বাসচাপায় নিহত তাসনিমের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিলো সড়ক বিভাগ
রাজধানীর বাড্ডায় গত ৯ অক্টোবর রাস্তা পার হওয়ার সময় বাসচাপায় নিহত তাসনিম জাহানের পরিবারকে ৬ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিয়েছে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ। এর মধ্যে তাসনিম জাহানের ক্ষতিপূরণ হিসেবে ৫ লাখ টাকা ও ওই ঘটনায় আহত তার বড় বোন নুসরাত জাহানের চিকিৎসার জন্য এক লাখ টাকা দেওয়া হয়।
মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ আয়োজিত ‘জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস ২০২৪’ উপলক্ষ্যে এক আলোচনা সভায় ক্ষতিপূরণের চেক তুলে দেওয়া হয় তাসনিম জাহানের বাবা সাইফুল আলমের হাতে। এসময় সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান ব্যর্থতার দায় স্বীকার করেন।
পরে সাইফুল আলম মেয়ের কথা স্মরণ করে কেঁদে ফেলেন। তিনি বলেন, আমি দাবি করছি, দ্বিতীয়বার স্বাধীন গণতান্ত্রিক সরকার এমন কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করুক, যাতে করে আমার মতো কোনো হতভাগ্য বাবাকে আর সন্তান হারাতে না হয়। নিরাপদ সড়ক যাতে হয়। কোনো তাসনিমের প্রাণ যেন ঝরে না যায়, কোনো তাসনিমের মা-বাবা যেন নিঃস্ব হয়ে না যায়। আমরা এই সরকারের কাছে দাবি করছি, আমরা যেন নিরাপদ সড়ক পাই, আমরা যেন সুন্দরভাবে বাংলাদেশকে গড়তে পারি। তাসনিমের জন্য আপনারা দোয়া করবেন।
আরও পড়ুন
এর আগে মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, গত ৯ অক্টোবর ফেসবুকে দেখি বাড্ডাতে একটি সড়ক দুর্ঘটনা হয়েছে। সেই দুর্ঘটনায় একজন অত্যন্ত মেধাবী ছাত্রী তাসনিম জাহান মারা যান এবং তার বোন আহত হন। তখনই আমি আমার সচিবকে বলি ওই পরিবারের খোঁজ-খবর নিতে। এরপর আমি নিহত তাসনিমের বাবার সঙ্গে ফোনে কথা বলি এবং আমাদের ব্যর্থতা ও অক্ষমতার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করি। পাশাপাশি তাদের শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাই।
তিনি বলেন, শুধু এটুকুতেই আমরা থেমে থাকিনি। আমরা দুর্ঘটনার বাসটির রোড পারমিট বাতিল করেছি, সেই বাসের রেজিস্ট্রেশন স্থগিত করেছি। এ ছাড়া সেই বাসটির ফিটনেস যিনি অনুমোদন করেছেন, তার বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি। চালকের লাইসেন্সও স্থগিত করা হয়েছে এবং এ ঘটনায় বাড্ডা থানায় যে মামলা হয়েছে সেটি চলমান হয়েছে। সড়ক আইনের সর্বোচ্চ ক্ষতিপূরণ নিহতের পরিবারকে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি। নিহত তাসনিম জাহানের জন্য পাঁচ লাখ টাকা এবং আহত নুসরাত জাহানের জন্য এক লাখ টাকা আজ আমরা দেব।
সড়ক উপদেষ্টা বলেন, মৃত্যুর কোনো প্রতিদান হয় না, জীবন অমূল্য। এটা আমরা কেউ দিতে পারব না। কিন্তু আজ আমরা যে অর্থটা তাসনিম ও নুসরাতের বাবার হাতে তুলে দেব, সেটা কেবল আমাদের ব্যর্থতার দায় স্বীকারের জন্য দেব।
সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. এহছানুল হকের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির চেয়ারম্যান মো. ইয়াসীন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন।
এমএইচএন/এসএসএইচ