সুইপারের চাকরি দেওয়ার কথা বলে ২১ লাখ টাকা আত্মসাৎ
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) পরিচ্ছন্নতা কর্মী (সুইপার) নিয়োগের ভুয়া নিয়োগপত্র দেখিয়ে ২১ লাখ টাকা পাঁচ ভুক্তভোগীর কাছ থেকে আত্মসাৎ করেছেন মো. ইয়াসিন বাপ্পী (৪৩) নামে একজন।
তার প্রতারণার শিকার পাবেল দাস (২১) নামে এক ভুক্তভোগী মঙ্গলবার (২৭ এপ্রিল) রাজধানীর বংশাল থানায় একটি মামলা করেন। ওই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার (২৮ এপ্রিল) সকালে রাজধানীর বংশাল এলাকা থেকে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ঢাকা মেট্রো দক্ষিণের একটি টিম অভিযুক্ত ইয়াসিন বাপ্পীকে গ্রেফতার করে।
বৃহস্পতিবার (২৯ এপ্রিল) সিআইডির সিনিয়র এএসপি (মিডিয়া) জিসানুল হক জিসান ঢাকা পোস্টকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, গ্রেফতার আসামি একটি প্রতারক চক্রের সক্রিয় সদস্য। বিভিন্ন ব্যক্তিকে ভুয়া নিয়োগপত্র দিয়ে টাকা আত্মসাৎ করাই আসামির পেশা। মামলার বাদী তার পূর্ব পরিচিত মানিক লাল নামে এক ব্যক্তির মাধ্যমে আসামির সঙ্গে পরিচিত হন। পরিচয়ের একপর্যায়ে আসামি বাদীকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে সুইপার/পরিচ্ছন্নতা কর্মী পদে চাকরি দিতে পারবে বলে জানায়।
সে (আসামি) মামলার বাদীকে জানায় তার সঙ্গে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সচিব থেকে শুরু করে প্রশাসনের সব কর্মকর্তার সুসম্পর্ক রয়েছে। চাকরি পেতে হলে তাকে (আসামি) ৪ লাখ ২৫ হাজার টাকা দিতে হবে। আসামির কথা বিশ্বাস করে তাকে ৪ লাখ ২৫ হাজার টাকা দেয় পাবেল দাস। এভাবে পাবেল দাসসহ আরও চার ভুক্তভোগীর কাছ থেকে চাকরি দেওয়ার কথা বলে মোট ২১ লাখ টাকা আত্মসাৎ করে আসামি।
ভুক্তভোগী পাবেল দাস মামলার এজাহারে অভিযোগ করে জানান, ২০১৯ সালের ২৬ নভেম্বর ইয়াসিন বাপ্পীর বাসায় গিয়ে তিনি ৪ লাখ ২৫ হাজার টাকা সুইপারের চাকরির জন্য দেন। পরে ইয়াসিন বাপ্পী তাকে একটি নিয়োগপত্র দেন, যেটি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সচিবের সিলসহ স্বাক্ষরিত। পরে নিয়োগপত্র অনুযায়ী ২০২০ সালের ২৬ জুন তিনি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের অফিসে সুইপার পদে কাজে যোগ দিতে গিয়ে দেখেন ইয়াসিন বাপ্পী আসেননি। তার মতো আরও চার ভুক্তভোগী ইয়াসিন বাপ্পীর অপেক্ষায় বসে রয়েছেন।
পরে ইয়াসিন বাপ্পী না আসায় পাবেল দাসসহ বাকি চার ভুক্তভোগী সিটি করপোরেশনের অফিসে গিয়ে নিয়োগপত্র দেখালে তারা বুঝতে পারেন নিয়োগপত্রটি ভুয়া। জাল সিল ও জাল স্বাক্ষর দিয়ে ইয়াসিন বাপ্পী তাদের ভুয়া নিয়োগপত্র দিয়েছেন। পরে পাবেল দাস ইয়াসিন বাপ্পীর কাছে তার টাকা ফেরত চান। তখন সে (আসামি) তাকে ৪ লাখ ২৫ হাজার টাকার ডাচ-বাংলা ব্যাংকের একটি চেক দেয়। পরে ডাচ-বাংলা ব্যাংকের চেক নিয়ে বংশাল শাখায় যোগাযোগ করেন ভুক্তভোগী। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ওই অ্যাকাউন্টে পর্যাপ্ত টাকা নেই বলে জানায়। পরে আবারও ইয়াসিন বাপ্পীর কাছে ভুক্তভোগী টাকা দাবি করেন। তখন টাকা না দিয়ে পাবেল দাসকে মেরে ফেলার হুমকি দেন আসামি।
এমএসি/এসএসএইচ