ধানমন্ডি ৩২ : কালো পোশাক দেখলেই তল্লাশি, পড়তে হচ্ছে জেরার মুখে
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৯তম শাহাদাত বার্ষিকী আজ। শাহাদাত বার্ষিকী ঘিরে ছাত্র-জনতা ও আওয়ামী লীগের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিতে ধানমন্ডি-৩২ ও আশেপাশের এলাকা দখলে নিয়েছে আন্দোলনকারীরা। আওয়ামী লীগ সন্দেহে করা হচ্ছে তল্লাশি, মোবাইল চেক করে খোঁজা হচ্ছে আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্টতা। কালো পোশাক দেখলেই দলবলে দৌড়ানি দিয়ে মারধর করা হচ্ছে। আবার কেউ মোবাইলে ভিডিও করলে তাকেও জেরার মুখে পড়তে দেখা গেছে।
বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) সকাল ৭টা থেকে ১২টা পর্যন্ত উপস্থিত থেকে এ চিত্র দেখা যায়। এ সময় ৩২ নম্বর বঙ্গবন্ধুর বাড়ির সামনের রাস্তা তারকাটা দিয়ে আটকানো ছিল, ঢুকতে দেওয়া হয়নি কাউকে। মেট্রো শপিং মল গলির মুখে সেনাবাহিনী, বিজিবি ও পুলিশ সদস্যদের অবস্থান নিয়ে থাকতে দেখা যায়।
আরও পড়ুন
সরেজমিনে দেখা যায়, রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কে এখন সুনসান নীরবতা। সকাল থেকে ওই এলাকার আশপাশে অবস্থান নিয়েছে ছাত্র-জনতা। মূল সড়ক থেকে ৩২ নম্বর বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর পর্যন্ত সড়ক এখন ফাঁকা। নেই জনমানব। পুরো এলাকা রয়েছে কাঁটাতারে ঘেরা। শ্রদ্ধা নিবেদনের কর্মসূচি ঘিরে ধানমন্ডি ৩২ সামনে ও লেক পড়ের আশেপাশের এলাকাজুড়ে কয়েক হাজার বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতা অবস্থান নিয়ে আছেন। এসময় কালো পোশাকে বা কেউ ভিডিও/ছবি তুলতে গেলে উত্তেজিত জনতার রোষানলে পড়তে দেখা যায়। ছাত্ররা তল্লাশি করে, মোবাইল চেক করে দেখছে, আওয়ামী লীগের সংশ্লিষ্টতা পেলেই পড়তে হচ্ছে মারধরে মুখে। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে সোপর্দ করছেন ছাত্ররা।
এদিকে আটকে রাখাদের পুলিশ ও আর্মিদের হাতে তুলে দেওয়ার ঘোষণা দেয়া হচ্ছে মাইক দিয়ে। আক্রমণকারীদের যেন মাথায় আঘাত না করা হয় সে জন্য বার বার মাইক দিয়ে ঘোষণা দিতেও দেখা যায়। তবে আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্ট প্রমাণ পাওয়া গেলে উত্তেজিত জনতার রোষানল থেকে বাঁচতে পারছেন না কেউ। মারধরের বিষয়ে মাইকে নির্দেশনা দিয়ে বলা হচ্ছে, ‘পুরো শরীরে মারেন, মাথায় মাইরেন না।’
প্রেসিডেন্ট ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী ও সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক পরিচয় দেওয়া রিয়াজ বলেন, ‘ছাত্র-জনতা যখন এখানে শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান নেওয়া শুরু করছে, তখন তাদের আওয়ামী লীগ ও তাদের দোসর, দালালরা নিজেরা আসতে না পেরে নারীদের ব্যবহার শুরু করছে। তারা একজন একজন নারী পাঠাচ্ছিল, যাদের ব্যাগে ফুল ছিল, ব্যাগের মধ্যে বিভিন্ন নেতার নম্বর ছিল। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে নারীদের চলে যেতে বলেছি। তারা আমাদের কথা মেনে চলে গেছে।’
শিক্ষার্থীরা বলছেন, ‘আমরা সকাল থেকে এখানে আছি। কেউ যদি আমাদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা কেড়ে নিতে চায় আমরা রুখে দেব।’
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। এরপর আওয়ামী লীগের অধিকাংশ নেতা আত্মগোপনে চলে যান। এরই মধ্যে বেশ কয়েকজন সাবেক মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
এমএসআই/এসকেডি