চতুর্থ বছরে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১, বাৎসরিক আয় ১৫০ কোটি টাকা
চতুর্থ বছরে পা দিল বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১। প্রতিবছর স্যাটেলাইটটি থেকে আয় হচ্ছে প্রায় দেড়শ কোটি টাকা। ভবিষ্যতে এই আয়ের পরিমাণ আরও বাড়বে। এছাড়া সেবার পরিধিও বাড়বে কয়েকগুণ।
বুধবার (১২ মে) বুধবার ঢাকা পোস্টের সঙ্গে আলাপকালে বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেডের (বিএসসিএল) চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদ এসব তথ্য জানান। তিনি জানান, বর্তমানে স্যাটেলাইট-১ পরিচালনার খরচ সরকারের বহন করতে হচ্ছে না, বরং মুনাফা অর্জন হচ্ছে।
গত ২০১৮ সালের ১২ মে (যুক্তরাষ্ট্র সময় ১১মে) ফ্লোরিডার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে স্পেস এক্স এর সর্বাধুনিক ফ্যালকন-৯ রকেটে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ মহাকাশে উৎক্ষেপণের মাধ্যমে মহাকাশ জয়ের ইতিহাসে নাম লেখায় বাংলাদেশ।
মূলত বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ ব্যবহার করে দেশের বেসরকারি সব টেলিভিশনের সম্প্রচার পরিচালনা হচ্ছে। এছাড়া ডিটিএইচ ও রেডিও সম্প্রচার, দুর্গম অঞ্চল ও দূরবর্তী দ্বীপাঞ্চলে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ এর মাধ্যমে নিরবচ্ছিন্ন টেলিযোগাযোগ সেবা দেওয়ার কার্যক্রমও চলমান রয়েছে।
বিএসসিএল সূত্র জানায়, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের মাধ্যমে বিশ্বের ৫৭তম দেশ হিসেবে স্যাটেলাইটের অভিজাত ক্লাবে নাম লেখায় বাংলাদেশ। দুই হাজার ৯০২ কোটি টাকা ব্যয়ে নিজস্ব স্যাটেলাইটের মালিক হয় বাংলাদেশ।
আলাপকালে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমাদের পুরো বাঙালির জন্য বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ কেবল মাত্র একটা স্থাপনা অথবা একটা ইভেন্ট না। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট আমাদের জন্যে একটা গৌরবের বিষয়। এটি আমাদের জাতীয় গর্ব।
তিনি বলেন, আমাদের সৌভাগ্যের বিষয় যে আমরা যেদিন থেকে স্যাটেলাইট পরিচালনা করা শুরু করেছি সেদিন থেকে এখন পর্যন্ত সম্পূর্ণ কোনো ত্রুটির সম্মুখীন হইনি। আরও গৌরবের বিষয় হলো- এই স্যাটেলাইট পরিচালনা করছে আমাদের ছেলে-মেয়েরা। আমরা তাদের প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ করে তুলেছি।
মোস্তাফা জব্বার বলেন, প্রথম স্যাটেলাইট সফলতার সঙ্গে পরিচালনা করার ফলে আমাদের আত্মবিশ্বাস এতো বেশি বেড়েছে যে আমরা বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২ এর কাজ অনেক এগিয়ে নিয়েছি। ইতিমধ্যে আমরা ৩১টি দ্বীপে স্যাটেলাইটের মাধ্যমে কানেক্টিভিটি দিয়েছি। আরও কাজ চলমান রয়েছে।
বিএসসিএল চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ আমাদের ১৬ কোটি মানুষের ভালোবাসার প্রকল্প। এর সঙ্গে আমাদের অনেক গর্ব, স্বপ্ন জড়িত রয়েছে। ১৯৭৫ সালে এ পথ শুরু করেছিলেন বঙ্গবন্ধু। আমাদের প্রথম উদ্দেশ্যে ছিল স্যাটেলাইট দিয়ে টেলিভিশন স্টেশনগুলোকে সেবা দেব। এটা এখন শতভাগ করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, আগামী ২০২৩ সালের মধ্যে দেশের দ্বিতীয় স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ ও ব্যবহার শুরুর পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে বিএসসিএল। ইতিমধ্যে দ্বিতীয় স্যাটেলাইটটির ধরণ নির্ধারণে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে ফ্রান্সের প্রাইস ওয়াটার হাউস কুপার্সকে (পিডব্লিউসি) নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
তিনি জানান, ইতিমধ্যে প্রতিষ্ঠানটি আমাদের খসড়া প্রতিবেদন দিয়েছে। হয়তো মাস খানেকের মধ্যে আমাদের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়ে যাবে যে আমরা কোন ধরনের স্যাটেলাইট কিনবো।
উৎক্ষেপণের দেড় বছরের মাথায় আয়ের খাতায় নাম লেখায় বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট–১। গত ২০১৯ সালের ১ অক্টোবর বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের মাধ্যমে টেলিভিশনগুলোতে সম্প্রচার শুরু হয়।
একে/এমএইচএস