ঢাকাকে বাসযোগ্য করতে নগর সংস্থাগুলোর সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন
ঢাকাকে বাসযোগ্য করতে শুধু বড় প্রকল্প নয়, নগর সুশাসন ও নগর সংস্থাগুলোর সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স (বিআইপি)।
বুধবার (৩ জুলাই) রাজধানীর বাংলামোটরে প্ল্যানার্স টাওয়ারের বিআইপি কনফারেন্স হলে 'বাসযোগ্যতা সূচকে ঢাকা কেন এত পিছিয়ে' শীর্ষক সেমিনারে বক্তার এ কথা বলেন।
বক্তারা বলেন, ঢাকাকে বাসযোগ্য করতে বড় ধরনের প্রকল্পে বিনিয়োগকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। কম গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে নগর সুশাসন, উন্নয়ন প্রকল্পসমূহের কার্যকর সমন্বয়, সেবা সংস্থাসমূহের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা, উন্নয়ন পরিকল্পনায় কমিউনিটির অংশগ্রহণ এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠাসহ গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গগুলোতে। যানজট এবং বায়ু, পানিসহ পরিবেশ দূষণ ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সাশ্রয়ী, কার্যকর ও টেকসই সমাধান বের না করতে পারলে ঢাকা বাসযোগ্য হবে না।
আরও পড়ুন
তারা বলেন, ঢাকা শহরের বেশির ভাগ এলাকা অপরিকল্পিতভাবে গড়ে ওঠায় নাগরিক সুবিধা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। পাশাপাশি নগরে বৈশ্বিক মানদণ্ড অনুযায়ী জনঘনত্ব যত হওয়ার কথা তার চেয়ে তিন-চারগুণ জনসংখ্যা এই শহর ধারণ করছে। ফলে শহরে বাসযোগ্যতার উন্নতি হচ্ছে না।
মূল প্রবন্ধে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপি) সভাপতি পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক ড. আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, মেট্রোরেলের পাশাপাশি গণপরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়ন করা প্রয়োজন। এর জন্য মানসম্মত বাস সার্ভিস ও প্যারা ট্রানজিট সার্ভিস এবং হাঁটার উপযোগী ফুটপাত নিশ্চিত করতে হবে। এলাকাভিত্তিক সবার জন্য প্রবেশগম্য খেলার মাঠ-পার্ক-উদ্যান তৈরি করা এবং বিদ্যমান সুবিধাসমূহ সবার জন্য উন্মুক্ত করা দরকার।
এ ছাড়া, আবাসিক এলাকায় পর্যাপ্ত নাগরিক সুবিধাদি নিশ্চিত করতে পরিকল্পনার মানদণ্ড (প্ল্যানিং স্ট্যান্ডার্ড) সংশোধন করা, আবাসিক এলাকা থেকে অনুমোদনহীন শিল্প কারখানা-গুদাম প্রভৃতি সরানোর উদ্যোগ নেওয়া, প্রয়োজন মোতাবেক নিম্নবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্তদের মানসম্মত আবাসন নিশ্চিত করতে নীতিমালা তৈরি করা এবং ভূমি বরাদ্দ ও সাশ্রয়ী আবাসন প্রকল্প গ্রহণ করা দরকার।
বিআইপির সাধারণ সম্পাদক পরিকল্পনাবিদ শেখ মুহম্মদ মেহেদী আহসান বলেন, বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক নীতি এবং সেগুলোর লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য বাসযোগ্যতার প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। সামগ্রিক পরিবেশের কথা ভেবে পরিকল্পনা করলে ঢাকা শহরের বাসযোগ্যতা বাড়ানো সম্ভব।
বিআইপির সাবেক সভাপতি ও উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক ড. আকতার মাহমুদ বলেন, এলাকাভিত্তিক প্রাথমিক বিদ্যালয় ও প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজন পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন। শহরের বিশাল জনগোষ্ঠীকে বস্তিতে রেখে বাসযোগ্যতার উন্নতি করা সম্ভব নয়।
বিআইপির উপদেষ্টা পরিষদের আহ্বায়ক পরিকল্পনাবিদ মোহাম্মদ ফজলে রেজা সুমন বলেন, গত এক যুগে অবকাঠামোতে প্রচুর বিনিয়োগের পরও ঢাকার সূচকে কোনো উন্নতি হয়নি। গণপরিবহণ নিয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে, ফুটপাত ও রোড নেটওয়ার্ক বৃদ্ধিতে সংস্থাগুলোকে আরও মনোযোগী হতে হবে।
এএসএস/এমজে