নগ্ন ছবি তুলে এমপি আনারকে ব্ল্যাকমেইল করতে চেয়েছিলেন তারা
ঝিনাইদহ-৪ আসনের এমপি আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যার একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে আসছে। তাকে (আনার) ক্লোরোফর্ম বা চেতনানাশক দিয়ে নারীর সঙ্গে নগ্ন ছবি তুলে ব্লাকমেইল করার একটা উদ্দেশ্য ছিল হত্যাকারীদের। এছাড়া কীভাবে হত্যা করা হয়েছে, কীভাবে তার মরদেহ গুম করার চেষ্টা চালানো হয়েছে— সেসব তথ্যও বেরিয়ে আসছে।
হত্যার ঘটনায় রিমান্ডে আসা আসামিরা চাঞ্চল্যকর এসব তথ্য দিয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশের গোয়েন্দার বিভাগের প্রধান হারুন অর রশিদ।
আটককৃতদের দেওয়া তথ্য মতে, হত্যাকাণ্ডে জড়িতরা ফ্ল্যাটে নেওয়ার পর ক্লোরোফর্ম দিয়ে এমপি আনারকে অচেতন করে। অচেতন অবস্থায় এ ঘটনায় গ্রেপ্তার তরুণী শিলাস্তি রহমানের সঙ্গে এমপির নগ্ন ছবি তোলার পরিকল্পনাও করা হয়েছিল। তবে ক্লোরোফর্মের মাত্রা বেশি হওয়ায় এতে সফল হয়নি তারা।
ডিবি প্রধান বলেন, যে পরিকল্পনা ছিল সে অনুযায়ী প্রথমে তাকে হত্যা না করে হানি ট্রাপে ফেলার কথা ছিল। এর মাধ্যমে তাকে ব্ল্যাকমেইল করে টাকা আদায় করার করার উদ্দেশ্য ছিল। কিন্তু সেই কৌশল কাজে লাগেনি।
আরও পড়ুন
হারুন অর রশিদ বলেন, হানি ট্রাপের একমাত্র উদ্দেশ্য ছিল টাকা আদায়। তবে, হত্যা করা ছিল মূল উদ্দেশ্য। হত্যা তারা করতোই। তার কাছ থেকে টাকা আদায় করেই খুনিদের পারিশ্রমিক দেওয়ার চিন্তা ছিল মাস্টারমাইন্ড শাহিনের।
গোয়েন্দা পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, দেশে ভারতীয় পুলিশের একটি টিম দুই থেকে তিন দিন ধরে তদন্ত করছে। হত্যাকাণ্ডের সুস্পষ্ট প্রমাণ আছে। আমরা বেশ কিছু তথ্য নিয়ে কাজ করছি। তবে তদন্তের স্বার্থে এখন জানানো যাবে না।
গত ১৩ মে কলকাতার নিউ টাউনের একটি অভিজাত অ্যাপার্টমেন্টের ফ্ল্যাটে নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হন এমপি আনার। হত্যা ও তার মরদেহ টুকরো টুকরো করার পর সেটির পাশে বসেই খাবার ও মদ খায় হত্যাকারীরা।
হত্যার পর আনারের মরদেহ ফ্ল্যাটের বাথরুমে নেওয়া হয়। সেখানেই বসে টুকরো টুকরো করা হয় তাকে। বাথরুমে যেন হত্যার কোনো আলামত না থাকে সেজন্য কয়েকবার পানি এবং ডিটারজেন্ট ব্যবহার করে এটি পরিষ্কার করা হয়।
এছাড়া রক্তের যেসব ছোপ ছোপ দাগ রুমে লেগেছিল সেগুলো মুছে ফেলতে পুরো ফ্ল্যাটটি পরিষ্কার করা হয়। আনারের মরদেহের বড় বড় হাড্ডি এবং মাথার খুলি টুকরো করার জন্য চাপাতির মতো কোনো কিছু ব্যবহার করা হয়। আর মরদেহটি টুকরো করার কাজ করে জিহাদ হাওলাদার নামের এক ব্যক্তি। এই জিহাদ পেশায় একজন কসাই।
এমএ