‘ভিত্তিহীন তথ্যে’ তামাক আইনে বাধা দুই কোম্পানি : প্রজ্ঞা
সরকারের রাজস্ব হারানোসহ বেশকিছু ভিত্তিহীন তথ্য তুলে ধরে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে দুই তামাক কোম্পানির বিরুদ্ধে। কোম্পানি দুটি হলো ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ (বিএটিবি) এবং জাপান টোব্যাকো ইন্টারন্যাশনাল (জেটিআই)।
বুধবার (৩০ অক্টোবর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি এই অভিযোগ জানিয়েছে তামাকবিরোধী গবেষণা ও অ্যাডভোকেসি প্রতিষ্ঠান প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান)।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তি বলা হয়েছে, জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। সম্প্রতি আইনের খসড়া সংশোধনীটি অনুমোদনের জন্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। কিন্তু দুটি সিগারেট কোম্পানি ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ (বিএটিবি) এবং জাপান টোব্যাকো ইন্টারন্যাশনাল (জেটিআই) আইন সংশোধনের বিরোধিতা করে অর্থ এবং আইন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বরারর চিঠি দিয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, আইন সংশোধন হলে সরকারের রাজস্ব হারানোসহ বেশকিছু ভিত্তিহীন তথ্য তুলে ধরেছে কোম্পানি দুটি। তবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের তথ্য বলছে, ২০০৫ সালে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন পাস হওয়ার পর পরবর্তী ২০০৫-০৬ এবং ২০০৬-০৭ অর্থবছরে সিগারেট খাতে রাজস্ব আয় বেড়েছে যথাক্রমে ১৭.৯৭ শতাংশ এবং ৩৭.৫২ শতাংশ। একইভাবে, ২০১৩ সালের সংশোধনীর পর পরবর্তী ২০১৩-১৪ এবং ২০১৪-১৫ অর্থবছরে সিগারেট খাতে রাজস্ব আয় বেড়েছে যথাক্রমে ২৫.৫১ শতাংশ এবং ৪৬.৫২ শতাংশ।
এসব বিষয়ে প্রজ্ঞার নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের বলেন, মূলত পরোক্ষ ধূমপানের স্বাস্থ্যক্ষতি থেকে অধূমপায়ীদের সুরক্ষা প্রদান এবং তরুণ প্রজন্মকে তামাকের বিষাক্ত ছোবল থেকে মুক্ত রাখতেই বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনটি শক্তিশালী করার উদ্যোগ নিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। সুতরাং তামাক কোম্পানির অপতৎপরতায় বিভ্রান্ত না হয়ে খসড়া সংশোধনীটি দ্রুত পাস করতে হবে।
বাংলাদেশে বছরে ১ লাখ ৬১ হাজার মানুষ তামাক ব্যবহারের কারণে মৃত্যুবরণ করে। বর্তমানে ১৫ বছর তদূর্ধ্ব জনগোষ্ঠীর মধ্যে তামাক ব্যবহারের হার ৩৫.৩ শতাংশ। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে তামাক ব্যবহারের অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণ ৩০ হাজার ৫৬০ কোটি টাকা, যা একই সময়ে তামাকখাত থেকে অর্জিত রাজস্ব আয়ের (২২ হাজার ৮১০ কোটি টাকা) চেয়ে অনেক বেশি।
টিআই/এসএম