ইন্টারনেটের মূল্য-কলরেট কমানোর দাবি
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে ইন্টারনেটের মূল্য ও কলরেট কমানোসহ পাঁচ দাবি জানিয়েছে টেলি কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (টিক্যাব)।
রোববার (১১ আগস্ট) সংগঠনের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ দাবি জানানো হয়।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম নতুন দায়িত্ব গ্রহণ করায় তাকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পাশাপাশি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে পূর্বের আওয়ামী লীগ সরকার দ্বারা গ্রাহকদের ওপর অন্যায়ভাবে চাপিয়ে দেওয়া ৩০ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর (মূসক) কমিয়ে এনে গ্রাহকদের স্বস্তি দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।
টিক্যাবের আহ্বায়ক মুর্শিদুল হক বলেন, আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন গত মহাজোট সরকার গণমানুষের দাবি উপেক্ষা করে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে ভোক্তা পর্যায়ে আরও ৫ শতাংশ কর আরোপ করে ৩০ শতাংশ নির্ধারণ করে। এতে করে বর্তমানে ১০০ টাকার মুঠোফোন সেবা ব্যবহারে গ্রাহকদের ৩৯ টাকা কর দিতে হচ্ছে, যা দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সর্বোচ্চ। অথচ মোবাইল ইন্টারনেটের গতি ও সেবার দিক দিয়ে আমাদের অবস্থান দক্ষিণ এশিয়ায় সর্বনিম্ন।
তিনি বলেন, মুঠোফোন বা মোবাইল ফোন এখন আমাদের অপরিহার্য অনুষঙ্গ। মোবাইল ফোনে ইন্টারনেট ব্রাউজিং ও কথা না বলে থাকার বিষয়টি কল্পনাতীত। যোগাযোগ, ব্যবসা-বাণিজ্য, শিক্ষা, চিকিৎসা থেকে ব্যক্তিগত পর্যায় সবখানেই মুঠোফোনের ব্যবহার প্রতিনিয়ত বাড়ছে। কিন্তু বিগত সরকারের সময়ে কোনো কারণ ছাড়াই মোবাইল ফোন অপারেটরগুলো পাল্লা দিয়ে ইন্টারনেট ও টকটাইম প্যাকেজের দাম বৃদ্ধির কারণে নাভিশ্বাস উঠেছে।
নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য বৃদ্ধির কারণে জনসাধারণ যেমন চিন্তিত, মুঠোফোন সেবা ব্যবহারের ব্যয় বৃদ্ধিতেও তারা একইভাবে চিন্তিত। ভুলে গেলে চলবে না দেশে সচল প্রায় ১৮ কোটি সিমের সিংহভাগ গ্রাহকই কিন্তু নিম্নবিত্ত। জীবনযুদ্ধে টিকে থাকতে রক্ত-ঘামে উপার্জিত প্রতিটি টাকা তাদের অত্যন্ত হিসাব করে ব্যয় করতে হয়।
গ্রাহকদের স্বস্তির জন্য ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে পাওয়া গণমানুষের কাঙ্ক্ষিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে টিক্যাবের পক্ষ থেকে পাঁচটি সুনির্দিষ্ট দাবি তুলে ধরা হয়।
দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে :
বর্তমানে ১০০ টাকার মুঠোফোন সেবা ব্যবহারে গ্রাহকদের ৩৯ টাকা কর দিতে হচ্ছে, এ কর কমিয়ে ২০ টাকায় নামিয়ে এনে টকটাইম ও ইন্টারনেটের মূল্য কমিয়ে আনা, সেবার মান বাড়িয়ে ব্রডব্যান্ড ও মোবাইল ইন্টারনেটের স্পিড বৃদ্ধি করতে হবে এবং কলড্রপ বন্ধ করা।
মেয়াদ শেষে অব্যবহৃত টকটাইম ও ডেটা কেটে নেওয়া যাবে না, পরবর্তী যে কোনো প্যাকেজের সাথে অব্যবহৃত টকটাইম ও ডেটা ব্যবহারের সুযোগ সৃষ্টি করা।
২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে তৎকালীন ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার কর্তৃক অপারেটরগুলোকে শুধুমাত্র ৭ দিন, ৩০ দিন ও আনলিমিটেড মেয়াদের ৪০টি প্যাকেজ দেওয়ার সিদ্ধান্ত বাতিল করে পূর্বের ন্যায় আবারো ৯৫টি প্যাকেজ চালু করা।
বাকস্বাধীনতার পরিপন্থি হওয়ায় যুদ্ধাবস্থা ছাড়া কোনো পরিস্থিতিতেই ইন্টারনেট ও মোবাইল নেটওয়ার্ক বন্ধ করা যাবে না।
ই-কর্মাস সেক্টরে প্রতারণা বন্ধ করতে হবে। তথ্য প্রযুক্তি খাতের ভোক্তাদের স্বার্থ সুরক্ষায় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ সংশোধন, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরকে আরো জনবান্ধব ও শক্তিশালী করা, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর বরাবর অনলাইনে অভিযোগ দায়ের ও ১৫ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তির সুযোগ সৃষ্টি করা।
এএসএস/কেএ