ন্যায্য ভাড়ায় ‘লসের মুখে’ এনা পরিবহন!
দরজায় কড়া নাড়ছে পবিত্র ঈদুল ফিতর। মুসলমানদের অন্যতম প্রধান এ ধর্মীয় আয়োজনকে ঘিরে প্রতিবছরই অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ ওঠে পরিবহন কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। এবারও ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে অন্যান্য বাসে বর্ধিত ভাড়ার অভিযোগ থাকলেও এনা পরিবহন ন্যায্য ভাড়াতেই যাত্রী আনা-নেওয়া করছে বলে দাবি সংশ্লিষ্টদের।
এনার যাত্রীদের গুণতে হচ্ছে না আলাদা কোনো অর্থ। এমনকি এ ন্যায্য ভাড়ায় চলাচলের কারণে লোকসানের মুখেও পড়তে হচ্ছে বলে জানিয়েছে এনা পরিবহন কর্তৃপক্ষ।
সোমবার (৮ এপ্রিল) সকালে রাজধানীর মহাখালী বাস টার্মিনাল ঘুরে এসব তথ্য জানা গেছে।
জানা গেছে, ঢাকা থেকে ময়মনসিংহ পর্যন্ত এনা পরিবহনের নিয়মিত ভাড়া ৩৪০ টাকা। অন্যান্য পরিবহনগুলোর মধ্যে সৌখিন পরিবহন, ইমাম পরিবহন, আলম এশিয়াসহ শেরপুর, হালুয়াঘাট, নেত্রকোনাসহ ময়মনসিংহের পার্শ্ববর্তী এলাকার বেশকিছু বাস রয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এনা পরিবহন ছাড়া ময়মনসিংহগামী প্রায় প্রতিটি বাসই ইচ্ছামতো ভাড়া আদায় করে যাত্রীদের পকেট কাটছে। যেকারণে অধিকাংশ যাত্রীই ভিড় জমাচ্ছেন এনার টিকিট কাউন্টারে।
দের ঘণ্টা ধরে মহাখালী বাস টার্মিনালে কাঙ্ক্ষিত বাসের অপেক্ষা করছেন শেরপুরগামী যাত্রী মাওলানা মাহবুবুর রহমান। ঢাকা পোস্টকে তিনি বলেন, প্রতি ঈদে আমাদেরকে যে পরিমাণ কষ্ট করে যেতে হয়, তার তুলনায় এবারের কষ্ট খুব বেশি না। দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে এনা পরিবহনের বাসের টিকিট কেটেছি। এরপরও আবার ৪টা বাস যাওয়ার পর ৫ নম্বর বাসে আমাকে উঠতে হয়েছে। তারপরও সুন্দরভাবে বাড়ি গিয়ে পৌঁছাতে পারলেই খুশি।
ভাড়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, গতবার ঈদে এয়ারপোর্ট থেকে সৌখিন পরিবহনে গিয়েছিলাম, তারা সেখান থেকেই ভাড়া নিয়েছিল ৫০০ টাকা। তাই এবার কাউন্টারে চলে এসেছি। শুধু আমি নই, আমার পরিচিত আরও অনেকেই অন্যান্য বাস বর্জন করে এনায় যাচ্ছি।
আরও পড়ুন
ময়মনসিংহগামী আরেক যাত্রী রাকিবুল ইসলাম বলেন, অন্য কোনো বাসে ময়মনসিংহ গেলেই ৪০০/৫০০ টাকা করে ভাড়া নিতো। আমি প্রথমে ভেবেছিলাম এনা অন্যদের তুলনায় এখন বেশি ভাড়া নেবে, তাই অন্য বাসে যেতে চেয়েছিলাম। কিন্তু পরে দেখি এনার চেয়ে তাদের ভাড়া বেশি। এখন একটু সময় বেশি লাগলেও এনার বাসেই যাব।
এনা পরিবহনের (ময়মনসিংহ রোড) সহকারী ম্যানেজার এসএম খালেদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, সারাবছর আমাদের যে ভাড়া থাকে, ঈদের সময়ও আমরা সেই ভাড়াতেই যাত্রী আনা-নেওয়া করি। শুধু ময়মনসিংহ রোড নয়, অন্যান্য প্রতিটি রুটেই আমাদের ভাড়া স্বাভাবিক সময়েরটাই। এটা আমাদের মালিক পক্ষের নির্দেশ।
তিনি বলেন, ঈদের সময়টা আসলে আমাদের জন্য লস। এপাশ থেকে ঠিকই দেখছেন ৪০ জন যাত্রী যাচ্ছে, কিন্তু ওপাশ থেকে কিন্তু বাসটিকে যাত্রী ছাড়াই চলে আসতে হচ্ছে। এর মধ্যে আমাদের তেল খরচ আছে, আমাদের স্টাফদের বেতন দিতে হয়, ঈদ উপলক্ষ্যে তাদের বোনাসও দিতে হবে। অন্যান্য মেনটেইনেন্স খচর তো বাকিই আছে। সবমিলিয়ে ন্যায্য ভাড়া নিতে গিয়ে আমাদের আয়ের তুলনায় ব্যায়টাই বেশি হয়ে যাচ্ছে। তারপরও এনা পরিবহন মানুষের ঈদ আনন্দের কথা চিন্তা করে যাত্রী পরিবহনের কাজটি যথাযথভাবেই করে যাচ্ছে।
ঈদের প্রস্তুতি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে এসএম খালেদ বলেন, ঈদকে ঘিরে আমাদের পর্যাপ্ত গাড়ি সড়কে আছে। আমাদের নির্দিষ্ট সংখ্যক গাড়ি সড়কে প্রতিনিয়তই চলছে, ঈদকে কেন্দ্র করে সেগুলোর রোটেশন-মুভমেন্ট বেড়েছে।
টিআই/এমএ