আহত শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় কাজ করবে ইউজিসি-ইউনেস্কো
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নির্যাতনের শিকার এবং আন্দোলন পরবর্তী সময়ে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের সামাজিক ও মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষায় যৌথভাবে কাজ করবে ইউজিসি ও ইউনেস্কো। এ বিষয়ে ‘সামাজিক ও মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা’ প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিচ্ছে প্রতিষ্ঠান দু’টি। প্রকল্প বাস্তবায়নে শিগগিরই একটি ফেমওয়ার্ক প্রণয়ন এবং চুক্তি স্বাক্ষরের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।
বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এস এম এ ফায়েজ এর সঙ্গে ইউনেস্কো বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের সৌজন্য সাক্ষাতে এ প্রস্তাব গৃহীত হয়।
বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) ইউজিসিতে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় ইউজিসি সদস্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খান, প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, ইউজিসি সচিব ড. মো. ফখরুল ইসলামসহ ইউজিসি ও ইউনেস্কোর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা অংশগ্রহণ করেন। সভায় চার-সদস্যের ইউনেস্কো বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন ড. সুজান ভাইজ।
সভায় ড. সুজান ভাইজ বলেন, সাম্প্রতিক শিক্ষার্থী আন্দোলনের কারণে বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা তীব্র মানসিক চাপের মধ্যে রয়েছে। এখনো অনেক প্রতিষ্ঠানে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব হয়নি। মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য তাদের এই মুহূর্তে অনেক বেশি সহায়তা প্রয়োজন।
তিনি আরও বলেন, ইউনেস্কোর এই প্রকল্পের মাধ্যমে শিক্ষার্থী ও অন্যান্য অংশীজনের সামাজিক ও মনোদৈহিক স্বাস্থ্যের উন্নয়নে সক্ষমতা বৃদ্ধির উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। এছাড়া, বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক ও মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা সংক্রান্ত সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের সাথে শিক্ষার্থীদের সেতুবন্ধন তৈরি করা হবে বলে তিনি জানান।
আরও পড়ুন
এছাড়া, উদ্বেগ নিরসন, সমস্যা সমাধানের উপায় বের করা, বিশ্লেষণ দক্ষতা ও সফট স্কিলস বৃদ্ধির উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
ইউজিসি চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এস এম এ ফায়েজ বলেন, দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে এটি একটি চমৎকার প্রস্তাব। সময়োপযোগী এ প্রকল্প বাস্তবায়নে ইউজিসি পূর্ণ সহযোগিতা প্রদান করবে। এই প্রকল্প দেশের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ইতিবাচক ফল নিয়ে আসবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
প্রফেসর ড. মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খান বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সরকারের দমন-পীড়নে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। শিক্ষার্থীদের কল্যাণে ইউনেস্কোর প্রস্তাব বাস্তবায়নে এই উদ্যোগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
প্রফেসর ড. আনোয়ার হোসেন বলেন, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে বহু শিক্ষার্থী আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে নিহত হয়েছে। আবার অনেক শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। তাদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ফিরিয়ে আনার জন্য এটি সহায়ক হবে বলে তিনি প্রত্যাশা করেন।
প্রস্তাবিত এ পাইলট প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০ হাজার শিক্ষার্থীকে সামাজিক ও মানসিক স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রকল্পের চাহিদা নিরূপণের মাধ্যমে পরবর্তীতে ১৭৫টি বিশ্ববিদ্যালয়ে এটি সম্প্রসারণ করা হবে।
এনএম/এমএসএ