শতাধিক ‘লাইভ মেন্যু’ নিয়ে মেম্বার হোটেলে ভিন্নরকম খাবার পরিবেশন
হোটেলে ঢুকলেই অন্তত ১০০ রকমের তরকারির পসরা সাজিয়ে দেওয়া হবে খেতে আসা ব্যক্তির সামনে। সেখান থেকে নিজের পছন্দ মতো অর্ডার করতে পারবেন তারা। ৫০ প্রকারের ভর্তা থেকে শুরু করে লোভনীয় এসব খাবার তাই সাড়া ফেলেছে চট্টগ্রামে।
হোটেলটির নাম ‘মেম্বার হোটেল’। চট্টগ্রামের ভোজন রসিকদের মনে জায়গা নিয়ে করেছে হোটেলটি। ঘরোয়া পরিবেশের এই হোটেলে সকাল থেকেই গভীর রাত পর্যন্ত ভিড় জমান ভোজন রসিকরা। সাদা ভাতের সঙ্গে নানা প্রকার দেশীয় খাবারের টানে আসা ভোক্তাদের ভিড় সামলাতে বেগ পেতে হয় মালিকপক্ষকে।
ব্যতিক্রমী এই হোটেলে অনেকে আসেন পরিবার পরিজন নিয়ে, কেউ প্রিয়জনকে নিয়ে, বন্ধুবান্ধব নিয়েও এসেছেন অনেকে। বৃহস্পতিবার (৩০ মে) রাত ১১টায় গিয়ে দেখা গেছে, হোটেলটির ভেতরে বেশ ভিড়। সিট পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছেন অনেকেই। অপেক্ষায় থাকা কয়েকজন বললেন, তারা শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে এসেছেন মেম্বার হোটেলের খাবারের স্বাদ নিতে।
হোটেলটিতে ডিম ভর্তা, শিম ভর্তা, ছুরি শুটকি ভর্তা, চিংড়ি শুটকি ভর্তা, কালোজিরা ভর্তা, কলা ভর্তা, মাছ ভর্তা, সরিষা ভর্তা, পুদিনা ভর্তা, মাছের ডিম ভর্তা, শাক ভর্তাসহ ৫০টির বেশি ভর্তা রয়েছে। যেগুলোর দাম ৩০ টাকা থেকে ৬০টাকা। এছাড়া দেশি মুরগী, ফার্মের মুরগী, গরুর কালা ভুনা, কবুতর, হাঁস ও কোয়েল পাখির মাংস থাকে সবসময়। মাছের মধ্যে রুই মাছ, পাবদা মাছ, আইলা মাছ ও কোরালসহ দেশীয় অনেক মাছের তরকারি পাওয়া যায় হোটেলটিতে।
আরও পড়ুন
খাবার শেষে মিষ্টি জাতীয় খাবারের জন্য খ্যাতি রয়েছে এই হোটেলের। বিশেষ করে দুধের ছানার স্পঞ্জ মিষ্টির কদর বেশি ক্রেতাদের।
সুলভমূল্যে এসব খাবার পাওয়া যায় বলে হোটেলটির সুনাম ছড়িয়ে পড়েছে চট্টগ্রাম ছাড়িয়ে সারা দেশে। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে অনেকেই এই হোটেলের খাবারের স্বাদ নিতে আসেন। নগরীর খুলশীর ওয়ারলেস এলাকার এই হোটেল ১৯৬৫ সাল থেকে চালু হয়। সুনামের পাশাপাশি অনেকে আবার খাবারের মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেন। হোটেলটিতে বাসি খাবার পরিবেশন করা হয় বলে তাদের অভিযোগ। যদিও মালিকপক্ষ সেটি মানতে নারাজ।
বৃহস্পতিবার রাতে পরিবার নিয়ে খেতে আসা নগরীর পতেঙ্গা এলাকার বাসিন্দা হাবিবুর রহমান বলেন, অফিস শেষ করে এখানে এসেছি। শুক্রবার অফিস নেই। এটি পরিবার নিয়ে কোথায় খেতে যাওয়ার ভালো সময়। এই হোটেলে আসার কারণ হচ্ছে, এখানে অনেক রকমের তরকারি একসঙ্গে পাওয়া যায়। দামও তুলনামূলক কম। সেজন্য এখানে আসা।
বন্ধুদের সঙ্গে খেতে আসার রানা হোসেন নামের আরেকজন বলেন, মেম্বার হোটেলে আমাদের প্রায়সময় আসা হয়। বন্ধুরা মিলে এখানে আসি।
চকবাজার এলাকার বাসিন্দা আমজাদ সাগর বলেন, তাদের কিছু খাবার বাসি থাকে। আমি খেয়ে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছি। সম্ভবত বেশি আইটেম তাই বাসি খাবার থেকে যায়।
মেম্বার হোটেলের ম্যানেজার মো. সালাম ঢাকা পোস্ট বলেন, আমাদের এখানে ৫০টির বেশি ভর্তা আইটেম রয়েছে। ভোর পাঁচটা থেকে রাত দুইটা পর্যন্ত খোলা থাকে। আমরা দিনে দুই বেলা রান্না করি।
বাসি খাবারের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ম্যানেজার সালাম বলেন, আমরা অল্প অল্প করে রান্না করি, দিনে দুইবার রান্না হয়। তাই বাসি খবর থাকে না।
আরএমএন/পিএইচ