ভারতের ইউটার্নেও আশা ছাড়ছে না বাংলাদেশ
অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটাতে আগামী কয়েক মাস অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ভারত। ফলে বাংলাদেশসহ আরও কয়েকটি দেশের সাধারণ মানুষের কাছে টিকা পৌঁছাতে কয়েক মাস অপেক্ষা করতে হবে।
টিকা পেতে ভারতের সেরামকে দুয়েক-দিনের মধ্যে ৬০০ কোটি টাকা অগ্রিম দেওয়ার কথা ছিল। এরমধ্যে ভারতের পক্ষ থেকে টিকা রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞার খবর এলো।
এ প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল বাসার মোহম্মদ খুরশীদ আলম ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা সংবাদটি পেয়েছি। এ বিষয়ে বিস্তারিত বিকেলে জানানো হবে। সেরামের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা চলছে। বেক্সিমকো আমাদের জানিয়েছে সমস্যা হবে না। বাংলাদেশ এর আওতায় পড়বে না।
অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ড. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা ঢাকা পোস্টকে বলেন, গতকাল রাতেই আমরা জেনেছি যে ভারত টিকা রপ্তানি করবে না। আমরা বিষয়টা দেখছি। ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে যোগাযোগ করছি। এর পরিপ্রেক্ষিতে এখন কী করা যায়, আমরা দেখছি।
টিকার জন্য ৬০০ কোটি টাকা রোববার (৩ জানুয়ারি) পাঠানো হয়েছিল কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, টাকার বিষয়ে আমি নির্দিষ্ট করে কিছু বলতে পারছি না। ফিনান্সিয়াল বিভাগ টাকার বিষয়টা দেখছে, তারাই বিস্তারিত বলতে পারবেন। আমি শুধু জানি গতকালই সেরামকে টাকাটা পাঠানোর কথা ছিল।
এ বিষয়ে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের চিফ অপারেটিং অফিসার রাব্বুর রেজার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঢাকা পোস্টকে জানান, ভারত টিকা না দেওয়ার বিষয়টি শুনেছি। আমরা সেরামের সঙ্গে যোগাযোগ করছি। এ বিষয়ে আপনাদের বিস্তারিত বিকেলে জানাতে পারব।
অগ্রিম টাকার বিষয়ে তিনি বলেন, টাকার বিনিময়ে সেরাম ইনস্টিটিউট বাংলাদেশকে একটা ব্যাংক গ্যারান্টি দেবে। পুরোটাই একটা এগ্রিমেন্টের আওতায়। যদি কোনো কারণে তারা (সেরাম ইনস্টিটিউট) টিকা দিতে ব্যর্থ হয়, তাহলে পুরো টাকাই সরকার ফেরত নিয়ে আসতে পারবে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের জনতা এবং স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকে ওই টাকা অগ্রিম হিসেবে গচ্ছিত রাখা হবে। বিনিময়ে সেরাম ইনস্টিটিউট ব্যাংক গ্যারান্টি দেবে। প্রথম চালানের টিকা বাংলাদেশে আসার পর সেরাম ইনস্টিটিউট ব্যাংক থেকে টাকা তুলে নিতে পারবে। টিকা সরবরাহ শুরু হলে বাকি টাকা দেওয়া হবে।
এদিকে সেরাম ইনস্টিটিউটের সিইও আদর পুনাওয়ালা গণমাধ্যমকে বলেন, কয়েক মাসের জন্য ভ্যাকসিন রপ্তানির অনুমতি দেওয়া হবে না। ভারতীয়রা যাতে যথাযথভাবে ভ্যাকসিন পায় সেজন্য এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, এ পর্যন্ত ভারতের এক কোটিরও বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। যা বিশ্বের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। দেশটিতে প্রায় দেড় লাখ লোক ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে।
জানা যায়, করোনা ভ্যাকসিন বণ্টন পরিকল্পনার শুরুতেই ভারত ৩০ কোটি জনগণকে টিকা দিতে চায়। যার মধ্যে অগ্রাধিকার পাচ্ছেন স্বাস্থ্যকর্মী, পুলিশসহ মহামারি মোকাবিলায় সামনের সারির যোদ্ধারা।
টিআই/এসএম