জানমাল বাঁচাতে নিরাপদ আশ্রয়ে যাচ্ছেন উপকূলবাসী
ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে চট্টগ্রাম মহানগরসহ উপকূলীয় এলাকায় সকাল থেকে ঝোড়ো বাতাস শুরু হয়। এখনো পরিস্থিতি থমথমে। এ অবস্থায় জানমাল বাঁচাতে উপকূল ছাড়তে শুরু করেছেন বাসিন্দারা। বাড়িঘর ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নিচ্ছেন তারা।
রোববার (২৬ মে) সকাল থেকে পতেঙ্গার বেড়িবাঁধ সংলগ্ন জেলে পাড়ার জেলেরা তাদের নৌকা ও মাছ ধরার জাল নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়েছেন। নারী-শিশুরা কাপড়চোপড় ও হাড়ি-পাতিলসহ আসবাবপত্র নিয়ে অবস্থান নিয়েছেন বেড়িবাঁধে।
শনিবার (২৫ মে) রাত থেকে এখন পর্যন্ত নয় হাজার ৩৫৫ জন মানুষ আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন। এদের মধ্যে সন্দ্বীপের মানুষ বেশি আশ্রয় নিয়েছেন বলে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
পতেঙ্গার জেলে পাড়ার গৃহবধূ কান্তা রাণী জলদাস বলেন, সকাল থেকে আকাশ কখনও রোদ, আবার কখনও মেঘে ঢাকা থাকছে। বাতাসও হচ্ছে প্রচুর। সবাই বলছে, এবার ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষয়ক্ষতি বেশি হতে পারে। গত রাত (শনিবার) থেকে মাইকিং করা হচ্ছে। আমরা কেউ বেড়িবাঁধের ওপর, আবার কেউ আত্মীয়-স্বজনদের ঘরে আশ্রয় নিচ্ছি। তবে, পুরুষরা সবাই এখানে থাকছে।
পতেঙ্গার বেড়িবাঁধ এলাকায় স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে ভাটায় অন্তত ১০ ফুট পানি বেড়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
এদিকে, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় রেমালের কেন্দ্রে ‘চোখ’ অবয়ব দেখা গেছে। ফলে এটি ব্যাপক শক্তি নিয়ে উপকূলে আঘাত হানার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের পক্ষ থেকেও বলা হয়েছে, প্রবল শক্তি নিয়েই ঘূর্ণিঝড় রেমাল আঘাত হানবে উপকূলে। এর কেন্দ্রে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ের মতো ‘চোখে’র অবয়ব তৈরি হয়েছে।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ আব্দুর রহমান খান ঢাকা পোস্টকে বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের সেন্ট্রাল পয়েন্টকে কেন্দ্র করে যখন মেঘগুলো আবর্তিত হতে থাকে তখন মাঝখানে একটি চোখের মতো অবয়ব তৈরি হয়। এটিকেই ঘূর্ণিঝড়ের ‘চোখ’ বলা হয়। ঘূর্ণিঝড় রেমালের ক্ষেত্রেও এমন অবয়ব তৈরি হয়েছে। সাধারণত যেসব ঘূর্ণিঝড়ে এমন ‘চোখে’র দেখা পাওয়া যায় সেগুলো শক্তিশালী হয়। ঘূর্ণিঝড় রেমালও প্রচণ্ড শক্তি নিয়ে উপকূলের দিকে এগিয়ে আসছে।
তিনি বলেন, এরই মধ্যে ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রভাগ সমুদ্র উপকূলে আঘাত হেনেছে। সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী তিন থেকে চার ঘণ্টার মধ্যে মূল কেন্দ্র আঘাত হানবে। তবে এরপর ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব কমে যাবে তেমনটি নয়। কেন্দ্র অতিক্রম করা শেষ হওয়ার পর এর শেষ অংশও উপকূলসহ তীরবর্তী অঞ্চলে প্রভাব ফেলবে।
আরএমএন/কেএ