হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি চান আবরার ফাহাদের বাবা ও ভাই
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) তড়িৎ প্রকৌশল বিভাগের মেধাবী শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে হত্যায় জড়িত ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানিয়েছেন আবরার ফাহাদের বাবা মো. বরকত উল্লাহ ও ভাই আবরার ফাইয়াজ।
সোমবার (৭ অক্টোবর) বিকেলে শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে শহীদ আবরার ফাহাদের ৫ম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে ছাত্রজনতার সংহতি সমাবেশে তারা এমন দাবি জানান।
এসময় শিক্ষার্থীরা- ‘আজকের এই দিনে, আবরার তোমায় মনে পড়ে’; ‘তুমি কে আমি কে, আবরার আবরার’; ‘বিচার বিচার বিচার চাই, আবরার হত্যার বিচার চাই’; ‘আবরারের রক্ত, বৃথা যেতে দেবো না’; ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।
আরও পড়ুন
আবরার ফাহাদের বাবা বলেন, আমার ছেলেকে আজকের এই দিনে দীর্ঘ ৫ ঘণ্টা অত্যাচারের পর হত্যা করা হয়েছিল। আমার ছেলে অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলেছিল বলেই তাকে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা হত্যা করে। আমি চাই যারা আমার ছেলের হত্যায় জড়িত ছিল তাদের সর্বোচ্চ বিচার নিশ্চিত করা। তাদের শাস্তি যেন কমানো না হয়। প্রশাসনের কাছে দাবি জানাব ভবিষ্যতে যেন আমার ছেলের মতো কাউকে জীবন দিতে না হয়, সেজন্য প্রশাসনের সতর্ক থাকা উচিত।
আবরার ফাহাদের ছোট ভাই আবরার ফাইয়াজ বলেন, আজ থেকে এক বছর আগে যদি আমরা এই সংহতি সমাবেশ করতে চাইতাম তাহলে আমাদের ভয়ে থাকতে হতো এই ভেবে যে, ছাত্রলীগ আমাদের উপর হামলা করতো বা পুলিশ এসে আমাদের গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাবে। জুলাই বিপ্লব না হলে আজকে আমরা স্বাধীন দেশ পেতাম না এবং আজকের এই সংহতি সমাবেশ করতে পারতাম না। শুধু আবরার ফাহাদ না, বিভিন্ন জায়গায় শিবির ট্যাগ দিয়ে অনেক শিক্ষার্থীর উপর নির্মম নির্যাতন করেছে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা। আমাদেরকে পুনরায় একই খেলা চালু করা সুযোগ দেওয়া যাবে না।
তিনি বলেন, আমি এই শাহবাগ জাদুঘরে ভাইয়ার সঙ্গে প্রথম এসেছিলাম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম ঘুরেছিলাম ভাইয়ার সঙ্গেই। আজ ভাইয়া নেই কিন্তু আমাদেরকে তার হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে শাহবাগে দাঁড়াতে হচ্ছে। আমি আমার ভাইয়ের হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ বিচারের দাবি জানাই।
ছাত্র সংগঠক আজিজুর রহমান আজাদ বলেন, শহীদ আবরার, আবু সাঈদ, মুগ্ধরা দেশকে মুক্ত করতে নিজের বুকের তাজা রক্ত বিলিয়ে দিয়েছে। তারা অন্যায়ের সাথে আপস করেননি। আজ জুলাই বিপ্লবে শহীদদের রক্তের বিনিময়ে আমরা স্বাধীন হয়েছি। তাই এই বিপ্লবে আহত ও শহীদদের পরিবারকে আর্থিক ক্ষতিপূরণ, ফ্যাসিবাদের বিচার, ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা, ক্যাম্পাসগুলোতে ছাত্র রাজনীতির যৌক্তিক সংস্কার, ছাত্র সংসদ নিশ্চিত করতে হবে।
সংহতি সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ, জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী, ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সভাপতি আবু সাদিক কায়েম, একতার বাংলাদেশের মুখপাত্র ও সমন্বয়ক তাহমিদ আল মুদাসসির চৌধুরী, বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের আব্দুল ওয়াহেদ, এবি পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
কেএইচ/জেডএস