‘মুক্তিযোদ্ধারা বৈষম্য চাননি, ৩০ শতাংশ কোটা যৌক্তিক নয়’
হাইকোর্ট কর্তৃক প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ ৫৬ শতাংশ কোটা পুনর্বহালের আদেশের বিরুদ্ধে এবং ২০১৮ সালের পরিপত্র বহাল রাখার দাবিতে অবস্থান নিয়েছেন শিক্ষার্থী ও চাকরি প্রত্যাশীরা। তাদের এ আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন একজন মুক্তিযোদ্ধার নাতিও।
বুধবার (৩ জুলাই) বিকেল পৌনে ৫টায় শাহবাগ মোড়ে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে তিনি একাত্মতা পোষণ করে বক্তব্য রাখেন।
কোটা বহাল রাখার বিরুদ্ধে কথা বলেন মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান ফারাবি রহমান শ্রাবণ। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
আরও পড়ুন
তিনি বলেন, আমি বীর মুক্তিযোদ্ধার নাতি। আমি মনে করি, সরকারি চাকরিতে ৩০ শতাংশ কোটা ঠিক নয়। ৩০ শতাংশ কোটা কখনো যৌক্তিক হতে পারে না। মুক্তিযোদ্ধারা বৈষম্য চাননি। ৫৬ শতাংশ কোটা আর মাত্র ৪৪ শতাংশ সাধারণভাবে থাকলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা কী করবে?
তিনি বলেন, আমি মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদের সর্বোচ্চ সম্মান প্রদর্শন করে বলতে চাই, আমাদের পূর্ব পুরুষ এ কারণে যুদ্ধ করেননি। তারা চেয়েছিলেন সবার জন্য সমান সুযোগ ও সমতা। আমি মুক্তিযোদ্ধাদের আহ্বান জানাব, আপনারা ন্যায্য দাবির পাশে দাঁড়ান। নিজের বিবেককে প্রশ্ন করুন।
কর্মসূচিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের ছাত্র সারজিস আলম বলেন, ২০১৮ সালে যে পরিপত্র জারি করা হয়েছিল, হাইকোর্ট সেটি বাতিল করেছে। আমরা বিশ্বাস করি এ রায় একটি প্রহসন। সংবিধানে কোটা দেওয়ার কথা বলা নেই। সংবিধানের ২৮ (৪) এবং ২৯ (৩) ধারায় বলা হয়েছে, রাষ্ট্র মনে করলে অনগ্রসর জাতিকে কোটা দিতে পারে। তবে বাধ্য নয়। সংবিধানে সুযোগের সমতার কথা বলা হয়েছে। অন্যায় কোটা দিয়ে কাউকে সুযোগ দিলে আরেকজন বঞ্চিত হবে।
কোটা বাতিলের দাবি মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে নয় জানিয়ে তিনি আরও বলেন, আমরা মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে নই। মুক্তিযোদ্ধারা বৈষম্যমূলক সমাজ চেয়েছেন? একাত্তরের চেতনা কি বৈষম্যমূলক? তখন সমস্বরে সবাই বলে উঠেন ‘না’।
সারজিস আলম আরও বলেন, চাকরির আবেদনে কোটাধারীদের ৩২ বছর সুবিধা দেওয়া হয়েছে। এটা নিয়ে শিক্ষার্থীরা কিছু বলেনি। মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা আরও বাড়ান, যানবাহন-হাসপাতাল বাড়ান। কিন্তু কোটা স্বাধীনতার চেতনার সঙ্গে যায় না, এটা অন্যায়। এটা সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অন্যায় ও জুলুম।
এর আগে, বেলা আড়াইটায় সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের দাবিতে লাগাতার আন্দোলনের অংশ হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়য়ের সেন্ট্রাল লাইব্রেরির সামনে থেকে মিছিল বের করেন আন্দোলনকারীরা। মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি চত্বর-টিএসসি-হাইকোর্ট-মৎস্যভবন হয়ে বেলা পৌনে ৪টায় শাহবাগ মোড়ে এসে অবস্থান নেন তারা।
কেএইচ/এসকেডি