ঈদে সড়ক দুর্ঘটনা কমাতে আহ্ছানিয়া মিশনের সুপারিশ
বড় কোনো উৎসবে ছুটির সময় সড়ক দুর্ঘটনায় (রোড ক্র্যাশ) হতাহতের ঘটনা বেড়ে যায় উল্লেখযোগ্য হারে। আসন্ন ঈদুল আজহায় নিরাপদ যাত্রা এবং সড়ক দুর্ঘটনা কমাতে বিভিন্ন সুপারিশ তুলে ধরেছে ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন।
সোমবার (১০ জুন) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন জানায়, বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিআরটিএ) তথ্য অনুযায়ী, গত ঈদুল ফিতরে ঘরমুখো মানুষের যাতায়াতের ১৭ দিনে (৪ থেকে ২০ এপ্রিল) সারা দেশে ২৬৮টি সড়ক দুর্ঘটনার ঘটনা ঘটেছে। এসব দুর্ঘটনায় ৩২০ জন নিহত ও ৪৬২ জন আহত হয়েছেন। যা তার আগের বছরের (২০২৩) ঈদের তুলনায় ১৯ শতাংশ মৃত্যু বেশি। সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে মোটরসাইকেল ১১৭টি, যার হার প্রায় ২৯ শতাংশ। এ সময়ে গড়ে প্রতিদিন ১৭টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১৯ জন নিহত ও ২৭ জন আহত হয়।
আরও পড়ুন
এসব মৃত্যুরোধ করতে ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন বলছে, ‘দেশের সড়ক দুর্ঘটনার অন্যতম প্রধান কারণ অনিয়ন্ত্রিত ও বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো। পাশাপাশি মোটর সাইকেলের অনিয়ন্ত্রিত গতি প্রতিনিয়ত দেশের কর্মক্ষম তরুণসহ অনেকের প্রাণ কেড়ে নিচ্ছে। সড়ক দুর্ঘটনা ঠেকাতে মোটরযান গতিসীমা-সংক্রান্ত নির্দেশিকা ২০২৪ সড়কে অকাল মৃত্যু কমাবে।
আসন্ন ঈদকে সামনে রেখে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে যে সুপারিশগুলো তুলে ধরেছে প্রতিষ্ঠানটি। তা হলো—
১। মোটরযানের গতিসীমা নির্দেশিকা মেনে চলা।
২। সড়ক ও পরিবহনের ধরন অনুযায়ী গতি নির্ধারণ ও ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত গাইডলাইন অতিসত্বর প্রণয়ন এবং বাস্তবায়ন করা।
৩। মোটরসাইকেল চালক ও আরোহী উভয়েরই মানসম্মত হেলমেট ব্যবহার নিশ্চিত করতে এ সংক্রান্ত এনফোর্সমেন্ট গাইডলাইন প্রণয়ন করা।
৪। যানবাহনে চালকসহ সব যাত্রীর সিটবেল্ট ব্যবহার সংক্রান্ত গাইডলাইন প্রণয়ন করা। পাশাপাশি মোটরযানে (বিশেষ করে কার/জিপ/মাইক্রোবাসে) শিশু সুরক্ষার বিষয়টি বিবেচনায় এনে শিশুদের জন্য উপযুক্ত শিশু সুরক্ষিত আসন ব্যবস্থা প্রচলন সংক্রান্ত বিধি-বিধান জারি করা।
৫। মদ্যপ অবস্থায় বা নেশা জাতীয় দ্রব্য সেবন করে মোটরযান পরিচালনা না করা সংক্রান্ত বিধি-বিধান বাস্তবায়ন করা। যাতে করে কেউ মদ্যপ অবস্থায় মোটরযান চালিয়ে সড়ক দুর্ঘটনা না ঘটায়।
৬। সর্বোপরি, বিশ্বব্যাপী সমাদৃত সেইফ সিস্টেম অ্যাপ্রোচের আদলে সমন্বিত সড়ক নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা।
ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের রোড সেইফটি প্রকল্প সমন্বয়কারী শারমিন রহমান বলেন, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় ‘মোটরযানের গতিসীমা নির্দেশিকা, ২০২৪’ প্রণয়ন করেছে। জারি করা মোটরযানের গতিসীমা নির্দেশিকা রোড ক্র্যাশ ও প্রতিরোধযোগ্য অকাল মৃত্যু ঠেকাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। পাশাপাশি উন্নত সড়ক ও পরিবহণ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। তাহলে জারিকৃত গতিসীমা নির্দেশিকা বাস্তবায়ন সহজ ও কার্যকর হবে। পরিশেষে, ঈদের মতো উৎসবে আনন্দযাত্রা যেন কান্নায় রূপ না নেয়, সেদিকে আমাদের সবাইকে সচেতন থাকতে হবে।
এমএসি/এমএ