ভাটারা থানায় ধ্বংসযজ্ঞের ক্ষতচিহ্ন, এখনো বের হচ্ছে ধোঁয়া
শিক্ষার্থী ও জনতার আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন শেখ হাসিনা। এরপরই আনন্দ-উল্লাসে ফেটে পড়ে ছাত্রজনতা। উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয় পুরো দেশজুড়ে। কিন্তু এর মধ্যেই কিছু বিক্ষুব্ধ জনতা ঢাকা মহানগর পুলিশের বিভিন্ন থানায় আগুন দেন এবং ভাঙচুর করেন। আগুন দেওয়া হয় রাজধানীর ভাটারা থানায়ও। রীতিমতো ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে থানা প্রাঙ্গণ। এখনো থানার মূল ভবন থেকে বের হচ্ছে ধোঁয়া।
মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রাজধানীর ভাটারা থানায় সরেজমিনে এমন চিত্র দেখা গেছে।
সরেজমিনে আরও দেখা যায়, থানার সামনের চতুর্পাশে ব্যারিকেড দেওয়া আছে। উৎসুক জনতা ব্যারিকেডের সামনে দাঁড়িয়ে পরিস্থিতি দেখছেন। ভেতরে ও বাইরে অনেক গাড়ি আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। মূল ভবনের ভেতর থেকে এখনো কালো ধোঁয়া বের হচ্ছে। তবে থানার সামনে এবং ভেতরে কোনো পুলিশ সদস্যকে দেখা যায়নি। সম্পূর্ণ অরক্ষিত অবস্থায় রয়েছে ভাটারা থানা। এ ছাড়া, থানার ভেতরে এবং বাহিরে পুলিশ সদস্যদের কোনো মরদেহ দেখা যায়নি।
আরও পড়ুন
ভাটারা থানা সংলগ্ন পুলিশ বক্সও আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এখনো পুলিশ বক্স থেকে ধোঁয়া বের হচ্ছে। তবে এক শ্রেণির উঠতি বয়সের তরুণকে থানার ভেতরে ও বাহিরে দেখা যায়। যারা ভেতর থেকে বিভিন্ন জিনিসপত্র লুট করে নিয়ে যাচ্ছেন। পুলিশ বক্স থেকে তারা বৈদ্যুতিক সুইচ থেকে শুরু করে বিভিন্ন জিনিসপত্র খুলে নিচ্ছেন।
থানার সামনে উপস্থিত জনতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সোমবার সন্ধ্যার পর থেকেই থানায় হামলা করে বিক্ষুব্ধ জনতা। এরপর করা হয় ভাঙচুর ও লুটপাট। গতকাল রাতে বিভিন্ন জায়গায় থানায় দেওয়া আগুন এখনো জ্বলছে।
ইমরান খান নামে এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, স্বৈরাচারের পতন হয়েছে, এতে আমরা অনেক খুশি। কিন্তু থানা তো জনগণের সম্পদ। এখন আমরা আর ধ্বংসযজ্ঞ চাই না। দেশে শান্তি ফিরে আসুক এইটা আমরা সবাই চাই।
থানার সামনে দাঁড়িয়ে থাকা আরেক স্থানীয় বাসিন্দা মো.রয়েল বলেন, গতকাল রাত থেকে থানায় আগুন জ্বলছে। কিন্তু কেউ নেভাতে আসছে না। আমরা তো অনেক ধ্বংসযজ্ঞ দেখেছি। এবার সবাই মিলে সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টি করা উচিৎ। দেশ স্বাভাবিক হলে তো থানার প্রয়োজন পড়বে, পুলিশের দরকারও রয়েছে। তাই আমাদের সবাইকে মিলে এখন দেশের সম্পদ রক্ষা করা উচিত।
রাজধানীর প্রগতি সরণি এলাকায় পুলিশ সদস্যদের কোনো উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়নি। দেখা মেলেনি ট্রাফিক পুলিশেরও। নতুন বাজার মোড়ে সেনাবাহিনীর সদস্যদের একটি চেক পয়েন্ট করা হয়েছে। সেখান থেকে বারিধারা অ্যাম্বাসি রোডে কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না।
এমএসি/এমজে