মানুষটার শরীর দেখে বুয়েটের আবরারের কথা বারবার মনে পড়েছে : সারজিস
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ফজলুল হক মুসলিম হলে চোর সন্দেহে গণপিটুনির শিকার হয়ে তোফাজ্জল নামে এক ভারসাম্যহীন যুবকের মৃত্যু হয়েছে। এ বিষয়ে মন্তব্য করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম।
তিনি বলেছেন, মানুষটার শরীর দেখে বুয়েটের আবরারের কথা বারবার মনে পড়েছে। সব অন্যায়কারীর বিচার হোক। নির্দোষ কেউ শাস্তি না পাক।
বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজের ভেরিফাইড আইডিতে এক পোস্টে তিনি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন
সারজিসের পোস্টটি ঢাকা পোস্ট পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো—
মানসিক ভারসাম্যহীন হোক, চোর হোক অথবা দাগি আসামি, কাউকে এভাবে পিটিয়ে মেরে ফেলার অধিকার বা সাহস কোনো একজন ব্যক্তি কীভাবে পায়?
মব জাস্টিসের নামে নরপশুর ন্যায় নির্মমতা কখনোই সমর্থনযোগ্য নয়। আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার ক্ষেত্রে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির এক্সামপল সেট হওয়া প্রয়োজন।
কে কোথায় পড়ে, কী করে সেটা মুখ্য নয়। অন্যায় সবসময় অন্যায়। একটা জলজ্যান্ত মানুষকে পিটিয়ে মেরে ফেলতে যাদের বুক একবারের জন্যও কাঁপে না তাদের মধ্যে মনুষ্যত্ব থাকতে পারে না।
মানুষটার শরীরটা দেখে বুয়েটের আবরারের কথা বারবার মনে পড়েছে। সকল অন্যায়কারীর বিচার হোক। নির্দোষ কেউ শাস্তি না পাক।
একবার যদি অন্যায়কারীরা কোনো সূত্র ধরে ছাড় পেয়ে যায় তবে তা পরবর্তী অসংখ্য অন্যায়ের প্রশ্রয় হিসেবে দৃষ্টান্ত তৈরি করে। নতুন বাংলাদেশে সেই সুযোগ যেন কেউ না পায়।
এদিকে এ হত্যার ঘটনায় শাহবাগ থানায় মামলার আবেদন করে এজাহার দায়ের করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। পরে আবেদনটি মামলা হিসেবে গ্রহণ করা হয়।
নিহত ব্যক্তির নাম তোফাজ্জল। তার বাড়ি বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলার কাঁঠালতলি ইউনিয়নে। তার বাবা-মা কেউ বেঁচে নেই। তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থায় ছিলেন।
একটি ভিডিওতে দেখা যায়, ফজলুল হক হল শাখা ছাত্রলীগের সাবেক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপসম্পাদক জালাল আহমেদসহ হলের ৮-১০ জন শিক্ষার্থী তোফাজ্জলকে মারধর করছেন।
শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ খালেদ মনসুর ঢাকা পোস্টকে বলেন, হত্যার ঘটনায় এজাহার গ্রহণ করে মামলা রুজু করা হয়েছে। তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) আমিনুল ইসলামকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। শিগগিরই জড়িতদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।
এমজে