চট্টগ্রামে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, বেকায়দায় নিম্ন আয়ের মানুষ
চট্টগ্রামে সাম্প্রতিক কোটা আন্দোলন ঘিরে অস্থিরতা ও সহিংসতার কারণে দ্রব্যমূল্য ঊর্ধ্বমুখী। সরবরাহ কম থাকায় দাম ঊর্ধ্বমুখী বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা। ফলে ৭০ থেকে ৮০ টাকার নিচে মিলছে না কোনো সবজি।
বিক্রেতারা জানান, কোটা আন্দোলনের কারণে বেশ কিছুদিন জেলা-উপজেলার সঙ্গে চট্টগ্রামের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল। ফলে সরবরাহ কমে আসায় নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম ছিল ঊর্ধ্বমুখী।
অন্যদিকে ক্রেতারা বলছেন, একেক সময় একেক অজুহাতে নিত্যপণ্য ও সবজির দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন বিক্রেতারা। এতে সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে সবকিছু।
ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, কারফিউ চলমান থাকায় এখনো সব পণ্যবাহী ট্রাক চট্টগ্রামে আসতে পারছে না। সীমিত পরিসরে কিছু পণ্যবাহী ট্রাক প্রবেশ করছে। যার কারণে দাম একটু বাড়তি।
বুধবার (৩১ জুলাই) সকালে নগরীর দুই নম্বর গেইট, চকবাজার, বহদ্দারহাট, কাজীর দেউড়িসহ বেশকিছু বাজার ঘুরে নিত্যপ্রয়োজনীয় ও সবজির দামে তারতম্য দেখা যায়। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলেও ৬০ টাকার নিচে এখনো কোনো সবজি মিলছে না।
আরও পড়ুন
চট্টগ্রামের বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, কাঁচাবাজারে আলু বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৬৫ টাকায়। পটল ৭০ টাকা, লাউ প্রতি পিচ ৬০ থেকে ৭০ টাকা, করলা ৭০ থেকে ৮০ টাকা, কাঁকরোল ৭০ থেকে ৮০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া কেজিপ্রতি ৪০ টাকা, ধুন্দল ৬০ টাকা, ঝিঙা ৬০ টাকা, ফুলকপি ১০০ টাকা, টমেটো ২০০ টাকা, গাজর ১০০ টাকা, বরবটি ৭০ থেকে ৮০ টাকা, পেঁপে ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে স্বস্তি ফিরেছে ডিমের বাজারে। ডিমের ডজন ১৫ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকায়। আর পেঁয়াজ কেজিপ্রতি ১২০ টাকা, রসুন ২০০ টাকা, আদা বিক্রি হচ্ছে ২৮০ থেকে ৩০০ টাকায়। বাজারে প্রতি কেজি ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৬০০ টাকায়। রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩৮০ থেকে ৪০০ টাকায়। পাঙাশ বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা দরে। এ ছাড়া তেলাপিয়া ২৫০ থেকে ২৬০ টাকা, কাচকি ৫০০ টাকা, কৈ ২০০ থেকে ২৪০ টাকা, চিংড়ি ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, দেশি টেংরা মাছ ৮০০ টাকা ও পাবদা মাছ ৪৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া গরুর মাংসের কেজি ৭৫০ থেকে ৭৮০ টাকা, খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ১০০০ থেকে ১১৫০ টাকা দরে।
নগরীর কর্ণফুলী মার্কেটে বাজার করতে আসা সাবের হোসেন জানান, সবসময় ব্যবসায়ীদের অজুহাত। আন্দোলন আর কারফিউ চলমান থাকার অভিযোগ করে পণ্যের ঘাটতির কথা বলে সব পণ্য কয়েক গুণ বেশি দামে বিক্রি করছে।
শাহেদুল ইসলাম নামের এক পরিবহন শ্রমিক বলেন, দেশের এই পরিস্থিতিতে আয় কমে গেছে আমাদের। সেই সুযোগে ব্যবসায়ীরা দাম বাড়িয়েছে সবকিছুর। আমাদের জীবন চালাতে কষ্ট হচ্ছে।
গিয়াস উদ্দিন নামে এক বেসরকারি চাকরিজীবী বলেন, শুধু নিম্ন আয়ের মানুষ না, মধ্যবিত্ত পরিবারেরও বেগ পেতে হচ্ছে। বাজারে কিছু ছোঁয়া যায় না। ৭০-৮০ টাকার নিচে সবজি নেই। নিত্যপণ্যের দাম লাগামহীন।
আরএমএম/এসএসএইচ