কোটাবিরোধী আন্দোলন : শাহবাগে ৫ ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ
![কোটাবিরোধী আন্দোলন : শাহবাগে ৫ ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ](https://cdn.dhakapost.com/media/imgAll/BG/2024July/kota-university-2-20240704173653.jpg)
হাইকোর্ট কর্তৃক প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ ৫৬ শতাংশ কোটা পুনর্বহালের আদেশের বিরুদ্ধে এবং ২০১৮ সালের পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে টানা তৃতীয় দিনের মতো শাহবাগ মোড়ে অবস্থান গ্রহণ করেছেন শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনের কারণে দুপুর থেকে দীর্ঘ ৫ ঘণ্টা এই রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ আছে।
বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১টায় শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি হল থেকে আলাদা মিছিল নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়য়ের সেন্ট্রাল লাইব্রেরির সামনে জড়ো হন। পরে সেখান থেকে বিশাল মিছিল নিয়ে হলপাড়া-ভিসি চত্বর-টিএসসি হয়ে বেলা সোয়া ১২টায় শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেন।
এ প্রতিবেদন লেখার সময় শিক্ষার্থীদের শাহবাগ মোড়ে বসে স্লোগান দিতে দেখা যায়। তাদের অবস্থানের কারণে ফার্মগেট-শাহবাগ, শাহবাগ-পল্টন-মগবাজার রোড, শাহবাগ-সাইন্সল্যাব রোড এবং শাহবাগ-বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশপথ বন্ধ রয়েছে।
আন্দোলনে অংশ নেওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সালমান বলেন, আমরা দাবি আদায়ের আগ পর্যন্ত রাজপথ ছাড়ব না। সারাদেশের ছাত্রসমাজ আজ জেগে উঠেছে। শাহবাগ, সাইন্সল্যাব রোড এবং মেট্রোরেল বন্ধ করতে পারলে এই আন্দোলন সফল হবে। আমরা সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত আজকের আন্দোলন চালিয়ে যাব। এরপর আবার আগামীকাল আন্দোলন শুরু করব।
অবরোধ তুলতে পুলিশের কোনো পদক্ষেপ আছে কি না জানতে চাইলে শাহবাগথানার উপ পরিদর্শক (এসআই) আল-আমিন বলেন, আমাদের কোনো পরিকল্পনা নেই। শিক্ষার্থীরা যতক্ষণ মন চায় আন্দোলন করবে। যখন মন চায় চলে যাবে। যানবাহন বিকল্প রাস্তা ব্যবহার করছে।
আরও পড়ুন
যানবাহন চলাচল সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কিছু গাড়ি শহীদ মিনারের রাস্তা ব্যবহার করছে আর কিছু যানবাহন ইন্টারকন্টিনেন্টালের রাস্তা ব্যবহার করছে। ফলে আপাতত তেমন কোনো সমস্যা নেই।
মোড়ে অবস্থান করা শিক্ষার্থীরা ‘সংবিধানের মূলকথা, সুযোগের সমতা’, ‘সারা বাংলায় খবর দে, কোটা প্রথার কবর দে’, ‘দালালি না রাজপথ, রাজপথ রাজপথ,’ ‘আঠারোর হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার’, ‘জেগেছে রে জেগেছে, ছাত্রসমাজ জেগেছে’, ‘লেগেছে রে লেগেছে, রক্তে আগুন লেগেছে’, “কোটা প্রথা, বাতিল চাই বাতিল চাই’, ‘কোটা প্রথার বিরুদ্ধে, ডাইরেক্ট একশন’, ‘কোটা না মেধা, মেধা মেধা’, ‘আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম’, ‘মুক্তিযুদ্ধের বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’— ইত্যাদি স্লোগান দিচ্ছেন।
প্রসঙ্গত, চার দফা দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। দাবিগুলো হলো-
১. ২০১৮ সালে ঘোষিত সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহাল রাখা।
২. পরিপত্র বহাল সাপেক্ষে কমিশন গঠনপূর্বক দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারি চাকরির সমস্ত গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাদ দেওয়া (সুবিধাবঞ্চিত ও প্রতিবন্ধী ব্যতীত)।
৩. সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটা সুবিধা একাধিকবার ব্যবহার করা যাবে না এবং কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্যপদগুলোতে মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দেওয়া।
৪. দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
কেএইচ/এসএম