আদালতের রায় পেলেও মেয়রের চেয়ারে বসতে পারবেন না শাহাদাত
নির্বাচনের প্রায় সাড়ে তিন বছর পর চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে বিএনপির প্রার্থী শাহাদাত হোসেনের পক্ষে রায় দিয়েছে নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল। ট্রাইব্যুনালের রায়ে শাহাদাত হোসেন চট্টগ্রাম সিটির মেয়র হলেও এখনই চেয়ারে বসতে পারবেন না তিনি। কারণ, নির্বাচন কমিশন (ইসি) না থাকায় গেজেট নিয়ে আইনি জটিলতা রয়েছে বলে জানিয়েছেন ইসি কর্মকর্তারা।
নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার কর্মকর্তারা বলছেন, নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার জন্য ৩০ দিন সময় আছে। আপিলের সময় পর্যন্ত ইসি গেজেট প্রকাশ করতে পারবে না। কেননা, আপিলের সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। এই সময়ের মধ্যে বিবাদী পক্ষ বা সংক্ষুব্ধ কোনো পক্ষ যদি আপিল করে তাহলে আপিল নিষ্পত্তির আগ পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে না
আবার কোনো ভোটের গেজেট প্রকাশ করতে হলে ফুল কমিশনের অনুমোদনের প্রয়োজন হয়। বিগত কমিশন পদত্যাগ করায় সে ধরনের কোনো অনুমোদন নেওয়ারও এখন সুযোগ নেই। তাই নতুন কমিশন নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত কেউ আপিল না করলেও গেজেট প্রকাশ করা যাবে না।
আরও পড়ুন
এ প্রসঙ্গে ইসির আইন শাখার যুগ্ম সচিব ফারুক আহমেদ বলেন, এখন তো কমিশন নেই। কাজেই এখন কোনো সিদ্ধান্ত নিতে হলে পর্যালোচনা করে নিতে হবে। আবার কমিশন না থাকলেও যে সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে না, তা নয়। আদালত যদি আমাদের কাছে মতামত চায়, সেক্ষেত্রে আমরা বলব যে গেজেট প্রকাশ করতে হলে কমিশনের অনুমোদন লাগে। এ ছাড়া, যেহেতু রায় হয়েছে না চাইলেও আমরা মতামত দিতে পারি। উপদেষ্টা পরিষদের কাছেও করণীয় জানতে চাইতে পারি।
তিনি বলেন, আদালতের আদেশ যতটুকু বাস্তবায়নযোগ্য ততটুকু বাস্তবায়ন করব। যেটা বাস্তবায়নযোগ্য নয় সেটা বাস্তবায়ন হবে না। পরিস্থিতি অনুযায়ী আমাদের কাছে রায়ের কপি আসলে আমরা দেখব। কমিশন নেই। এখন কমিশন হওয়ার আগ পর্যন্ত হয়ত আমরা উপদেষ্টা পরিষদে যেতে পারি। আর তারা তো আইন পরিবর্তন করতে পারবে না। সংসদে পাশ করা আইনে যে বিধান আছে, সেটা তারা পরিবর্তন করতে পারবে না। যেহেতু স্থানীয় সরকারের প্রতিষ্ঠানগুলো সরকার ভেঙে দিয়েছে এবং সেখানে প্রশাসক নিয়োগ দিয়েছে; এতে মনে হচ্ছে বিষয়টি ইনফ্রাকচুয়াস (অকেজো)। বেশ একটা কাজে আসবে বলে মনে হয় না। কারণ, কমিশন থাকা অবস্থায়ও যদি এই আদেশ হতো, তাহলে কী হতো? ওই বাতিলের খাতায়ই তো পড়ে যেত। এখন ওই পরিষদগুলোই তো বাতিল।
তিনি আরও বলেন, সরকারের আদেশে যেহেতু মেয়ররা অপসারিত হয়েছে তাই এই বিষয়টা অনেকটা ইনফ্রাকচুয়াস। বড় কথা হলো, গেজেট করতে হলে কমিশন লাগে, এখন তো কমিশন নেই। কমিশনের অনুমোদনের পরিবর্তে বিকল্প কী আছে, সেটা আমাদের পর্যালোচনা করে দেখতে হবে।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নির্বাচনের ফলাফল বাতিল করে ডা. শাহাদাত হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করেন নির্বাচনী ট্রাইবুনাল। একই সঙ্গে আগামী ১০ দিনের মধ্যে নির্বাচন কমিশন সচিবকে গেজেট প্রকাশ করার জন্য নির্দেশ দেন।
এসআর/এমজে