কমলাপুর হাটে আসছে কোরবানির পশু, বিক্রি জমবে শুক্রবার
ঈদুল আজহা সামনে রেখে রাজধানীর কমলাপুরে বসেছে অস্থায়ী পশুর হাট। বাংলাদেশ ব্যাংকের পাশ থেকে শুরু করে দেওয়ানবাগ শরীফ হয়ে গোপীবাগের কিছু এলাকা জুড়ে এই হাটের অবস্থান। হাট পুরোপুরি প্রস্তুত না হলেও এরই মধ্যে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিক্রির জন্য কোরবানির পশু নিয়ে আসা শুরু করেছেন ব্যবসায়ীরা। তবে হাট এখনো পুরোদমে জমে ওঠেনি।
সোমবার (১০ জুন) বিকেলে কমলাপুর হাটের বিভিন্ন অংশ ঘুরে এবং সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঈদের দুয়েকদিন আগে থেকেই পুরোদমে পশু বিক্রি শুরু হবে। এর আগেও কম-বেশি বিক্রি হতে পারে। তবে আগামী শুক্রবার থেকেই গরু বিক্রি জমজমাট হবে।
চুয়াডাঙ্গা থেকে ৮টি গরু নিয়ে হাটে এসেছেন মুজিবর মিয়া। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, এক গাড়িতে ৮টি গরু নিয়ে এসেছি; এখনো একটিও বিক্রি হয়নি। শুক্রবার থেকে বিক্রি শুরু হতে পারে। এখন কম মানুষ হাটে আসছে আর দেখে চলে যাচ্ছে।
মুজিবর বলেন, আমি যে গরুগুলো এনেছি সেগুলো প্রায় প্রতিটি ১ লাখ ৭০ হাজার থেকে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত দামে বিক্রি করা যাবে। প্রতিবছর অন্যান্য হাটে গরু নিয়ে গিয়েছিলাম। এ বছর প্রথম কমলাপুর হাটে গরু এনেছি।
আরেক গরু বিক্রেতা ইদ্রিস মিয়া বলেন, যেহেতু এখনো বিক্রি শুরু হয়নি তাই পরিস্থিতি বোঝা যাচ্ছে না। পুরোদমে বিক্রি শুরু হলে ক্রেতাদের বেশি চাহিদা কেমন গরুতে সেটা বোঝা যাবে। সকাল থেকে কয়েকজন ক্রেতা এসেছেন। দাম জিজ্ঞাসা করেই তারা চলে যাচ্ছেন। অনেকেই এখন শুধু গরু দেখতে আসছেন। এ বছর দাম বেশি হওয়াতে অনেকেই বাজার যাচাই করে গরু কিনবেন।
আরও পড়ুন
খুলনা থেকে ১০টি গরু নিয়ে আসা দবির মিয়া বলেন, হাটের শুরুতেই এসেছি। ঈদের দুই একদিন আগেই বিক্রি করে এলাকায় চলে যাব ভেবেছি। ভালো দাম পেলে গরু ধরে রাখব না।
গরু কিনতে আসা আলী আকবর বলেন, এ বছর গরুর দাম বেশি। বাসার পাশে হাট তাই দেখতে এসেছি। ভালো পেলে কিনে নিয়ে যাব। তবে গরু রাখার জায়গা এবং খাওয়ানোর সমস্যা থাকায় আমি প্রতিবছর ঈদের দুয়েকদিন আগেই কিনি।
এ বছর কমলাপুর গরুর হাটের ইজারাদার ও সমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন গিয়াসউদ্দিন পলাশ। হাটের আয়োজকরা জানিয়েছেন, এ বছর অনেক বেশি টাকা দিয়ে হাট ইজারা নিতে হয়েছে। কিন্তু সে অনুযায়ী হাসিলের রেট বাড়াতে পারছি না। এ বছর ডিজিটাল ব্যাংকিং ব্যবস্থা থাকবে হাটে। গরু-ছাগলের জন্য চিকিৎসার ব্যবস্থাও থাকবে। এছাড়া পাইকারদের জন্য থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা থাকছে। হাটের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সিসি ক্যামেরা দিয়ে সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা হবে। ক্রেতা-বিক্রেতাদের বিভিন্ন প্রয়োজনে আমাদের টিম জরুরি ভিত্তিতে সহায়তা করবে।
এদিকে, পবিত্র ঈদুল আজহায় সার্বিক নিরাপত্তা সম্পর্কে সম্প্রতি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছিলেন, সারা দেশের সড়ক-মহাসড়কে হাট বসা নিষিদ্ধ থাকবে। পশুহাটে পশু চিকিৎসক থাকবেন। পশু কোনো নির্ধারিত হাটে নেওয়ার জন্য জোর করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। হাসিলের পরিমাণ সাইন বোর্ডে লেখা থাকতে হবে। সুনির্দিষ্ট তথ্য ছাড়া কোরবানির পশুবাহী যানবাহন থামানো যাবে না। পশুর হাটে অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প রাখা হবে, জাল নোট শনাক্ত করার মেশিন ও এটিএম বুথও থাকবে।
মন্ত্রী বলেছিলেন, সিসি ক্যামেরার আওতায় থাকবে পশুর হাট। এ বছর সারা দেশে কমবেশি চার হাজার ৩৯৯টি পশুর হাট বসবে বলে আমাদের কাছে খবর এসেছে। এছাড়া সাদা পোশাকে আমাদের গোয়েন্দারা সার্বিক বিষয় মনিটরিং করবেন।
এমএম/এমএ