শেরপুরে বসবাস করে ৪৪ শতাংশ গারো জনগোষ্ঠী : বিবিএস
শেরপুরে ৪৪.০২ শতাংশ গারো সম্প্রদায়ের জনগোষ্ঠী বসবাস করে। এ জেলায় মোট ২০ হাজার ৮৪০ জন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মানুষ বাস করে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)।
সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পরিসংখ্যান ভবনের সম্মেলন কক্ষে ‘কি ফাইন্ডিং প্রকাশনা’ অনুষ্ঠিত হয়।
এতে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মফিদুর রহমান এবং শেরপুর জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) হাফিজা জেসমিন।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) মহাপরিচালক মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জরিপের প্রকল্প পরিচালক ফারহানা সুলতানা।
বিবিএস জানায়, শেরপুর জেলায় ২০ হাজার ৮৪০ জন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মানুষ বসবাস করছেন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বসবাস করেন গারো ৪৪ দশমিক ০২ শতাংশ, দ্বিতীয় অবস্থানে বর্মা জনগোষ্ঠীর ২৭ দশমিক ৬৯ শতাংশ, তৃতীয় অবস্থানে কোচ ১০ দশমিক ২৪ শতাংশ।
এছাড়া হোডি ৯ দশমিক ১৯ শতাংশ, হাজং ৫ দশমিক ৪০ শতাংশ, ডালু ৩ দশমিক ২৫ শতাংশ এবং অন্যান্য ০ দশমিক ৩৩ শতাংশ।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) শেরপুর জেলার ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের আর্থ-সামাজিক অবস্থা জরিপ-২০২৩ এর প্রতিবেদনে এসব তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।
প্রকল্প পরিচালক ফারহানা সুলতানা বলেন, নারী পুরুষের সমতার ক্ষেত্রে প্রতি ১০৪ পুরুষের বিপরীতে নারী রয়েছে ১০০ জন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি পার্থক্য কোচদের মধ্যে আর কম ডালু জনগোষ্ঠীর মধ্যে। এছাড়া ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জনগোষ্ঠীর মধ্যে ৩৫ দশমিক ৭৭ শতাংশ স্কুলের বাইরে রয়েছে। গ্র্যাজুয়েট রয়েছে মাত্র ৩ দশমিক ২৪ শতাংশ।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জনগণের মধ্যে সাপ্লাইয়ের পানি পান করেন মাত্র ১ দশমিক ৮৯ শতাংশ। টিউবওয়েলের পানি পান করেন ৮৮ দশমিক ৪৯ শতাংশ। পাশাপাশি পুকুরসহ যেসব এলাকার পানি পান করা নিরাপদ নয় সেসব উৎস থেকে পানি পান করেন ২ দশমিক ৬৭ শতাংশ মানুষ।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, শেরপুরের ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠীর মধ্যে শিক্ষার হার ৬৪ দশমিক ০৮ শতাংশ। এছাড়া কর্মসংস্থানের হার ৫১ দশমিক ৮৪ শতাংশ। এর মধ্যে গ্রামে ৫১ দশমিক ৬৩ শতাংশ এবং শহরে ৫৩ দশমিক ৩৪ শতাংশ। পাশাপাশি বেকারের হারের ক্ষেত্রে শেরপুরে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মধ্যে ৩ দশমিক ৮০ শতাংশ। আয়ের উৎসের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি কাজ করে কৃষিতে ৬৫ দশমিক ০২ শতাংশ, সেবা খাতে ২১ দশমিক ৩৮ শতাংশ এবং রেমিটেন্স আয় করে ১ দশমিক ৪২ শতাংশ। জেলা ভিত্তিক ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মধ্যে প্রতিবন্ধীর হার ১ দশমিক ৮৪ শতাংশ। সবচেয়ে বেশি ডালু জনগোষ্ঠীর মধ্যে, ২ দশমিক ৩৮ শতাংশ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাহবুব হোসেন বলেন, এটি পাইলট প্রকল্পের আওতায় শেরপুর জেলা প্রশাসকের অনুরোধে করা হয়েছে। আগামীতে সারাদেশব্যাপী ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মানুষের মধ্যে একটি জরিপ পরিচালনা করা যায় কিনা সেটি ভেবে দেখা হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মফিদুর রহমান বলেন, আমরা সারাদেশব্যাপী একটি সংস্কৃতি জরিপ পরিচালনার উদ্যোগ নিয়েছি। ইতোমধ্যেই প্রস্তুতিও চলছে। আশা করছি ওই জরিপ হলে অনেক বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতির চিত্র উঠে আসবে।
সভাপতির বক্তব্যে মিজানুর রহমান বলেন, আজ কি ফাইন্ডিং প্রকাশ করা হয়েছে। সুতরাং এখানে পুঙ্খানুপুঙ্খ অনেক কিছুই থাকবে না। এর পর মূল প্রতিবেদনে সব কিছুই উঠে আসবে।
এসআর/এসএম