নেচে-গেয়ে উল্লাস করতে করতে যুবককে পিটিয়ে হত্যা
চট্টগ্রাম নগরের পাঁচলাইশ থানা এলাকায় নেচে, গেয়ে ও উল্লাস করতে করতে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। যদিও ঘটনাটি গত মাসের বলে জানা গেছে।
ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, এক দল যুবক ‘মধু হই হই আঁরে বিষ খাওয়াইলা’ গানটির সঙ্গে নেচে নেচে উল্লাস করছেন। আর দুই হাত খুঁটিতে বেঁধে এক যুবককে পেটাচ্ছেন। মার খেয়ে ভুক্তভোগী যুবকের মাথা ঢলে পড়ে এবং একপর্যায়ে তিনি নিস্তেজ হয়ে পড়েন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভুক্তভোগী যুবকের নাম শাহাদাত হোসেন (২৪)। তিনি নোয়াখালীর সোনাইমুড়ি থানার পাঁচবাড়িয়া ইউনিয়নের নদনা গ্রামের মিয়া জান ভুঁইয়া বাড়ির মৃত মোহাম্মদ হারুনের ছেলে। তবে পরিবার নিয়ে শাহাদাত নগরের কোতোয়ালি থানার বিআরটিসি এলাকার বয়লার কলোনিতে থাকতেন।
গত ১৪ আগস্ট নগরের প্রবর্তক মোড়ের পাশের একটি বেসরকারি একটি হাসপাতালের সামনে থেকে পুলিশ শাহাদাতের মরদেহটি উদ্ধার করে। এ ঘটনায় ১৫ আগস্ট ভুক্তভোগী শাহাদাতের চাচা মোহাম্মদ হারুন বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামিদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
আরও পড়ুন
মামলার এজাহার উল্লেখ করা হয়, গত ১৩ আগস্ট দুপুর দুইটার দিকে কাজের উদ্দেশে বাসা থেকে বের হন শাহাদাত। সারাদিন পর তার স্ত্রী শারমিন সন্ধ্যার দিকে ফোন করলে তিনি জানান, কিছুক্ষণের মধ্যেই বাসায় যাবেন। রাত অনেক হলেও শাহাদাত বাসায় না ফেরায় আবার তাকে ফোন করেন শারমিন। কিন্তু মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। এর পরদিন সকাল ৯টার দিকে শাহাদাতের চাচা ফেসবুকে দেখেন, নগরের প্রবর্তক মোড়ের অদূরে বদনাশাহ মিয়া (রহ.) মাজারের বিপরীতে সড়কের পাশে তার ভাতিজার মরদেহ পড়ে আছে।
পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সোলাইমান রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) রাতে বলেন, খুঁটির সঙ্গে বেঁধে যুবককে পিটিয়ে হত্যার ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর শাহাদাতের স্ত্রী সেটি দেখে নিশ্চিত করেন, মারধরের শিকার ব্যক্তিটিই তার স্বামী। যারা হত্যার সঙ্গে জড়িত তাদের দ্রুত শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে। এ ঘটনা খুবই কষ্টকর। আমরা খুব দ্রুত আসামিদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করব। আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করছি।
এদিকে, ভিডিও ভাইরালের পর এ ঘটনার প্রতিবাদ করতে দেখা গেছে সাধারণ মানুষকে। রুসিয়া বেগম নামে একজন ফেসবুকে লেখেন, কেউ ভাত খাওয়ানোর পর মানুষ মেরে ফেলেছে, কেউ গান গাইতে গাইতে মেরে ফেলেছে! কী হচ্ছে দেশে! সবার মন থেকে কি মানবিক মূল্যবোধ মুছে গেছে? মানুষ তো নয় যেন এক একটা খেলনা। এখন ভয় কখন কার লাশ পড়ে, এই বুঝি কোনো দুঃসংবাদ এলো। অচিরেই খুনিদের আইনের আওতায় আনা হোক। ভুক্তভোগীরা ন্যায়বিচার পাক। সমাজে শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা হোক।
এমআর/এসএসএইচ