ্গে তর্ক-বিতর্ক হয়। গতকালকে আমরা না থাকায় রমজানকে ডেকে নিয়ে যায় জাহাঙ্গীর। এরপর পেছন থেকে গুলি করে এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে ঘটনাস্থলে ফেলে রাখে রমজানকে। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা এসে রমজানের লাশ উদ্ধার করে।
তিনি আরও বলেন, আমরা এই হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার চাই। এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। এখন জাহাঙ্গীরের সন্ত্রাসী বাহিনী উল্টো আমাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা দিচ্ছে। আমরা এই স্বাধীন সরকারের কাছে ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই। ভবিষ্যতে যেন এ ধরনের ঘটনা না ঘটে, কারো মায়ের বুক যেন খালি না হয় আমরা এ সরকারের কাছে এটাই দাবি করি।
সুরতহাল প্রস্তুতকারী সবুজবাগ থানার উপ পরিদর্শক (এস আই) জাহাঙ্গীর আলম বলেন, তার মাথা এবং শরীরের বিভিন্ন জায়গায় গুরুতর আঘাতের চিহ্ন রয়েছে এবং বুকে একটি ছিদ্র রয়েছে যেটি দেখে মনে হচ্ছে এটি গুলির চিহ্ন। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে বিস্তারিত জানা যাবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সবুজবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মোহাম্মদ ইয়াসিন আলী বলেন, তার নামে সবুজবাগ মুগদা থানা এলাকায় হত্যা ডাকাতি চাঁদাবাজি ও অস্ত্র আইনে ২১টি মামলা রয়েছে। তাকে গুলি করে হত্যা করেছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত এরকম কোনো তথ্য আমাদের কাছে নেই। তবে আমাদের সুরতহাল প্রতিবেদনকারী অফিসার বলতে পারবেন তার শরীরে কোথায় কোথায় আঘাত আছে বা গুলির চিহ্ন আছে কিনা।
এসএএ/এমএসএ