৬ বিভাগে নদীর পানি বাড়বে, প্লাবিত হতে পারে তিস্তার নিম্নাঞ্চল
দেশে চলমান ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে ছয় বিভাগে নদ-নদীর পানি বাড়তে পারে। পাশাপাশি, একই কারণে আগামী তিন দিনে তিস্তা অববাহিকার নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার আভাস দিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।
বুধবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান এ আভাস দেন।
তিনি বলেন, পানি বাড়বে, এর মধ্যে রংপুরে পানি বেশি বাড়বে; যদিও বন্যা হওয়ার চান্স কম। তবে, আগামী তিন দিন তিস্তা অববাহিকায় কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুরের নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে।
এদিকে, আবহাওয়ার নিয়মিত বুলেটিনে বলা হয়েছে, আগামী তিন দিন রংপুর বিভাগ ও এর সংলগ্ন উজানে অতি ভারি বৃষ্টিতে তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার নদীর পানি দ্রুত বাড়তে পারে।
বর্তমানে রংপুরে ব্রহ্মপুত্র ও তার ভাটিতে যমুনা নদীর পানি কমছে এবং বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী দুই দিন এসব নদীর পানি স্থিতিশীল থাকতে পারে এবং পরবর্তী তিন দিন পানি বাড়তে পারে।
এছাড়া, নীলফামারী, রংপুর, লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রামে তিস্তা নদীর পানি সতর্ক সীমায় প্রবাহিত হতে পারে। আর কুড়িগ্রামের ধরলা ও দুধকুমার নদীর পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে।
বুলেটিনে বলা হয়, চট্টগ্রাম বিভাগের গোমতী, মুহুরী, হালদা ও ফেনী নদীর পানি বাড়ছে। তবে, সাঙ্গু ও মাতামুহুরী নদীর পানি কমছে এবং বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
আগামী ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রাম বিভাগ ও এর সংলগ্ন উজানে ভারি বৃষ্টির প্রবণতা রয়েছে। এতে করে গোমতী, হালদা, ফেনী ও মুহুরী নদীর পানি এ সময়ে বাড়তে পারে। তবে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে।
অন্যদিকে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় মাতামুহুরী ও সাঙ্গু নদীর পানি কমতে পারে। পরবর্তী দুই দিন ভারি বৃষ্টির প্রবণতা কমার সম্ভাবনা রয়েছে। এতে করে চট্টগ্রাম বিভাগের নদীর পানি কমতে পারে।
পূর্বাভাস কেন্দ্রের বুলেটিনে বলা হয়, সিলেট বিভাগের সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর পানি কমছে এবং বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে, আগামী ২ দিন সিলেট বিভাগ ও এর সংলগ্ন উজানে ভারি বৃষ্টির প্রবণতা রয়েছে। এ সময়ে সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর পানি ধীর গতিতে বাড়তে পারে। তবে, বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে।
পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর পানি কমতে পারে। খোয়াই ও ধলাই নদীর পানি বাড়ছে, অন্যদিকে মনু, যাদুকাটা, সারিগোয়াইন, সোমেশ্বরী ও ভুগাই-কংশ নদীর পানি স্থিতিশীল রয়েছে এবং বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী দুই দিন সিলেট বিভাগের এসব নদীর পানি বাড়তে পারে। তবে, বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে। পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় সিলেট বিভাগের এসব নদীর পানি কমতে পারে।
বুলেটিনে বলা হয়, বরিশাল ও খুলনা বিভাগের উপকূলীয় বা জোয়ারভাটা প্রবণ নদীর স্বাভাবিক জোয়ার দেখা যাচ্ছে। তবে, পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও এর সংলগ্ন এলাকায় একটি লঘুচাপ তৈরি হয়েছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় উপকূলীয় অঞ্চলে ভারি বৃষ্টির প্রবণতা রয়েছে। এ সময়ে বরিশাল ও খুলনা বিভাগের উপকূলীয় নদীতে স্বাভাবিক জোয়ারের থেকে কিছু বেশি উচ্চতার জোয়ার হতে পারে।
রাজশাহী বিভাগের গঙ্গা নদী ও তার ভাটিতে পদ্মা নদীর পানি বাড়ছে এবং বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানি স্থিতিশীল থাকতে পারে এবং তার পরবর্তী চার দিনে পানি ধীর গতিতে কমতে পারে।
বন্যার বুলেটিনে বলা হয়েছে, রাজশাহী বিভাগের গঙ্গা নদী ও তার ভাটিতে পদ্মা নদীর পানি বাড়ছে এবং বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানি স্থিতিশীল থাকতে পারে এবং তার পরবর্তী চার দিনে ধীর গতিতে পানি কমতে পারে।
তবে, দেশের সব প্রধান নদীর পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলা হয় বুলেটিনে।
কেএ