সদরঘাটে পাঁচ যাত্রী নিহতের ঘটনা তদন্তে বিআইডব্লিউটিএ’র কমিটি
রাজধানীর সদরঘাটে পন্টুনে বেঁধে রাখা লঞ্চে আরেক লঞ্চের ধাক্কায় রশি ছিঁড়ে এর আঘাতে নারী-শিশুসহ পাঁচজন যাত্রী নিহত হওয়ার ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি করেছে অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)।
বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য অফিসার জাহাঙ্গীর আলম খান বিষয়টি জানিয়েছেন।
জাহাঙ্গীর আলম খান বলেন, বিআইডব্লিউটিএ-এর পরিচালক (ক্রয় ও সংরক্ষণ) মো. রফিকুল ইসলামকে এই কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে। পাশাপাশি নৌ-সংরক্ষণ ও পরিচালন বিভাগের যুগ্ম পরিচালক মো. আজগর আলী এবং বন্দর শাখার যুগ্ম পরিচালক মো. কবীর হোসেনকে সদস্য করে এই কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিকে আগামী পাঁচ কর্ম দিবসের মধ্যে বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যানের কাছে প্রতিবেদন পেশ করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন
পন্টুনে বাঁধা লঞ্চের সংযোগ রশি ছিঁড়ে নারী-শিশুসহ নিহত ৫
বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) বিকেলের দিকে সদরঘাটের ১১নং পন্টুনের সঙ্গে বেঁধে রাখা একটি লঞ্চে যাত্রীরা ওঠানামা করছিলেন। হঠাৎ ওই লঞ্চ এবং পাশের আরেকটি লঞ্চের মাঝ দিয়ে অন্য একটি লঞ্চ ঢুকে পড়ে। অনুপ্রবেশ করা লঞ্চের ধাক্কা খেয়ে পন্টুনে বেঁধে রাখা লঞ্চের রশি ছিঁড়ে যায়। এতে ৫ যাত্রী রশির আঘাতে নিহত হন। তাদের মধ্যে একজন নারী, তিনজন পুরুষ ও একটি শিশু রয়েছে।
নিহতরা হলেন, মাইশা (৩), মুক্তা (২৩) ও মো. বেল্লাল (২৬), রিপন হাওলাদার (৩৮) ও রবিউল (১৯)।
নিহতদের মধ্যে তিনজন একই পরিবারের
পন্টুনে বেঁধে রাখা লঞ্চে আরেক লঞ্চের ধাক্কায় রশি ছিঁড়ে নিচে পড়ে নিহত ৫ যাত্রীর মধ্যে তিনজন একই পরিবারের। তারা হলেন, মাইশা (৩), মুক্তা (২৩) ও মো. বেল্লাল (২৬)। মুক্তা ও বেল্লাল স্বামী-স্ত্রী। আর মাইশা তাদের তিন বছর বয়সী মেয়ে। তাদের বাড়ি পিরোজপুরে।
নিহত বাকি দুজন হলেন, রিপন হাওলাদার (৩৮) ও রবিউল (১৯)। রিপন হাওলাদারের বাড়ি পটুয়াখালী। তিনি রাজধানীর ভাটারা থানা এলাকায় থাকতেন। এছাড়া রবিউলের বাড়ি ঠাকুরগাঁও।
ঘটনার বিবরণ দিলো ফায়ার সার্ভিস
ফায়ার সার্ভিস সদরদপ্তরের মিডিয়া সেলের কর্মকর্তা আনোয়ারুল ইসলাম দোলন বলেন, এমভি তাশরিফ-৪ ও এমভি পূবালী-১ নামে দুটি লঞ্চ রশি দিয়ে পন্টুনে বাঁধা ছিল। এ দুটি লঞ্চের মাঝখান দিয়ে ফারহান নামের আরেকটি লঞ্চ ঢুকানোর সময় এমভি তাশরিফ-৪ লঞ্চের রশি ছিঁড়ে যায়। এতে পাঁচজন যাত্রী লঞ্চে ওঠার সময় রশির আঘাতে গুরুতর আহত হন। সদরঘাট ফায়ার স্টেশনের অ্যাম্বুলেন্সযোগে তাদের মিটফোর্ড হাসপাতালে পৌঁছে দেওয়া হয়। পরবর্তীতে তারা সবাই মারা যান।
দুই লঞ্চের চালক ও ম্যানেজারসহ আটক ৫
দুই লঞ্চের চালক ও ম্যানেজারসহ ৫ জনকে আটক করেছে নৌ-পুলিশ। আটকরা হলেন- এমভি ফারহান লঞ্চের দুই চালক ও ম্যানেজার এবং এমভি তাসরিফের দুই চালক। নৌ-পুলিশের ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার গৌতম কুমার বিশ্বাস আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ঢাকা নদী বন্দর (সদরঘাট) এর যুগ্ম কমিশনার (ট্রাফিক) জয়নাল আবেদীন ঢাকা পোস্টকে বলেন, সদরঘাটের ঘটনায় পাঁচজন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মরদেহ মিটফোর্ড হাসপাতালে রাখা আছে।
এএসএস/এমএসএ