জন্মের পর মৃত ঘোষণা, কবর দেওয়ার আগে কেঁদে উঠল শিশু
চট্টগ্রামে মীরসরাইয়ের মিঠাছরা জেনারেল হাসপাতালে জন্ম নেয় এক নবজাতক। জন্মের পর নবজাতকটিকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। এরপর তাকে কবর দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। কবর দিতে গেলে হঠাৎ কেঁদে ওঠে নবজাতকটি। পরে তাকে দ্রুত চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নেওয়া হয়। বর্তমানে সেখানেই নবজাতকটি চিকিৎসাধীন রয়েছে।
শনিবার (০১ মে) রাতে উপজেলার ১০ নম্বর মিঠানালা ইউনিয়নের পূর্ব মিঠানালা গ্রামের উমর আলী সারেং বাড়ির কবরস্থানে এ ঘটনা ঘটে। তবে, সোমবার (৩ মে) বিষয়টি জানাজানি হয়।
জানা গেছে, পূর্ব মিঠানালা গ্রামের ইউনুস আলীর স্ত্রী জেসমিন আক্তারের প্রসব ব্যথা ও রক্তক্ষরণ শুরু হলে শনিবার সকালে মিঠাছরা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানকার দায়িত্বরত গাইনি চিকিৎসক ডা. শারমিন আয়েশা পরীক্ষা করে রোগীকে স্যালাইন দেওয়ার নির্দেশ দেন। এরপর বিকেলে আলট্রাসনোগ্রাফি করে জানান, গর্ভের শিশু মারা গেছে।
পরবর্তী সময়ে সেদিন রাত পৌনে ৯টার দিকে হাসপাতালে প্রসবের পর নবজাতকটিকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। এরপর একটি কার্টনে করে নবজাতকটির মরদেহ বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়।
নবজাতকটির বাবা ইউনুস আলী অভিযোগ করে বলেন, রাত ৯টার দিকে কার্টনে করে দাফনের জন্য মরদেহ বাড়িতে নিয়ে যাই। এর মধ্যে কবর খোঁড়াও হয়ে গেছে। পরে কবর দেওয়ার জন্য কার্টন খুলে দেখি বাচ্চা কান্না করছে। এ অবস্থায় দ্রুত মিঠাছরা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখান থেকে চট্টগ্রাম শহরে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। রাত দেড়টার দিকে নবজাতককে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ অবস্থার জন্য ডা. শারমিন আয়েশা ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দায়ী।
গর্ভধারণের পাঁচ মাস ১৯ দিন পর নবজাতকটি ভূমিষ্ঠ হয় বলেও জানান ইউনুস আলী।
এ বিষয়ে জানতে মিঠাছরা জেনারেল হাসপাতালের ডা. শারমিন আয়েশার মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করেও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
তবে, মিঠাছরা জেনারেল হাসপাতালের পরিচালক মাসুদ রানা দাবি করে বলেন, প্রসবের পর নবজাতকটির এক মিনিট নড়াচড়া ছিল। ১৫ মিনিট চিকিৎসকের অবজারবেশনে রাখা হয়। এরপর রোগীর স্বজনরা সেখানে আসে। নবজাতকটিকে মৃত ঘোষণা করলে আমরা ডেথ সার্টিফিকেট দিতাম। আমাদের অজান্তে তারা নবজাতকটিকে বাড়ি নিয়ে যায়।
এ বিষয়ে মীরসরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মিনহাজ উদ্দিন বলেন, সাধারণত ৫-৬ মাসের নবজাতক ভূমিষ্ঠ হলে বাঁচার কথা নয়। ভুক্তভোগী পরিবার অভিযোগ দিলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আরএমএন/কেএ