৭৫ পরবর্তী স্বৈরশাসক বাঙালি সংস্কৃতিকে কলুষিত করে : সাঈদ খোকন
![৭৫ পরবর্তী স্বৈরশাসক বাঙালি সংস্কৃতিকে কলুষিত করে : সাঈদ খোকন](https://cdn.dhakapost.com/media/imgAll/BG/2024May/sayed-khokon-20240529015208.jpg)
৭৫ পরবর্তী স্বৈরশাসক বাঙালি সংস্কৃতিকে কলুষিত করেছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা-৬ আসনের সংসদ সদস্য ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন।
মঙ্গলবার (২৮ মে) শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরের বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব অডিটরিয়ামে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন।
বুলবুল ললিত কলা একাডেমির (বাফা) ৭০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষ্যে এই আলোচনা সভার আয়োজন করে বাফা।
মোহাম্মদ সাঈদ খোকন বলেন, স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে যখন দেশ গড়ার কাজ শুরু হলো ঠিক সেই সময়ে জাতির জনককে হত্যা করা হলো। পরে যে স্বৈরশাসন আসলো তাদের প্রথম টার্গেট ছিল মুক্তিযুদ্ধের এবং স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তিকে দমিয়ে দেওয়া। সংস্কৃতির অনুভূতিটাকে দমিয়ে দিতে কাজ করা। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের পরে যে সব সরকার আসলো তারা অশ্লীল যাত্রাপালা এ শহরে ছড়িয়ে দিতে লাগলো, সাংস্কৃতিক অধঃপতনের সেই থেকে শুরু। অন্যদিকে আমরা দেখতে পেলাম মৌলবাদের উত্থান। মৌলবাদকে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে বাঙালি সংস্কৃতির মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেওয়া হলো। একদিকে অশ্লীল কর্মকাণ্ড দিয়ে সুস্থ সাংস্কৃতিক চর্চাকে বাধাগ্রস্ত করা হলো, আরেকদিকে মৌলবাদের উত্থান ঘটিয়ে সুস্থ সাংস্কৃতিক চর্চার মুখোমুখি দাঁড় করে দেওয়া হলো। সেই থেকেই অধঃপতন। এত বছর পরেও ঘুরে দাঁড়াতে পারিনি। এখনো খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলছি।
ঢাকা-৬ আসনের এই সংসদ সদস্য বলেন, বিশ্বায়নের এই যুগে সারা বিশ্বের শিক্ষা-সংস্কৃতি চ্যালেঞ্জের মুখে। আমাদের সংস্কৃতিও চ্যালেঞ্জের মুখে। বিভিন্ন দেশের সংস্কৃতি খুব সহজে আমাদের জীবনযাত্রাকে প্রভাবিত করছে। আমাদের সাংস্কৃতিক চেতনাকে দুর্বল করছে, এখান থেকে আমাদের উত্তরণ ঘটাতে হবে আমাদের নিজস্ব শক্তি দিয়ে। আমি আশা করব এ বিষয়ে গবেষণা হোক, পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হোক। রাষ্ট্রীয়ভাবে আমরা একটা পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাই।
তিনি বলেন, বুলবুল ললিত কলা একাডেমি দীর্ঘ ৭০ বছর ধরে সাংস্কৃতিক চর্চার কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে পুরান ঢাকায় কাজ করে চলেছে এবং তাদের অনেক অবদান আছে। আমরা ছোট্ট পরিসরে এর পূর্ণ জাগরণের সূচনা করতে পারি। বর্তমান বুলবুল ললিত কলা একাডেমির অবকাঠামো জরাজীর্ণ হয়ে আছে, সেখানে একটা সাংস্কৃতিক কেন্দ্র হতে পারে। পুরান ঢাকা থেকে সাংস্কৃতিক বিপ্লবের সূচনা হতে পারে।
ডিজিটাল বাংলাদেশের কথা উল্লেখ করে সাঈদ খোকন বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ আজ বাস্তবতা। এই বাস্তবতার পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী আমাদের জন্য স্মার্ট বাংলাদেশের একটা ধারণা সামনে রেখেছেন এবং একটা সময় বেঁধে দিয়েছেন। আমরা ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে পরিণত হবো এবং বাংলাদেশ হবে একটি স্মার্ট বাংলাদেশ। এটাকে সামনে রেখেই কিন্তু আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। এই উন্নয়নশীল বাংলাদেশ থেকে আমরা উন্নত বাংলাদেশে পরিণত হতে চাই ২০৪১ সালের মধ্যে। এর অর্থনৈতিক পরিকল্পনাসহ সবকিছুই হয়েছে।
বাফার সভাপতি হাসানুর রহমান বাচ্চুর সভাপতিত্বে সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব শারমিন জাহান, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুস, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের ইমেরিটাস অধ্যাপক শিল্পী হাসেম খান প্রমুখ।
এএসএস/এমএ