কাঙ্ক্ষিত দামে মিলছে না পশু, অপেক্ষা বাড়ছে ক্রেতাদের
ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে শেষ মুহূর্তে রাজধানীর হাটগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় বাড়তে শুরু করেছে। তবে কাঙ্ক্ষিত দামে কোরবানির পশু না মেলায় এখনও হাটে সেই অর্থে বিক্রি বাড়েনি। ফলে ক্রেতাদের যেমন পশু কেনার জন্য অপেক্ষা বাড়ছে, তেমনি বিক্রেতারও পশু বিক্রি নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন।
আব্দুল কাইয়ুম মোহাম্মদপুরের বাসিন্দা। দুই ছেলে নিয়ে গাবতলী হাটে গরু কিনতে এসেছেন। ঢাকা পোস্টের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, লাখ দেড়েকের মধ্যে একটা গরু কেনার জন্য ঘুরছি। ঘণ্টা দুয়েক হলো হাটে আসছি। গরু পছন্দ হয় কিন্তু দাম বেশি চায়। বিক্রেতারা গরু ছাড়ছেন না।
শনিবার গাবতলী পশুর হাট ঘুরে দেখা গেছে, হাট ভর্তি গরু। সঙ্গে মহিষ, ছাগল ও ভেড়ারও অভাব নেই। আছে ক্রেতাও, তবে সেই অর্থে পশু বিক্রি হতে দেখা যায়নি। বিক্রি জমে না ওঠায় হাসিল পরিশোধের ঘরগুলোতে সংশ্লিষ্টরা অলস সময় পার করছেন।
হাট ঘুরে দেখা গেছে, বড় আকারের গরুর মধ্যে ফ্রিজিয়ান ও ব্রাহামা ক্রস ১০ থেকে ১২ লাখ টাকা চাইছেন বিক্রেতারা। তবে দর কষাকষি করে এ দুই জাতের গরু ৮ থেকে ৯ লাখ টাকায় কেনা যাচ্ছে। হাটে সবচেয়ে বেশি চাহিদা রয়েছে মাঝারি আকারের গরু। এ ধরনের গরু যেসব ব্যাপারীর কাছে পাওয়া যাচ্ছে, সেখানে ক্রেতাদের ভিড় বেশি। মাঝারি আকারের গরুর দাম ৩ থেকে ৪ লাখ টাকা চাওয়া হচ্ছে। তবে শেষ অবধি দরকষাকষি করে এ ধরনের গরু আড়াই থেকে সাড়ে ৩ লাখ টাকার মধ্যে কেনা যাচ্ছে। একেবারে ছোট আকারের গরুর দাম চাওয়া হচ্ছে ১ থেকে দেড় লাখ টাকা। আর বিক্রি করা হচ্ছে ৮০ থেকে ১ লাখ টাকার মধ্যে।
আরও পড়ুন
ছাগলের হাট ঘুরে দেখা গেছে, বড় আকারের ছাগল লাখ টাকা দাম চাইছেন বিক্রেতারা। তবে ৭০ হাজার পেলে ছেড়ে দিতে রাজি তারা। এছাড়া মাঝারি ও ছোট আকারের ছাগল ২০ থেকে ১০ টাকা হাজারের মধ্যে বিক্রি করা হচ্ছে।
আর বড় আকারের মহিষ ৪ থেকে ৫ লাখ, মাঝারি আকারের মহিষ ১ থেকে দেড় লাখ এবং ছোট আকারের মহিষ বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ হাজার টাকায়।
ব্যাপারীরা বলছেন, শুক্রবার রাত থেকে হাটে পশু কিনতে মানুষের আনাগোনা বেড়েছে। শনিবার সকাল থেকে হাটে ক্রেতারা আসছে। তবে ক্রেতাদের চাওয়া দামের সঙ্গে না মেলায় পশু ছাড়তে পারছেন তারা। তাদের শঙ্কা শেষ সময়ে বিক্রির যে অবস্থা হয়ত হাট থেকে অনেক গরু নিয়ে বাড়ি ফিরতে হবে তাদের।
রংপুরের পশু ব্যাপারী আব্দুল মজিদ বলেন, গতকাল সকালে ১২টা গরু নিয়ে হাটে আসছি। এখনও একটাও বিক্রি করতে পারিনি। মানুষ আসে, দাম বলে; কিন্তু কিনে না। তারা বলছে দাম বেশি। কিন্তু আমাদের যে খরচ অন্তত সেটা তো উঠতে হবে। আমরা তো আর লস দিতে হাটে আসিনি।
লালমনিরহাটের কালু মিয়া বলেন, ২০টা গরু এনেছি। এখন পর্যন্ত ৩টা বিক্রি হয়েছে। কাস্টমার আসে, দাম শুনে চলে যায়। হাতে আছে আর দুইদিন। বাকি গরুগুলা না বিক্রি করতে পারলে অনেক লোকসান হয়ে যাবে।
শ্যামলীর বাসিন্দা মোহাম্মদ হানিফ গরু নিয়ে হাট থেকে বের হচ্ছেন। তিনি গরু নিয়ে সামনে পা ফেলছেন আর মানুষ দাম জানতে চাইছেন। হানিফ কাউকে দাম বলছেন তো আবার কাউকে বলছেন না। তিনি বলেন, যে দেখে সেই জিজ্ঞেস করে, ভাই, দাম কত? কতজনকে উত্তর দেওয়া যায়! অনেক দামাদামি করে গরুটা কিনতে পেরেছি ১ লাখ টাকায়।
এনআই/এসকেডি