কোটা আন্দোলনে এবার কলেজের শিক্ষার্থীরাও
কোটা সংস্কারের দাবিতে কয়েকদিন ধরে আন্দোলন চালিয়ে আসছেন শিক্ষার্থীরা। প্রথমে এতে বিভিন্ন সরকারি বিশ্ববিদ্যায়ের শিক্ষার্থী যোগ দিলেও সোমবার থেকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল ও বুয়েটের শিক্ষার্থীরাও যোগ দিয়েছে। আর আজ (মঙ্গলবার) বিভিন্ন জায়গায় রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করতে দেখা গেছে কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীদেরও। রাজধানী ছাড়াও দেশে বিভিন্ন স্থানে কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের রাস্তায় নামার খবর পাওয়া গেছে।
স্কুল-কলেজের প্রধান শিক্ষকরা বলছেন, মূলত স্কুল শেষে তারা বাসায় ফেরায় পথে এ আন্দোলনে নামে। স্কুল থেকে সকল অভিভাবকদের শিক্ষার্থীদের এ আন্দোলন বিরত রাখতে বলা হচ্ছে।
দুপুরে বেইলি রোডে সড়কে অবস্থান নেন সিদ্ধেশ্বরী গার্লস কলেজের শিক্ষার্থীরা। মতিঝিলে শাপলা চত্বর মোড়ে অবস্থান নেন নটর ডেম কলেজের শিক্ষার্থীরা। এতে কার্যত অচল হয়ে পড়ে ব্যাংক পাড়া হিসেবে খ্যাত মতিঝিল এলাকা। দুপুর সাড়ে ১২টার পর শিক্ষার্থীরা সেখানে অবস্থান নেয়।
এ ছাড়া মিরপুর-১৪ নম্বরে আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজ, বিএএফ শাহীন কলেজ ও নৌবাহিনী কলেজের শিক্ষার্থীদের দেখা গেছে। তাদের সঙ্গে আশপাশের বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থীরাও যোগ দেন।
ভিকারুননিসা স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কেকা রায় চৌধুরী বলেন, আজ সকাল থেকে শান্তিপূর্ণভাবে ক্লাস হয়েছে। শিক্ষার্থীরা বাড়ি ফেরার সময় বেইলি রোডে অবস্থান নেয়। পরে তাদের বুঝিয়ে বাড়ি পাঠানো হয়। তিনি আরও বলেন, আমরা অভিভাবকদের এসএমএস করে এই আন্দোলনে যাতে তাদের সন্তানরা না যায় সেদিকে খেয়াল রাখতে বলেছি।
আরও পড়ুন
২০১৮ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলনের পর প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিল করে পরিপত্র জারি করে সরকার। সম্প্রতি, কয়েকজন মুক্তযোদ্ধার সন্তান হাইকোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করে প্রথম ও ২য় শ্রেণির চাকরির ক্ষেত্রে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটার আবারও প্রচলন চান। হাইকোর্ট ওই রিট ‘অ্যাবসলুট’ ঘোষণা করেন এবং ২০১৮ সালে কোটা বাতিল করে জারি করা সরকারি পরিপত্রটি অবৈধ ঘোষণা করেন। হাইকোর্টের এই রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিলে গেছে এবং আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায়ের ওপর ৪ সপ্তাহের জন্য ‘স্ট্যাটাস কো’ বা স্থিতাবস্থা জারি করেছেন। আগামী ৭ আগস্ট এ বিষয়ে চূড়ান্ত শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।
হাইকোর্ট ২০১৮ সালের পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করার পর থেকে আন্দোলন করে আসছেন শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রার্থীরা। তাদের ভয়, সরকার আদালতকে ব্যবহার করে আবারও কোটা পদ্ধতি চালু করতে চায়। প্রথমে তারা দাবি করেন ২০১৮ সালের পরিপত্র বহাল রাখতে হবে অর্থাৎ কোনো ধরনের কোটা থাক সেটি তারা চান না।
পরে তারা অবস্থান থেকে কিছুটা সরে এসে কোটার যৌক্তিক ও স্থায়ী সংস্কার চান। সেক্ষেত্রে তারা মূলত অনগ্রসর গোষ্ঠী ও প্রতিবন্ধীদের জন্য কোটা রাখার পক্ষে এবং সেটি সর্বোচ্চ ৫% রাখার দাবি তাদের। এই সংস্কার এখন তারা ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণির চাকরির ক্ষেত্রেও চাচ্ছেন।
এনএম/এনএফ